বুধবার ২৯ মার্চ ২০২৩
Online Edition

কারসাজির নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে জনগণ সরকারকে লালকার্ড দেখিয়েছে -----আজিজুল বারী হেলাল

খুলনা ব্যুরো : উপ নির্বাচনে মানুষ সরকারকে লাল কার্ড দেখিয়েছে দাবি করে বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেছেন, একজন ইউটিউবার হিরো আলমকে পরাজিত করতেও এই সরকারকে কারচুপির আশ্রয় নিতে হয়েছে। আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকারের কারসাজি শুরু হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, বিক্ষুব্ধ নেতাদেরকে যেনতেন মার্কা ধরিয়ে নিজ দলের প্রার্থীদের সরিয়ে দিয়ে প্রহসনের সংসদ গঠন করবে তারা। বিএনপি এ ধরনের কোন নির্বাচনকে মানে না। জনগণও চায় তাদের ভোটাধিকার ফিরে পেতে। এজন্য আগামীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোন নির্বাচন হবে না দাবি করে হেলাল বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ও জনগণের অধিকার ফিরে না আসা পর্যন্ত বিএনপি রাজপথের আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর করে তুলবে। 

বৃহস্পতিবার খুলনায় বিএনপির পক্ষ থেকে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আজিজুল বারী হেলাল এসব কথা বলেন। দুপুরে নগরীর কে ডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারী খুলনায় অনুষ্ঠিতব্য বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ সম্পর্কে মিডিয়া কর্মীদের অবহিত করা হয়। 

প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা। তিনি বিভাগীয় সমাবেশের প্রস্ততির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। একই সাথে অবৈধ সরকারের বশংবদ পুলিশ বাহিনীর নিন্দনীয় ভূমিকা সম্পর্কে অবগত করেন। জানান, বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ নগরীর হাজী মহসিন রোড থেকে ৩১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আসলামকে গ্রেফতার করেছে। নাশকতার যে মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়, সে ঘটনার সময় অন্য একটি মামলায় তিনি কারাগারে ছিলেন। 

অপরদিকে ১৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সোহাগের একমাত্র ছেলে বিশাল মঙ্গলবার মারা যায়। সোহাগ পুলিশের দায়ের করা গায়েবী মামলায় কারাবন্দী রয়েছে। বুধবার প্যারোলে মুক্তি নিয়ে সোহাগ ছেলের জানাযা ও দাফনে অংশ শেষে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে তাকে পুনরায় জেলে নিয়েছে পুলিশ। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারী সারা দেশের বিভাগীয় সদরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামী সন্ত্রাস, সরকারের দমন-পীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি, বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং নিত্যপণ্যের দাম কমানোসহ ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হবে খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ। সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ^র চন্দ্র রায়। এছাড়া কেন্দ্রীয় একাধিক নেতৃবৃন্দ সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। 

অতীতের ধারাবাহিকতায় খুলনার কর্মসূচি সর্বাত্মকভাবে সফল করতে চলছে সার্বিক প্রস্ততি ও বিশাল কর্মযজ্ঞ। আপনারা জানেন, এই সরকারের পেটোয়া পুলিশের দায়ের করা গায়েবী মামলায় রাজপথের আন্দোলনের মূল চালিকা শক্তি মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পীসহ ৬৬জন নেতাকর্মীকে একদিনে জেলে পাঠানো হয়েছে। এর বাইরেও আরও অনেক কর্মী এই মুহূর্তে কারাগারে আছেন। তাদের অনুপস্থিতি আমাদেরকে ক্ষুব্ধ ও বেদনাহত করার পাশাপাশি সার্বিক প্রস্তুতিতেও বিরূপ প্রভাব রাখছে। 

সমাবেশকে কেন্দ্র করে ১৪টি উপ কমিটি গঠন করা হয়েছে। সমাবেশ করার জন্য নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্ত্বর অথবা হাদিস পার্ক ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে সিটি কর্পোরেশনের কাছে চিঠি দিয়েছেন বিএনপি। একই সাথে কেএমপি কমিশনারকে অবহিত করা হয়েছে। সমাবেশে আসার পথে নেতাকর্মীরা যেন কোনো বাধার সম্মুখীন না হন সে জন্য পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

দেশের মানুষ ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। এ জন্যই বিএনপির আন্দোলনের প্রতি তারা সাড়া দিচ্ছে। ৪ ফেব্রুয়ারির কর্মসূচি সফল করতে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা কাজ করছেন। আশা করছি অন্যান্য বিভাগের মতো খুলনার সমাবেশ সফল করার মধ্যদিয়ে সরকারকে আমরা বার্তা দিতে পারবো, অবিলম্বে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিন। তা না হলে দুর্বার আন্দোলনে এ সরকারের পতন হবে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি মো. মুজিবর রহমান, জেলা আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান, মহানগর সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তারিকুল ইসলাম জহির।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ