‘বিশ্ব এখন পঙ্গু ও বিপন্ন’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ‘আংশিক সেনা সমাবেশ’ করার ঘোষণা দিয়েছেন। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ঘিরে ২১ সেপ্টেম্বর বুধবার তিনি এ ঘোষণা দেন বলে জানায়, রয়টার্স ও বিবিসি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম রাশিয়া এ ধরনের সেনা সমাবেশ করতে যাচ্ছে। এই আংশিক সেনা সমাবেশে তিন লাখ রিজার্ভ সৈন্যকে ডাকা হবে। যুদ্ধের ফলাফল নিজেদের পক্ষে আনতে আরও সেনা পাঠাতে চান পুতিন। এই লক্ষ্যেই সামরিক বাহিনীর রিজার্ভ সেনাদের একটি অংশকে ডাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে বর্তমান অবস্থায় রাশিয়ার এ সেনা-সমাবেশ উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি করবে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। আর এর মাধ্যমে ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা বিরাট অঞ্চলে মস্কো অনুগত নেতাদের ডাকা গণভোটের প্রতি সুস্পষ্ট সমর্থন, জানালেন পুতিন। উল্লেখ্য যে, ওই গণভোট ডাকার পরদিনই পুতিন রিজার্ভ সেনাদের ডাকার নির্দেশ দিলেন। এ নিয়ে বুধবার তিনি জাতির উদ্দেশে টেলিভিশন ভাষণও দেন।পশ্চিমাদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে পুতিন বলেন, পশ্চিমারা যদি ‘পারমাণবিক ব্ল্যকমেল’ অব্যাহত রাখে, তাহলে মস্কো তার হাতে থাকা অস্ত্রের বিশাল মজুতের শক্তি দিয়েই জবাব দেবে। তিনি আরও বলেন, ‘যদি আমাদের ভূখণ্ড গত অখণ্ডতা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে, তাহলে আমাদের জনগণকে রক্ষায় সামর্থে থাকা সব উপায় প্রয়োগ করবো। এটা কোনো ধাপ্পাবাজি নয়।’ উপলব্ধি করা যায়, যুদ্ধ পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে।
এমন বাস্তবতায় বিশ্বব্যবস্থা নিয়ে বিশ্বনেতাদের সতর্ক করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনের শুরুতেই বিশ্বনেতাদের সতর্ক করে তিনি বলেন, বিশ্বব্যবস্থা এখন অনেক বড় এক অচলাবস্থায়। মানুষের জন্য যেসব বিষয় ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, তা মোকাবিলায় বিশ্ননেতারা প্রস্তুত নন। তাদের সদিচ্ছাও নেই। জাতিসংঘ প্রধান আরও বলেন, ‘আমাদের বিশ্ব এখন পঙ্গু ও বিপন্ন।’ উল্লেখ্য যে, ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধের ছায়ায় বিশ্বনেতাদের নিয়ে জাতিসঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম এ অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছে। এমন এক সময়ে এ অধিবেশন শুরু হয়েছে, যখন ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে চরম খাদ্যসংকট।
ক্ষমতাধর দেশগুলোর মধ্যে এখন এমন বিভাজন তৈরি হয়েছে যা স্নায়ুযুদ্ধের পর দেখা যায়নি। এমন অবস্থায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ হলে সমবেত বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘আসুন আমরা সবাই এক হয়ে, বৈশ্বিক একটি জোট হয়ে, সব জাতিরাষ্ট্র এক হয়ে কাজ করি।’ জাতিসংঘ মহাসচিব তো বিশ্বনেতাদের প্রতি চমৎকার আহ্বান জানালেন। সব জাতি-রাষ্ট্রকে এক হয়ে কাজ করার কথা বললেন। কিন্তু পরাশক্তিগুলো এখন ভূরাজনীতির নামে বিভক্তির যে সংস্কৃতি চালু করেছে, তা দূর করবে কে? সহজভাবে বলা যায়, যারা সমস্যা সৃষ্টি করেছে, সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে তাদেরই।