বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪
Online Edition

বাসার ছাদে ভূত

মনসুর আহমেদ 

 

আম্মু, আম্মু। আজ তো শুক্রবার। আর্ট স্কুলে যেতে হবে।  হ্যাঁ বাবা নিয়ে যাবো।  আম্মু, আজ আমি কি আঁকবো বুঝতে পারছি না। তুমি বলে দাও।

- রাস্তায় যেতে যেতে কোনো দৃশ্য মনে পড়ে গেলে আজ তাই এঁকো।

- আচ্ছা আম্মু, তাহলে চল। 

- আচ্ছা বাবা। 

- আম্মু, রাস্তায় আজ এতো পচা গন্ধ কেন করছে? ইস্ আম্মু নাক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। 

- সায়ান এতো কথা বলতে নেই। 

- কেন আম্মু? 

- রাস্তায় কিন্তু ভূত আছে। 

- পচা গন্ধ কি তাহলে ভূত পাঠিয়েছে? 

- এই দ্যাখ ছোট ছোট ব্যাগ, এগুলো রাতের অন্ধকারে ভূত রেখে যায়। এগুলো থেকে পচা গন্ধ আসছে। 

- আম্মু, এগুলো তো বাসা বাড়ির ময়লা। ভূত নিয়ে আসলো কিভাবে?

- মানুষের মাঝেও কিছু ভূত বসবাস করে সায়ান। তারা এই কাজ করছে। 

- বাহ্ আম্মু! দারুণ কথা বলেছ, এটাতো জানা ছিলো না। 

সায়ান এখন চিন্তায় পড়ে গেল, ভাবতে শুরু করলো মায়ের কথা। তার মনে একটাই চিন্তা, মানুষের ভিতরে ভূত। কি রহস্য কথা। এটা কি সম্ভব? এটা কি হয়? তবুও সে ভূতের সন্ধানে। হঠাৎ সে দেখে তার সামনে একটি বড় ব্যাগ উপর থেকে পড়েছে। সায়ান কিছুটা ভয় পেয়ে গেল। কি ব্যাপার? তাহলে কি ভূত আছে?

সায়ানের আম্মু মুচকি মুচকি হাসছেন। 

- কি হলো আম্মু? 

- বলেছিলাম না বাবা ভূত আছে! এটাও ভূতের কাজ। 

- কোথায় আম্মু ভূত যে দেখছি না। 

- ঐ যে বাসার ছাদে ভূত আছে। 

- না, আম্মু এটা তো মানুষের কাজ। মানুষ এতো নোংরা কেন? তাদের কারণেই পচা গন্ধ দিয়ে আমাদের চলতে হয় প্রতিদিন। 

- বাবা এই জন্যই তোমাকে বারবার বলি, বেশি বেশি লেখাপড়া করে প্রকৃত মানুষ হও। 

সায়ান তার মনে জমে থাকা ক্ষোভ আর কষ্ট নিয়ে আর্ট স্কুলে আঁকতে বসেছে। স্কুলে আসার পথের দৃশ্যটি তার চোখে ভাসছে। সে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিল এই দৃশ্যটি আঁকবে এবং শুরুও করে দিল। 

ঘণ্টা-দেড় ঘণ্টা পরিশ্রম করে সে রাস্তায় ময়লা না ফেলতে একটি প্রতিবাদী দৃশ্য এঁকে স্যারকে দেখালো। স্যার সায়ানের আঁকা ছবি দেখে মুগ্ধ হয়ে বাহ্ বাহ্ বলে তার মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে দিলেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ