শুক্রবার ২৪ মার্চ ২০২৩
Online Edition

বায়রার সিন্ডিকেট বিরোধী মতবিনিময় সভায় হট্টগোল হাতাহাতি

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বায়রার মতবিনিময় সভায় ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে-সংগ্রাম

স্টাফ রিপোর্টার : মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার ‘সিন্ডিকেটমুক্ত’ করতে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছিল জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এই সভা শুরু হয়। পুরো সভার মধ্যে সিন্ডিকেট ইস্যুতে হট্টগোল চলে। এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের ওপর ব্যবসায়ীদের চড়াও হওয়ার ঘটনাও ঘটে।

গতকাল সকাল থেকে দফায় দফায় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) সভায় সিন্ডিকেট ইস্যুতে হট্টগোল চলে। সভার শুরুতেই বায়রা সভাপতি বলেন, এখানে এমন কোন কথা বলা যাবে না; যা সরকারের বিরুদ্ধে যায়। বায়রার কার্যনির্বাহী কমিটিতে সিন্ডিকেটের সদস্য আছে কি নেই সে প্রসঙ্গ নিয়েই হট্টগোল হয়। এক পর্যায়ে হোটেলে ক্রিকেট দলের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা অনুষ্ঠানে হস্তক্ষেপ করেন। তুহিন নামের এক সদস্য অভিযোগ করেন, কিছু ব্যবসায়ী হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক। আবার অনেক ব্যবসায়ীকে ভাড়া বাসায় থাকতে হয়। রফিকুল হায়দার নামের এক বক্তা বলেন, এখানে চলছে দুর্বল সবলের লড়াই। সবলেরা দুর্বলদের ব্যবসা করতে দিচ্ছে না। 

বায়রার সব অনিয়মের তদন্ত করার দাবি জানান একজন সদস্য। এসময় সিন্ডিকেট বিরোধী বক্তব্য দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকজন সদস্য জানান, আমরা এখানে দায়িত্ব পালন করছিলাম। ওনাদের হট্টগোল দেখে আমরা সেখানে যাই। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।  লোকমান নামের আরেক সদস্য বলেন, আজকের ডায়াসেই সিন্ডিকেটের বড় বড় সদস্য রয়েছেন। কাফনের কাপড়ে কিন্তু পকেট নাই। টাকা পয়সা সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবেন না। দয়া করে আমাদের ব্যবসা করতে দিন। রশিদ শাহ নামের আরেকজন সাধারণ ব্যবসায়ীদের প্রশাসন হয়রাণি করে বলে অভিযোগ করেন। সিন্ডিকেট বিহীন ব্যবসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সংসদে আইন করার পরামর্শ দেন তিনি। 

অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে দুপুর ১টার কিছুপর আবারও হট্টগোল শুরু হয়। বায়রার কার্যনির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মো. ফখরুল ইসলামের সিন্ডিকেট নিয়ে বক্তব্যে আবারও উত্তেজিত হয়ে পড়েন ব্যবসায়ীরা। এসময় মূল মঞ্চের সামনে জড়ো হন কয়েকজন ব্যবসায়ী। তাদের ধাক্কাধাক্কিতে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর বুম মাটিতে পড়ে গেলে সেখানে এগিয়ে যান সময় টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সানবীর ইসলাম রুপল। তখন তার দিকেও তেড়ে আসেন এবং আক্রমণ করার চেষ্টা করেন ব্যবসায়ীরা। এসময় বাকবিত-া হয়। এক পর্যায়ে অন্যান্য সাংবাদিকরা প্রতিবাদ জানান।

সানবীর ইসলাম বলেন, বায়রা একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে। সেখানে তারা নিজেরাই দফায় দফায় হট্টগোল করে। একবার ধাক্কাধাক্কির পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। পুলিশ এসে একবার হস্তক্ষেপ করে এখানে। তারপরও তারা প্রোগ্রামের মাঝখানে কয়েকবার উত্তেজিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শেষ দিকে একজনের বক্তব্যের কারণে আবার তারা জড়ো হয়ে যায়। আমি দেখছিলাম যে আমার টেলিভিশনের বুম ও অন্যান্য বুম টান দিয়ে ডায়াস থেকে ফেলে দিয়েছে। ফেলে দেওয়ার পর আমি প্রতিবাদ জানাই। তাদের নিজেদের কোন্দল নিজেরা করুক। আমার এবং আমার সহকর্মীদের বুম কেন ফেলে দেবে? তখন আমার ওপর তেড়ে আসে। এক পর্যায়ে একজন গায়ে হাত দিয়ে ডায়াস থেকে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। বায়রার প্রেসিডেন্টসহ অন্যান্যরা তখন শান্ত করার চেষ্টা করে। তারপরও তারা নানারকম হুমকি ধামকি দিতে থাকে।

এসময় অন্যান্য সাংবাদিকরা প্রতিবাদ জানালে বায়রার সভাপতি দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান এবং দোষীকে খুঁজে বের করে শাস্তি দেবেন বলেও জানান তিনি। এসময় একজনকে চিহ্নিত করা হলে তিনি স্টেজে এসে বলেন আমি কারও গায়ে হাত তুলিনি।

বায়রার মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, আমাদের মধ্যে যা দ্বিধা দ্বন্দ্ব আছে, তা আমরা নিজেরাই সমাধান করবো। অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ