শুক্রবার ২৪ মার্চ ২০২৩
Online Edition

তাজিমের পিঁপড়ে

তাজিম ও আফিয়া চাচাত ভাইবোন। তাজিম ক্লাস ফোরে পড়ে। আর আফিয়া পড়ে থ্রিতে। ওরা একসঙ্গেই স্কুলে যাওয়া-আসা করে।  প্রায় কাজই তারা একসঙ্গেই করে। এই যেমন, আজকে তাজিমের আব্বু হাটে গেছে; হাট থেকে ভাজা, গজা, ম-া-মিঠাই আনবে। ওরা তা একসাথেই খাবে।

এশার আজানের পরই তাজিমের আব্বু হাট থেকে চলে এসেছে। কিড়িং-কিড়িং বেল বাজার সাথে সাথেই তারা পড়ার টেবিল থেকে ছুটে এসেছে সাইকেলের কাছে। এসেই আগে মিষ্টির টোপলাটা বের করেই পড়ার রুমে চলে গেলো। অল্প করে দুইভাইবোন খেয়েও নিলো। বাকিটা রেখে দিলো, ভাত খেয়েদেয়ে হাতের লেখা শেষ করে শোবার আগে মজা করে খেয়ে ঘুমাবে।

পড়া শেষ করে চলে আসলো ওরা। ওদের রুমে। তাজিম মিষ্টির টোপলাটা খুলছে। আফিয়া পিঁপড়ের সারিকে পা দিয়ে পিষ্ট করছে। এভাবে কিছুক্ষণের মধ্যে সে অনেকগুলো পিঁপড়ে মেরে ফেলল। 

ওরা এর আগে মিষ্টি খাওয়ার সময় তাজিম মিষ্টির গুঁড়ো টেবিলের নিচে ছিটিয়ে দিয়েছিল, যাতে  পিঁপড়েরা এসে খায়। তাজিম পিঁপড়েগুলোকে প্রায়ই এমন খেতে দেয়। সে এগুলোকে পোষে বলে মনে করা যায়। কিন্তু আফিয়া তাদের খাওয়া-দাওয়া নস্যাৎ করে দিলো পায়ে পিষ্ট করে। 

সেটা দেখে তাজিমের খুব রাগ হলো। তাজিম বলল, আজ মিষ্টি  আমি একা একা খাব, তোকে দেবো না। আফিয়া অবাক হয়ে বলল, কী! আমাকে দিবি না। কিন্তু কেন? আমি কি দোষ করেছি?

তাজিম আফিয়াকে বলল, তুই পিঁপড়েগুলোকে খেতে দিলি না কেন? আর তাদেরকে পায়ে পিষ্ট করে করে মারলি কেন? আফিয়া একটু লজ্জা পেলো। বলল, এমনিতেই মারলাম, তাতে কি হয়েছে? তাজিম এবার রাগান্বিত হয়ে বলল, কি হয়েছে মানে! আমাদের যেমন প্রাণ আছে; ওদেরও তেমন আছে। আমরা যেমন শরীরে ব্যথা পাই, ওরাও তেমন পায়। এই যে গাছগাছালি, পশুপাখি এদেরও প্রাণ আছে। বিনা কারণে কোন গাছ কাটা তো যাবেই না; একটি পাতাও তো ছেঁড়া যায় না। কোনো পশু-পাখিকেও আঘাত দিলে তারাও আমাদের মতো খুব কষ্ট পায়।

আফিয়া থাম্ থাম্ বলে নিজের চোখটা মুছে নিলো। তাজিম বুঝতে পেরেছে, সে তার ভুল বুঝতে পেরেছে। তাই আর কিছু না বলে আফিয়াকে মিষ্টি ভাগ করে দিলো অর্ধেক। আর অর্ধেক নিলো নিজে। 

 

 

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ