আফগানিস্তানে নারীদের কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করবে তালেবান

২৭ জানুয়ারী, বিবিসি, আল জাজিরা : গত ডিসেম্বরে এনজিওতে নারীদের কাজ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তালেবান সরকার। এর ফলে মানবিক সহায়তা কর্মসূচীর সুবিধাভোগী কোটি মানুষের কপালে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। এর মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র শীত, দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শুনছে আফগানিস্তান। এই অবস্থায় সুখবর দিলেন জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা কর্মসূচীর আন্ডারসেক্রেটারি জেনারেল মার্টিন গ্রিফিথস। তিনি জানিয়েছেন, কিছু ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে সক্রিয় হয়েছে তালেবান সরকার।
মার্টিন গ্রিফিথস কাবুল গেছেন জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে। জাতিসংঘের নেতৃত্বে আফগানিস্তান সফরে যাওয়া দ্বিতীয় প্রতিনিধি দল এটি। মার্টিন কথা বলেছেন আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে।
তিনি জানান, নেতা ও মন্ত্রীরা তাকে বলেছেন, কিছুক্ষেত্রে নারীদের কাজ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিলের কথা ভাবছে তালেবান সরকার। বিশেষ করে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথা ভাবছে তারা। আর কীভাবে নারীরা কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হবেন, তার একটি গাইডলাইন প্রণয়নের কাজ চলছে।
জাতিসংঘ জানায়, ৩ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার দেশ আফগানিস্তানে অর্ধেকের বেশি মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছে। ৪০ লাখ শিশু ভুগছে পুষ্টিহীনতায়। জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা দরকার, এমন মানুষের সংখ্যা ২ কোটি ৮০ লাখ। আর এই জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৬০ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের প্রচ- ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
মার্টিন গ্রিফিথস কয়েকদিন ধরে কাবুলে টানা বৈঠক করেছেন তালেবান নেতাদের সঙ্গে। তিনি বলেন, তাদেরকে আমি বলেছি, নারীর কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা বাতিল করতে না পারলে অন্তত মানবিক বিবেচনায় ছাড় দিন। দুর্গত মানুষের সেবায় নারীদের কাজ করার সুযোগ দিন। জাতিসংঘের অন্যতম এ শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, খাদ্য ও চিকিৎসার পাশাপাশি আরো কিছু ক্ষেত্রে নারীরা কাজ করার সুযোগ পাবেন বলে তিনি আশা করছেন।
মার্টিন গ্রিফিথসের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলটির প্রধান এজেন্ডা এনজিওতে নারীদের কাজ করার অধিকার ফিরিয়ে আনা। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে না পারলেও অন্তত কিছুটা শিথিল করা। একই সঙ্গে আফগান নারীদের উচ্চশিক্ষার ওপর জারি হওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্যও চেষ্টা করছে প্রতিনিধি দলটি।
এদিকে, তালেবান সরকারের মুুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ টুইটারে বলেছেন, দীর্ঘসময় যুদ্ধকবলিত দেশ হিসেবে আফগানিস্তানে কিছু সংকট দেখা দেবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে ইসলামিক আমিরাত (আফগানিস্তান) ধীরে ধীরে সংকট কাটিয়ে উঠবে। গত দেড় বছর সংকট নিরসনের অনেক বড়ো বড়ো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা এখনো চলমান।