সাবরাং থেকে বান্দরবান

মাহবুব নেওয়াজ মুন্না
সাবরাংয়ের নয়াপাড়া আলহাজ্ব নবী হোসাইন উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণিতে পড়াকালীন সময়ে একবার বান্দরবান শিক্ষাসফরে গিয়েছিলাম। শিক্ষাসফর আয়োজনের উদ্যোগ মূলত আমাদের ১০ম শ্রেণির ছাত্রদের পক্ষ থেকেই নেয়া হয়েছিল। প্রায় একমাস পর্যন্ত বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অর্থ যোগাড় করে আমরা গিয়েছিলাম।
দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। শিক্ষাসফরটির মূল সমন্বয়ের দায়িত্বপালনকারী শ্রদ্ধেয় আলী আকবর স্যারের নির্দেশিত পরিকল্পনানুযায়ী সূর্যোদয়ের পূর্বে আমি আর সহপাঠিবন্ধু বেলাল ডেইলপাড়ায় গিয়ে দুপুরের খাবারের মেন্যু হিসেবে মুরগী আর সালাদ হিসেবে শসাগুলো নিয়ে আসি স্কুলে। সকাল সাড়ে দশটায় শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ও জনপ্রিয় ক্রীড়াবিদ মুহাম্মদ উল্লাহ স্যারের ব্যবস্থাপনায় রিজার্ভ করা বাসটি ছাড়ে। ভ্রমণযাত্রী হিসেবে আমরা বিদ্যালয়ের ছাত্র ৩৬ জন, শিক্ষকবৃন্দ এবং কয়েকজন এলাকাবাসী।
মাঝপথে কেরানীহাট থেকে উঠেছিল রনি ভাই, ফয়েজ ভাই ও ছৈয়দ ভাই। ওনারা চট্টগ্রামের ব্যাচেলর মেচ থেকে এসেছিল। আমরা সাবরাং থেকে বান্দরবানে গিয়ে প্রথমে মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সে টিকেট কেটে ঢুকি। মেঘলায় ঢোকার পর রান্না করে নিয়ে যাওয়া খাবার পরিবেশন করা হয়।
মেঘলা জায়গাটি সত্যিই মুনোমুগ্ধকর। দু’পাশে দুটি ঝুলন্ত ব্রিজ আর পাহাড়ের উপরে মিনি সাফারী পার্ক। আমি কয়েকটি ছবি তুলি সনি ফিল্ম ক্যামেরায়। মেঘলা থেকে সন্ধ্যায় বান্দরবান শহরে প্রবেশ করে রাজার মাঠে গাড়ি থামে। রাতে পাপিয়া ম্যাডাম সবাইকে খাবার পরিবেশন করে। সে রাতে আমরা সবাই ঘুমাই বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষে। সকালে ঘুম থেকে উঠে আমি আর মামুন বান্দরবান শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরি। বান্দরবানের মনোরম জেলা স্টেডিয়াম, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, খুব সুন্দর লাগল। রাত্রে গভীর ঘুম হয়েছিল। কক্ষের চারিদিকে হৈচৈ-এ ভরপুর। তাছাড়া জুনিয়র-সিনিয়রদের দুষ্টুমিতো লেগেই আছে।
ভোর ৮টার দিকে ডুলাহাজারা সাফারী পার্কের উদ্দেশে বাস ছাড়ে। পথিমধ্যে বায়তুল ইজ্জত বিজিবি এলাকায় জোবাইর নিষেধ না মেনে মাইক চালু রাখে তাই চালককে শাস্তি দেয় কর্তৃপক্ষ। ডুলাহাজারা সাফারী পার্কে নেমে সবাই দুপুরের খাবার খেলাম। সবাই টিকেট কেটে ভিতরে ঢুকি। সেখানে কয়েকটি ছবি তুলি। বিকালে আমরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পৌঁছি। সন্ধ্যা ৬টার দিকে আমাদের বাস কক্সবাজার সৈকত থেকে সাবরাংয়ের ফেরার উদ্দেশ্যে ছাড়ে। আমরা স্কুল প্রাঙ্গণে যখন পৌঁছি তখন রাত ৯টা।
আমাদের আনন্দকর সফরতো শেষ হয়েছিল, কিন্ত মনে গেঁথে রইল চিরসবুজ স্মৃতি।