ইসলামী সংগঠন পিএফআইকে নিষিদ্ধ করল ভারত
২৮ সেপ্টেম্বর, ইন্টারনেট : অবশেষে নিষিদ্ধ ঘোষিত হলো ভারতের ইসলামী সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া (পিএফআই)। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই সংগঠনকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। বেআইনি কার্যকলাপ নিরোধ আইনে (ইউএপিএ) এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় শুধু পিএফআই-ই নয়, তার অন্যান্য শাখা সংগঠনকেও যুক্ত করা হয়েছে।
গত এক সপ্তাহে দুবার দেশজুড়ে এই সংগঠনের বিভিন্ন অফিস ও নেতা-কর্মীদের বাড়ি তল্লাশি চালানো হয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উদ্ধার করা হয় কোটি কোটি টাকা ও বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি। আটক করা হয় ২৭০ নেতা-কর্মী-সমর্থককে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিবৃতি অনুযায়ী, পিএফআইয়ের সঙ্গে বে আইনি ঘোষিত হয়েছে তারই শাখা সংগঠন রিহ্যাব ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন, ক্যাম্পাস ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া, অল ইন্ডিয়া ইমামস কাউন্সিল, ন্যাশনাল কনফেডারেশন অব হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশন, ন্যাশনাল উইমেনস ফ্রন্ট, এমপাওয়ার ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন। ইউএপিএ আইনের ৩৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, দেশের মোট ৪২টি সংগঠন এখনো নিষিদ্ধ। পিএফআই সেই তালিকার নবতম সংযোজন।
সরকারের বিবৃতি অনুযায়ী, পিএফআই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে চলেছে ভারতের নিষিদ্ধ সংগঠন স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়ার (সিমি) সঙ্গে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের ধারণা, সিমি নিষিদ্ধ হওয়ার পর ওই সংগঠনের কেউ কেউ পিএফআই প্রতিষ্ঠা করেন। সিমি ছাড়াও পিএফআই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে চলেছে জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) ও ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়ার (আইসিসি) সঙ্গে। বিভিন্ন মুসলিম দেশ থেকে বিপুল অর্থও এ সংগঠন পাচ্ছে বলে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) ধারণা। তাদের উদ্যোগেই প্রথমে ২২ সেপ্টেম্বর দেশের ১৫টি রাজ্যে পিএফআইয়ের বিরুদ্ধে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। সঙ্গী হয় রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সেই অভিযানে ধৃত ব্যক্তিদের বয়ান ও প্রাপ্ত নথিপত্রের নিরিখে ৭ রাজ্যে দ্বিতীয় অভিযান চালানো হয় গতকাল।
বেশ কিছুদিন ধরেই কর্ণাটক, গুজরাট ও উত্তর প্রদেশ সরকার পিএফআইকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে আসছিল। বলা হচ্ছিল, এ সংগঠন দেশে সাম্প্রদায়িক অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইছে, যাতে দেশের সুস্থিতি নষ্ট হয়। অভিযোগ, নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) ও এনআরসির বিরুদ্ধে দেশে যে আন্দোলন গড়ে তোলা হয়েছিল, তা ছিল পিএফআইয়ের উদ্যোগে। কর্ণাটক সরকার স্কুলে হিজাব নিষিদ্ধ করায় যে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে, রাজ্য সরকার মনে করে, তাতেও পিএফআই ইন্ধন জুগিয়েছে। এই দাবি রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টেও পেশ করেছে।