মঙ্গলবার ২১ মার্চ ২০২৩
Online Edition

ঢাবিতে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে ২০ লাখ টাকা ছিনতাই 

স্টাফ রিপোর্টার: চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির অভিযোগে পুলিশের সাবেক কনস্টেবল গোলাম মোস্তফা শাহীন ওরফে ‘শাহীন পুলিশ’সহ (৫০) পাঁচ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সবশেষ গত ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় গাড়িতে তুলে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ২০ লাখ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গ্রেফতার বাকিরা হলেন-মো. শাহাদৎ হোসেন (২৬), সাইদ মনির আল মাহমুদ (৩৬), মো. রুবেল ইসলাম (৩০) ও মো. জাকির হোসেন (৩৫)। বুধবার মধ্যরাতে রাজধানীর উত্তরা, কলাবাগান ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিক সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ কথা বলেন।

এসময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই-ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাডো গাড়ি, ছিনতাই করা নগদ এক লাখ ১০ হাজার টাকা, একটি ওয়াকিটকি, এক জোড়া হ্যান্ডকাপ, দুটি কালো কটি, একটি স্টিলের লাঠি, হাতুড়ি, প্লাস, স্পার্কার (পিস্তলসদৃশ বস্তু) ও একটি র‌্যাত উদ্ধার করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, ডাকাতির কাজে যে গাড়িটি ব্যবহার হতো সেটি একজন নামকরা ইঞ্জিনিয়ারের। কিন্তু গাড়িটি তিনি তার চালকের কাছে কেন দিয়ে রেখেছিলেন এর তদন্ত করছে পুলিশ। ওই ইঞ্জিনিয়ারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, এ চক্রের মূলহোতা গোলাম মোস্তফা শাহীন ওরফে শাহীন পুলিশ। তিনি পুলিশের কনস্টেবল ছিলেন। ২০০৮ সালে অনৈতিক কাজে চাকরি হারিয়ে ছিনতাই ও ডাকাতিতে লিপ্ত হন। তার নেতৃত্বে রাজধানীতে সংঘটিত হয় ডাকাতি। অনেক সময় ব্যাংক গ্রাহকদের টাকা ছিনিয়ে নিতেন শাহীনের লোকজন। কেউ যদি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বের হতেন, তখন শাহীনের লোকেরা মোটর সাইকেলে তাকে ফলো করতেন। এরপর নির্দিষ্ট স্থানে যাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে গাড়িতে তুলে চোখ বেঁধে সর্বস্ব লুটে নিতেন তারা। গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান জানান, চক্রটি ডাকাতিতে একটি প্রাডো গাড়ি ব্যবহার করতো। গাড়িটিতে একেক সময় একেক নম্বরপ্লেট ব্যবহার হতো। আবার কখনো কখনো একই গাড়িতে বিভিন্ন ধরনের রং করিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিচয়ে চলতো ছিনতাই-ডাকাতি। এই চক্রে আর কোনো পুলিশ জড়িত কি না জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান বলেন, এখনও কোনো পুলিশের নাম পাওয়া যায়নি। শাহীন চাকরিচ্যুত হওয়ার পর চুরি-ছিনতাইকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। এর আগেও গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ২০টি। এছাড়া গ্রেফতার অন্য ডাকাতদের বিরুদ্ধে দু-তিনটি করে মামলা রয়েছে। এসময় ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ পরামর্শ দিয়ে জানান, ঢাকা শহরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে কেউ যদি জোর করে গাড়িতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে চিৎকার করে আশপাশের মানুষকে জড়ো করতে হবে। তিনি আরও বলেন, স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ২০ লাখ টাকার তদন্ত করতে নেমে আরও একটি ডাকাত চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা রমনা বিভাগ। তারা হলেন ইমরান হোসেন শাহীদ, হিরা ব্যাপারী, জাবেদ আহমেদ বাবু, আরিফ ইকবাল ও আবুল খায়ের রানা। তাদর কাছ থেকে চাপাতি, ছুরি ও হাতুড়ি জব্দ করা হয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ