রবিবার ০২ এপ্রিল ২০২৩
Online Edition

সৌদি-তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেন ৩শ বন্দী বিনিময়

 

২২ সেপ্টেম্বর, নিউইয়র্ক টাইমস : নিজেদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবথেকে বড় পর্যায়ে বন্দী বিনিময় করলো রাশিয়া ও ইউক্রেন। গত সাত মাস ধরে চলা যুদ্ধে এমনটা কখনো দেখা যায়নি। এই ‘সারপ্রাইজ’ বন্দী বিনিময়ে দুই দেশের মোট প্রায় ৩০০ জনকে ফেরত দেয়া হয়েছে। রাশিয়া যে ১০ জনকে মুক্তি দিয়েছে তাদের মধ্যে দুজন যুক্তরাষ্ট্র, পাঁচজন যুক্তরাজ্য এবং ক্রোয়েশিয়া, মরক্কো ও সুইডেনের একজন। ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে বন্দী বিনিময়ের অংশ হিসেবে দশজনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সৌদি আরব ও তুরস্কের মধ্যস্ততায় এদের মুক্তির ব্যবস্থা হয়।

সৌদি আরবের কর্মকর্তারা বুধবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক টুইটবার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, রাশিয়ার হাতে বন্দী থাকা এই ১০ জনের মুক্তির মধ্যস্থতায় কাজ করেছেন দেশটির যুবরাজ বিন সালমান। মুক্তিপ্রাপ্তদের নিজ নিজ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে তাদের পরিচয় প্রকাশ করেনি সৌদি আরবের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এমন সময়ে এই বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হলো যখন ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য আংশিকভাবে সেনা সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবারই প্রথম রাশিয়া এ ধরনের সেনা সমাবেশ করতে যাচ্ছে।

ছাড়া পাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের দুজন হলেন অ্যালেক্স ড্রুক ও অ্যান্ডি তাই এনগোক হুইন। দুজনই যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনীর সাবেক সদস্য। ইউক্রেন যুদ্ধে দেশটির বাহিনীর সেনাদের সাহায্য করতে তারা সেখানে গিয়েছিলেন।

ব্রিটিশ ওই পাঁচ নাগরিকও ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিতে সেখানে গিয়েছিলেন। ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা রবার্ট জেনেরিক জানিয়েছেন, মুক্তি পাওয়া পাঁচজনের মধ্যে একজনের নাম এইডেন অ্যাসলি। দোনেৎস্ক থেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পর বিচারে তার মৃত্যুদ- হয়েছিল।

বন্দীদের মুক্তির পর স্বস্তি প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। মাসের পর মাস অনিশ্চয়তা ও দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর বন্দী ও তাঁদের পরিবারের জন্য এটা দারুণ খবর মন্তব্য করেছেন তিনি।

খবরে বলা হয়, ইউক্রেনের হয়ে যুদ্ধ করতে এসে এসব ব্রিটিশ ও আমেরিকান নাগরিক রুশ সেনাদের হাতে ধরা পড়েছিল। তাদের কাউকে কাউকে ভাড়াটে সেনা হওয়ার অপরাধে মৃত্যুদ-ও দেয়া হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত আটক রুশ সেনাদের ফিরিয়ে দেয়ার বিনিময়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। এছাড়া আরও ২১৫ ইউক্রেনীয়কে ছেড়ে দিয়েছে রাশিয়া। এরমধ্যে আছে মারিউপোল শহরে ইউক্রেনের হয়ে যুদ্ধ করা পাঁচ কমান্ডারও। 

অপরদিকে রুশ সেনা ও রুশপন্থী বিদ্রোহী মিলিয়ে মোট ৫৫ জনকে ফিরিয়ে দিয়েছে ইউক্রেন। এরমধ্যে আছেন ভিক্টর মেদভেদচুকও। তিনি একটি নিষিদ্ধ রুশপন্থী দলের নেতা, যিনি রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগের মুখোমুখি ছিলেন। রাশিয়ার হাত থেকে একসঙ্গে এত সেনা ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বাস দেখিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি। এক ভিডিওতে তিনি বলেন, এই বন্দী বিনিময় নিঃসন্দেহে আমাদের জাতি ও দেশের জন্য বড় জয়। এখন এই ২১৫ জন মানুষের পরিবার দেখতে পাবে যে তাদের ভালোবাসার মানুষ বাড়ি ফিরে এসেছে। আমরা সকল ইউক্রেনীয়কে বাঁচানোর চেষ্টা করছি। ওই ভিডিওতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েফ এরদোগানকে ধন্যবাদ দেন জেলেনস্কি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ