জাপানের বিতর্কিত গোল নিয়ে যা বলছে ফিফা

স্পোর্টস ডেস্ক : গ্রুপ পর্বে দুই ফেভারিট জার্মানি ও স্পেনকে হারিয়ে নকআউটে সূর্যোদয়ের দেশ। কিন্তু এত ভালো পারফরম্যান্স করা সত্ত্বেও বিতর্ক তাদের পিছু ছাছে না। স্পেনের বিপক্ষে বৃহস্পতিবার রাতে জাপানের একটি গোল নিয়ে এখন বিশ্বজুড়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে। আর এর জন্য কাঠগডায সেই ‘ভিএআর’ প্রযুক্তি । জাপান স্পেনের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে জিতলেও বিতর্ক এখন তাড়া করে বেড়াচ্ছে তাদের।স্পেনের বিপক্ষে ৫১ মিনিটে গোল করেন জাপানের তানাকা। মিতোমার যে পাস থেকে তানাকা গোল করেন, সেটি নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। অনেকের দাবি, মিতোমা যখন পাস করেন, ততক্ষণে বল লাইন পেরিয়ে গেছে। অর্থাৎ গোলটা বৈধ নয়। নিজেদের দাবির স্বপক্ষে একটি ছবিও দেখাতে থাকেন তারা। যে ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল, তাতে দেখে মনে হবে যে বলটা লাইন পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে কী বলছে ফিফার নিয়ম।
বলটা লাইন পেরিয়ে গিয়েছিল কি না? দীর্ঘক্ষণ ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির সাহায্য নেওয়ার (ভিএআর) পরও রেফারি কি ভুল সিদ্ধান্ত নিলেন? জাপান-স্পেন ম্যাচের পর সেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। যদিও ফিফার নিয়ম বলছে বল মাঠের মধ্যেই ছিল। রেফারি ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই ম্যাচে ভিএআরের দায়িত্ব পালন করেন মেক্সিকোর ফার্নান্দো গুয়েরো। লম্বা সময় নিয়ে গোলটি পরীক্ষা করেন তিনি। ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, ‘অ্যারিয়াল ভিউ’ অর্থাৎ ওপরের দিক থেকে বলের কোনো অংশ যদি লাইনে থাকে, তাহলে বলটি মাঠের মধ্যেই আছে বলে ধরে নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে খেলা চলবে। গোললাইন টেকনোলজিতে ‘অ্যারিয়াল ভিউ’ অনুযায়ী বল যেহেতু শতভাগ মাঠের বাইরে যায়নি, সেজন্য সিদ্ধান্ত জাপানের পক্ষেই গেছে।
অন্যদিকে ফিফার ৯ নম্বর আইন অনুযায়ী, বল যখন শূন্যে থাকা বা মাটিতে ঠেকা অবস্থায় গোললাইন বা টাচলাইনের পুরো অংশ পেরিয়ে যাবে, তখন তা বেরিয়ে গেছে বলে ধরা হবে। অন্য ক্ষেত্রে বল মাঠের মধ্যেই আছে বলে ধরা হবে। এ কারণে এই ম্যাচে মিতোমা যখন বল পাস করেন, তখন বল খেলার মধ্যেই ছিল বলে গণ্য করেছেন রেফারি।এই গোলের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কের কারণ হচ্ছে, এটি বাতিল হলে বিশ্বকাপের নক আউটে চলে যেত জার্মানি। কিন্তু ওই গোলের সুবাদে জাপান জিতে যাওয়ায় বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্যায় থেকে ছিটকে গেছেন থমাস মুলাররা। এমনিতে স্পেনকে হারিয়ে গ্রুপ ‘ই’তে শীর্ষস্থানে জাপান, স্পেন চার পয়েন্টে গ্রুপে দ্বিতীয় হয়ে নকআউটে।বিতর্কিত এই গোল নিয়ে আলোচনা চলছে জার্মানির গণমাধ্যমেও। তারা এটিকে ১৯৬৬ বিশ্বকাপে জিওফ হার্স্টের বিতর্কিত গোলের সঙ্গে তুলনা করছে। ৫৬ বছর আগে আরেকটি বিতর্কিত গোলে পুড়তে হয়েছিল জার্মানদের। ১৯৬৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ সময় পর্যন্ত ১-১ গোলে সমতায় ছিল জার্মানি। একদম শেষ মুহূর্তে জিওফ হার্স্টের শট ক্রসবারে লেগে গোললাইনে পড়ে, পরে তা ক্লিয়ার করেন জার্মান ডিফেন্ডার। রেফারি প্রথমে কর্নার দিলেও সহকারী রেফারির সঙ্গে আলাপ করে আসে গোলের সিদ্ধান্ত। ২-১ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড। জার্মানরা এখনো বিশ্বাস করে বলটি গোললাইন অতিক্রম করেনি। এবার নিজেদের ম্যাচে না হলেও নিজেদের ভাগ্য জড়িত থাকায় জাপানের বিতর্কিত গোল নিয়ে নিজেদের দুর্ভাগা ভাবছে তারা।