বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস আজ

সংগ্রাম অনলাইন ডেস্ক: আজ বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। এ বছরের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘হ্যাঁ আমরা যক্ষ্মা নির্মূল করতে পারি।’
যক্ষ্মা পৃথিবীর প্রাচীন রোগগুলোর একটি। বাংলাদেশে দীর্ঘদিন থেকে যক্ষ্মা সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে চিকিৎসায় কাজ চলছে। কিন্তু যক্ষ্মা থেকে রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না। বরং যক্ষ্মা থেকেও মারাত্মক মাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্স (এমডিআর) যক্ষ্মা দিন দিন বাড়ছে। দেশে এখন ১০ হাজারের বেশি এমডিআর যক্ষ্মা রোগী রয়েছে।
সাধারণ যক্ষ্মা রোগীদের সঠিক চিকিৎসা না হওয়া, অর্ধেক ওষুধ খেয়ে সুস্থ বোধ করলেই অনেকেই সাধারণ যক্ষ্মার ওষুধের পুরো কোর্স সম্পন্ন করেন না। ফলে যক্ষ্মার জীবাণুরা আরো শক্তিশালী হয়ে এমডিআর টিবিতে পরিণত হয়। একজন এমডিআর যক্ষ্মারোগী অন্যদের মধ্যে ভয়ঙ্কর এমডিআর যক্ষ্মাই ছড়িয়ে থাকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রচলিত ওষুধে না গিয়ে টিকা ব্যবহারের দিকে আমাদের যাওয়া উচিত। পৃথিবীর কয়েকটি দেশে যক্ষ্মার বিরুদ্ধে টিকা ব্যবহারে সফলতা এসেছে।
এ ব্যাপারে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির বিভাগীয় যক্ষ্মা বিশেষজ্ঞ ডা: আহমেদ পারভেজ জাবীন বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া ও জাম্বিয়ায় গ্ল্যাক্সো অ্যান্ড স্মিথক্লাইনের (জিএসকে) তৈরি টিবি ‘ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট এম৭২/এএসও আইই’ নামক যক্ষ্মার টিকার দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে।’ এই দেশগুলোতে জিএসকের ৯ হাজার ভায়াল টিকার সফল পরীক্ষা হয়েছে বলে ডা: জাবীন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘যক্ষ্মার টিকাকে সব দেশেই উৎপাদনের অনুমতি দিয়ে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে অবদান রাখার সুযোগ দেয়া হোক।’
যে হারে সাধারণ যক্ষ্মা থেকে এমডিআর যক্ষ্মা হচ্ছে এবং এমডিআর যক্ষ্মার জীবাণুও ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে আরো ভয়ঙ্কর এক্সটেনসিভলি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স টিবি (এক্সডিআর। জীবাণুতে পরিণত হচ্ছে এবং এই এক্সডিআর টিবি থেকে আরো ভয়ঙ্কর যক্ষ্মার জীবাণু আরআর টিবি হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যক্ষ্মা রোগে ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিক থেকে এখন বের হয়ে আসা উচিত এবং টিকার দিকে যেতে হবে।
১৯৯৫ থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে প্রায় ত্রিশ লাখ যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে শিশু রয়েছে প্রায় ২০ হাজার।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন পরিচালকের দফতর থেকে জানানো হয়েছে, ‘বাংলাদেশে ২০২১ সালে প্রতি ১২ মিনিটে একজন মানুষ যক্ষ্মায় মারা গেছে। ২০২১ সালে বাংলাদেশে প্রায় তিন লাখ ৭৫ হাজার মানুষ লোক যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয় এবং ৪২ হাজার মৃত্যুবরণ করে। অর্থাৎ প্রতি ১২ মিনিটে যক্ষ্মার কারণে একজনের মৃত্যু হয়েছে।’