কবিতা
চাঁদ কিনেছে
খুরশীদ আলম বাবু
খুশবু সোনা চাঁদের কণা
চাঁদ কিনেছে হাটে-
সেই চাঁদটা দুষ্টু এমন
কেবল ছড়া কাটে।
একটা ছড়া নিলো কিনে
নীল চাঁদুয়ার বুড়ি
আরেক ছড়া হয়ে গ্যালো
স্বচ্ছ আলোর নুড়ি
নুড়ি কিনতে ছুটলো বুড়ি
খুশবু সোনার কাছে
দেখলো বুড়ি আদুল গায়ে
বনের পিরভি নাচে।
খুশবু সোনা-যাচ্ছো কোথায় ?
হাওয়ার পক্সক্ষী খুলে
ত্রিপরণির হাট পেরিয়ে
ক্ষিরুই নদীর কূলে-
হাতের নাচন, পায়ের পাচন
বাজিয়ে বুড়ি বলে
আলোর নুড়ি বলতো সোনা
কোন গাছেতে জ্বলে?
বৃষ্টি মেয়ে
শাহজাহান মোহাম্মদ
মেঘবালিকা চুপি চুপি
সাজ ধরেছে সাজ
এই বুঝি আসলো নেমে
ফেলে সকল কাজ।
বৃষ্টি মেয়ে ভরদুপুরে
টাপুরটুপুর চালে
পায়ের নূপুর হাতের কাঁকন
ঝুম ঝুমা ঝুম তালে।
বৃষ্টি মেয়ে মধুর সুরে
গাইছে আপন মনে
মন খুশিতে ফুলপাখিরা
ভিজে সবুজ বনে।
বৃষ্টি নামের মিষ্টি মেয়ে
নাচে পাতায় পাতায়
ভেজা কাকের নীরব ছবি
দেখো খুকির খাতায়।
খুকুর বিড়াল ছানা
দিপংকর দাশ
যখন তখন লাফিয়ে ওঠে
খুকুর বিড়াল ছানা
খুকুই কেবল ধরবে তাকে
অন্য কারও মানা।
দুধ খেতে যেই ইচ্ছে হবে
খুকুই দেবে বাটি
মাছের টুকরো মাংস পোলাও
সব হওয়া চাই খাঁটি।
ঘুম পেলে ঠিক ঘুমাবে সে
খুকুর বিছানাতে
পড়ার সময় বিড়ালটাও
পড়ে খুকুর সাথে।
বিকালবেলা খুকুর সঙ্গে
সেও যাবে মাঠে
ঠিক এভাবেই হেসে খেলে
সারাটা দিন কাটে।
শরতে ঘুড়ি
দ্বীন মোহাম্মাদ দুখু
শরতে
সে কোন ঘুড়ি
করছে ওড়াউড়ি,
ঘুড়ির নাচন দেখে
নাচছে বুড়া-বুড়ি।
কে দেবে রে সুড়সুড়ি
দুষ্টু মেঘের বুড়ি
ঘুড়ি গেছে ভো ভো উড়ি
পালিয়ে গজ কুড়ি।
শরতে
সে কোন ঘুড়ি
রঙ আনে এক ঝুড়ি,
রঙ মেখে সঙ সেজে
পুব পাড়ার নুরি
বাটায় বসে খায় সে
মজার গুড়-মুড়ি।
আঁকছে ছবি
জাকির শায়েরী
খোকা-খুকু আঁকছে ছবি
পাখ-পাখালি গাছের
নদ-নদী আর বিলে ঝিলে
আঁকছে ছবি সবাই মিলে।
খোকা-খুকু আঁকছে ছবি
মায়ের পাশে বাবার
সারি সারি গাছ-গাছালি
রঙতুলিতে পাখ-পাখালি।
খোকা-খুকু আঁকছে ছবি
পুব আকাশে উঠলো রবি
পাখি ডাকে গাছের ডালে
আঁকছে ছবি ছন্দে তালে।
শরতের উচ্ছ্বাস
শফিক সাগর
শরতের সাদামেঘ
নেই কোন উদ্বেগ
ভাসছে তো পাল তুলে ভাসছে
জেগে ওঠে খালবিল
আকাশটা নীলে নীল
ফসলের মাঠ রোদে হাসছে।
আশ্বিনে ভরা নদী
বয়ে চলে নিরবধি
দুইকূলে সাড়া তার পড়ছে
উড়ে যায় সাদাবক
পাখা তার ঝকঝক
উঁচুডালে বাসাখানি গড়ছে।
নদীটার দুইকূল
ভরে আছে কাশফুল
ওপারে কে মাঝি বলে ডাকছে
রাতজাগা জেলেদল
ইলিশের কোলাহল
রুপালি ফসল তুলে রাখছে।
শিশিরের ভেজাঘাস
পাখিদের উচ্ছ্বাস
শান্তির নীড় যেন ধরনী
সকালের সোনারোদ
একমুঠো সুখবোধ
ধেয়ে চলে জীবনের তরনী।
আয় আয় মাছরাঙা
জেসমিন সুলতানা চৌধুরী
কতো মাছ ওই খালে
ধরে না কেউ জালে
চিলে খায় খুব,
সে কী রোদ বাপুরে
সাপ ধরে সাপুড়ে
ভয়ে মাছ ডুব।
সাদা বক ধরে খপ্
পেটে দেয় গপাগপ
আরো মন চায়,
ভোঁ করে এলে চিল
কেউ যেন মারে ঢিল
ফটাফট খায়।
মাছরাঙা নীল পাখি
আদরে যে ডাকি
আয় খাবি আয়,
হাঁটুজল যেখানে
ভয়ের কী সেখানে
আমাদের গাঁয়।
রঙচঙা ওই গায়ে
নূপুরহীন দুই পায়ে
দাঁড়িয়ে চুপ,
ভরসাতে থাকিস্ রে
পুঁটি মাছ পাবি রে
গিলবি তুই টুপ।
রোদের লুকোচুরি
সাজ্জাদুল ইসলাম শাওন
গগনশিরীষ মিনজিরি আর
টগর ছাতিম ফুল,
জগডুমুরের পাতায় বসে
বকের হুলুস্থুল।
আমলকি আর চালতাফুলে
মৌমাছি ভনভন,
সবুজ ধানের মাঠ পেরুলেই
শুভ্র কাশের বন।
সাদা সাদা মেঘ উড়ে যায়
আকাশ গাঢ় নীল,
মেঘের সাথে তাল মিলিয়ে
উড়ছে শত চিল।
শিউলিঝরা সকাল বেলায়
তালের রসে মুড়ি,
ইলিকঝিলিক ইমলিপাতায়
রোদের লুকোচুরি।