বিশ বছরের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মৃত্যু
ফেনী সংবাদদাতা : সরকার গরিব ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার জন্য দাগনভুইয়ার ইয়াকুবপুর বাদামতলী আশ্রায়ণ প্রকল্পে হামিদুল হক প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করেন ১৯৯৮ সালে। সেখানকার বাসিন্দারা ঘরের সামনের বিদ্যালয়ে ছেলেমেয়েদেরকে না দিয়ে উপবৃত্তির লোভে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করায়, করোনাকালীন সময়ে বন্ধ হয়ে যায় এ বিদ্যালয়টি। এখন আবাসনের বাসিন্দারা সেখানে মদ, জুয়া, তাসসহ নানা আকামের আড্ডা জমিয়েছে। বিদ্যালয়ের আসবাবাবপত্র ভেঙে চুরমার করে, লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে। সরকারি দেওয়া ৩৫ শতক ভূমিতে প্রায় কয়েক লক্ষ টাকার সম্পদকে এ জালিয়াত, মাদকসেবী, চোরেরা লুটেপুটে খাচ্ছে। বাদ প্রতিবাদ করে ও কারো কোন সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। সাবেক জেলা প্রশাসক আমিন উল আহসানের সহযোগিতায় বিদ্যালয়টি কোন রকমে কাঠ টিন খুঁটির উপর দাঁড়িয়ে আছে। শিক্ষাবিভাগ বই ও প্রশ্ন দিয়ে দায়িত্ব শেষ। বিশ বছর যাবৎ বিনা বেতনে ৫ জন শিক্ষক অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। প্রতিষ্ঠাতা হামিদুল হক মারা যাওয়ায় দুর্দশা আরো বেড়ে গেছে। প্রধান শিক্ষক জান্নাতুল মোকাম জানান, ৯৮ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৫ জন শিক্ষক দিয়ে বেনা বেতনে গরিব, অসহায় পরিবারের সন্তানকে লেখা পড়া শিখিয়ে তারা অনেকে আজ প্রতিষ্ঠিত। যাদের সন্তানকে পড়াই তাদের থেকে ভালো ব্যবহার পাইনি। সরকারের সকল দপ্তরে ফাইল পড়ে আছে যুগ যুগ ধরে। প্রথমিক শিক্ষা থেকে শুধুমাত্র বই দেন প্রশ্নপত্র কিনে নিতে হয়। রেজাল্ট দিয়ে তাদের দায়িত্ব শেষ। যারা আশ্বাস দিয়ে কথা রাখেননি, তারা এখন সচিব, যুগ্ম সচিব পদে আছেন। দুঃখ, কষ্ট লাগে ২০ বছরের তিলে তিলে গড়া এ বিদ্যালয়টি যখন ভূমিদস্যুরা মাদকের আড্ডাখানা বানিয়ে কয়েক লক্ষ টাকার সম্পদ হানি করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে একটি বিদ্যালয়ে অপমৃত্যু কিছুতে কাম্য নহে। আমরা এর বিচার জেলা প্রশাসকসহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিলাম। বিদ্যালয়ের সহ সভাপতি আহাম্মদ হাজারি বলেন, ঢাকাসহ ফেনী জেলা প্রশাসকের শিক্ষা বিভাগে, প্রাইমারি শিক্ষা বিভাগে সহ জেলা পরিষদে মেরামতের জন্য ফাইল পড়ে আছে। কিন্তু আলোর মুখ দেখেনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার তানিয়া জানান তিনি মেটারনিটি লিভের ছুটি শেষে বিষয়টি দেখার পরে ব্যবস্থা নিবেন।