ছুটির দিনে জমজমাট বইমেলা

ইবরাহীম খলিল : গতকাল শুক্রবার ছিল অমর একুশে বইমেলার প্রথম শিশুপ্রহর। এদিন সকাল থেকেই কচিকাঁচা শিশুদের আগমন শুরু হয়। তবে মেলার মূল আকর্ষণ ছিল শিশুতোষ ধারাবাহিক ‘১২৩ সিসিমপুর’ চরিত্রগুলো নিয়ে সাজানো শিশু প্রহর। তাই সকালেই বইমেলায় আসতে শুরু করে শিশুরা। বিকালেও বাবা-মা-অভিভাবকদের হাত ধরে মেলায় আসতে থাকে শিশুরা।
এদিন সকালে বাবার হাত ধরে একুশে বইমেলায় এসেছে সাড়ে সাত বছরের আকিফা। তার আবদারে হালুম আর টুকটুকির বই কিনে দিয়েছেন বাবা। মূলত শিশুদের বই পড়ায় আগ্রহী করে তুলতেই মেলার একটি অংশকে ঘোষণা করা হয় শিশুপ্রহর হিসেবে। শুক্রবার ও শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলে শিশুপ্রহর।
শুক্রবার সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মেলা প্রাঙ্গণের শিশু চত্বর নান্দনিক করে সাজানো হয়। শিশু চত্বরের স্টলগুলোতে শিশুদের বই রাখা হয়েছে। সেখানে চলন্তিকা বইঘর, শিশু প্রকাশ, শৈশব, চিলড্রেনস বুক, সিসিমপুর ইত্যাদি স্টল রয়েছে, যেগুলোতে ছিল শিশুদের বই। বইয়ের রাজ্যে এসে মহাখুশি তারা।
শিশু আকিফা বলেন, মেলায় এসে অনেক বই দেখে আমার ভীষণ ভালো লাগছে। আমর নানু বাড়িতেও এতো বই নেই। এখানে অনেক বই। সবগুলো আমি ঘুরে ঘুরে দেখেছি। আর রাজকুমারী আর ভূতের গল্পের বই কিনেছি। শিশুতোষ প্রকাশনা সংস্থা বাবুই-এর প্রকাশক কাদের বাবু বলেন, শিশু চত্বর এখনও সম্পূর্ণ করা হয়নি। কিছু কাজ বাকি আছে। তবে ছুটির দিনে শিশুরা আসছে, বই দেখছে। আশা করি এবার একটি সুন্দর মেলা হবে।
এদিকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে জমে উঠে বইমেলা। ছুটির দিন হওয়ায় স্টল-প্যাভিলিয়নগুলোতে বাড়তে শুরু করে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়। পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে প্রাণের বইমেলা প্রাঙ্গণে আসেন অনেকেই। ছুটির দিন মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়। চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। এদিন স্টলে স্টলে ঘুরে বইয়ের মলাট উল্টেপাল্টে দেখে বই কিনেন তারা।
ধানমন্ডি থেকে বই মেলায় আসা দর্শনার্থী ইব্রাহীম খান বলেন, আমি প্রতি বছরই বইমেলা ঘুরতে আসি। কিছু বই কিনে থাকি। মেলায় আসলে বই পড়ার প্রতিও আগ্রহ বাড়ে। বইপ্রেমীদের আনাগোনায় বেশ খুশি লেখক-প্রকাশকরা। তারা বলেন, মেলায় জনসমাগম বেশ ভালো দেখা যাচ্ছে। বইপ্রেমীরা আসছেন, বই দেখছেন। সংখ্যায় কম হলেও বই কিনছেন অনেকেই।
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পাঠকদের উপস্থিতি আরও বাড়বে বলে আশা করছেন তারা। ঝিনুক প্রকাশনীর বই বিক্রেতা সোহরাব হোসেন বলেন, গত দুই দিনের তুলনায় আজকে একটু বেশি বই বিক্রি হচ্ছে। মাত্র তো মেলা শুরু হলো, আশা করছি এবার ভালোই বিক্রি করতে পারব।
ফাঁদন ও দহন বইয়ের লেখক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, আমি অনেক আশা নিয়ে মেলায় এসেছি। মেলায় আমার নিজের লেখা দুটি বই রয়েছে। পাঠক ও ক্রেতারা মেলায় আসছেন, স্টলে স্টলে ঘুরে দেখছেন। আশা করছি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেলা আরও জমে উঠবে।