ঢাকা, বৃহস্পতিবার 1 June 2023, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৪ হিজরী
Online Edition

কৃষিঋণ বিতরণে আট মাসেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে ১২ ব্যাংক

সংগ্রাম অনলাইন ডেস্ক: চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ অর্জন করেছে ১২টি ব্যাংক; ১৪টি ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার ৫০ শতাংশও বিতরণ করতে পারেনি।

লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জন করা ব্যাংকগুলো হলো ব্যাংক আল-ফালাহ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, হাবিব ব্যাংক, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, সীমান্ত ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, সিটিব্যাংক এনএ, এইচএসবিসি এবং উরি ব্যাংক নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার শতভাগের বেশি ঋণ বিতরণ করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ব্যাংক খাতে ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। চলতি অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ব্যাংকগুলো ২১ হাজার ৬৬ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার ৬৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সময়ে রাষ্ট্রমালিকানার ব্যাংকগুলো ৮ হাজার ৬২৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা বা লক্ষ্যমাত্রার ৭৩ দশমিক ৪২ শতাংশ বিতরণ করেছে। আর বিদেশি ও বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো ১২ হাজার ৪৩৪ কোটি বা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৬৪ দশমিক ৯২ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। দেশে প্রতি বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি কৃষিঋণ বিতরণ করে কিছু ব্যাংক। আবার কিছু ব্যাংক আছে, যারা প্রতি বছরই ব্যর্থ হয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ ব্যাংকও সেই লক্ষ্যে কাজ করছে। ব্যাংকগুলোকে কৃষিঋণ বিতরণ বাড়াতে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এবং তা প্রতিনিয়ত তদারকি করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোয় যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা আছে, সেসব অঞ্চলে কৃষিঋণ বিতরণ বাড়াতে প্রচার চালানো হয়েছে।

সম্প্রতি কৃষি খাতে ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হলে তা অন্য ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণের জন্য এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট কমন ফান্ড (বিবিএডিসিএফ) গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই নীতিমালা অনুযায়ী, কৃষি ও পল্লি ঋণ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বিতরণ করতে না পারলে অবশিষ্ট অর্থ এই ফান্ডে জমা রাখতে হবে। কৃষি খাতে অধিক ঋণ দিতে সক্ষম ব্যাংকগুলোকে এ তহবিল থেকে অর্থ দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, আট মাসে শস্য খাতে বিতরণ হয়েছে ১০ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। সেচ সরঞ্জাম কিনতে দেয়া হয়েছে ১৭৯ কোটি, কৃষি সরঞ্জাম কিনতে ১৪৯ কোটি, গবাদিপশু এবং হাঁস-মুরগির খামারে ৪ হাজার ৪৩৯ কোটি, মৎস্য খাতে ২ হাজার ৫৭৭ কোটি, শস্য গুদামজাত এবং বিপণনে ১০৪ কোটি, দারিদ্র্য দূরীকরণ খাতে ১ হাজার ২৪৭ কোটি এবং অন্যান্য খাতে ২ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা ধরা হলেও ব্যাংকগুলো তার চেয়েও বেশি বিতরণ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১০২ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, আলোচ্য সময়ে কৃষিঋণ আদায়ও বেড়েছে। অর্থবছরের প্রথম আট মাসে কৃষকদের কাছ থেকে ঋণ আদায় হয়েছে ২০ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা। যদিও ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে এই খাত থেকে ঋণ আদায় হয়েছে ১৭ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ