দর্শনা চিনিকলে আখ মাড়াইয়ের সর্বনিম্ন রেকর্ড ॥ ক্ষতি ৫০ কোটি টাকা
চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা: দেশের সর্ববৃহৎ সুপার মিল কমপ্লেক্স দর্শনার কেরু অ্যান্ড কো¤পানির ২০২২-২৩ মৌসুমের আখ মাড়াই মাত্র ৫৩ দিনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও গতকাল শুক্রবার আখের অভাবে ৪২ দিনেই বন্ধ হয়েছে চিনিকারখানার কার্যক্রম। ফলে অকালে মাড়াই মৌসুম শেষ হওয়ায় এবার কোম্পানীর চিনিকল বিভাগে প্রায় ৫০ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতকাল ভোরে আখেরি হুইসেল বাজিয়ে সমাপ্ত করা হয় মাড়াই কার্যক্রম। কেরু চিনিকলের ইতিহাসে এটাই সর্বনি¤œ আখ মাড়াইয়ের রেকর্ড বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য যে, চলতি ২০২২-২০২৩ সালে ৫৩ দিন ৬২ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৩ হাজার ৮৮৪ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। চিনি আহরণের হার ধরা হয়েছিল ৭ শতাংশ। চলতি রোপণ মৌসুমে ৪ হাজার ২৩০ একর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। এর মধ্যে মিলের নিজস্ব কৃষি খামারগুলোর ১ হাজার ৫০ একর জমিতে আখ চাষ হয়েছে।
তবে ২০২২-২০২৩ চলতি মাড়াই মৌসুমে ৫৩ দিনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও মাত্র ৪২ দিনেই কেরু চিনিকলের মাড়াই মৌসুম শেষ হলো। এ ৪২ দিনে মাত্র ৪৬ হাজার ৬০ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করা হয়েছে। এতে ২ হাজার ২১৯ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন হবে বলে জানায় চিনিকল কর্তৃপক্ষ। যার চিনি আহরণের হার মাত্র ৫ দশমিক শূন্য ৫। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এবার আখের সাথে পাতা ও ময়লাযুক্ত শিকড় মাড়াইয়ের মহোৎসব চলে চিনিকারখানায়। মাড়াইয়ের পরিমাণ বেশী দেখাবার প্রতিযোগিতায় আখ এতটাই অপরিষ্কার ছিল যে, ট্রলিতে আখ আছে না আখের হোড় (শুকনা পাতা) তা সহজে বুঝাই যেত না। প্রবীণ কর্মচারীরদের অভিমত- তারা কখনো এত অপরিষ্কার আখ মাড়াই হতে দেখেননি চিনিকারখানায়, যার প্রভাবে চিনি আহরণের হার তলানিতে পড়ে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় বড় অংকের লোকসান হবে প্রতিষ্ঠানটিতে। গত ২০২১-২২ মৌসুমে চিনি কারখানায় ৭০ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হয়েছিল।
তবে এ বছরও চিনি কারখানায় প্রতিষ্ঠানটির ৫০-৫৫ কোটি টাকা লোকসান হবে বলে জানান কেরুর মহা-ব্যবস্থাপক (অর্থ) মুহম্মদ সাইফুল ইসলাম।