খোকসায় দখলের দ্বন্দ্বে খেয়াঘাট বন্ধ ॥ জনদুর্ভোগ

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) সংবাদদাতা : কুষ্টিয়ার খোকসায় জেলা পরিষদের বামনপাড়া খেয়াঘাট নিয়ে রেষারেষিতে প্রায় ১২ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ঘাট। এর ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণসহ হাজার হাজার মানুষ। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল আক্তার ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মাছুম মোর্শেদ শান্ত সমর্থিত দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব এর জন্য মূলত দায়ী।
১২ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত খেয়া পারাপারের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। এ ঘটনায় ঘাটের বর্তমান ইজারাদার সাবেক ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে খোকসা থানায় বাবুল আক্তার সমর্থিত বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য ফারুকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের চাঁদট বামনপাড়া খেয়াঘাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খেয়া পারাপার বন্ধ। বাঁশের চরাট ডুবে আছে। যে খেয়া ঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ নদী পার হয়ে বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন কাজের জন্য যাতায়াত করত সেই কোলাহলপূর্ণ ঘাটটিতে বিরাজ করছে সুনশান নীরবতা।
এ বিষয়ে খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজাউল ইসলাম বলেন, এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পারাপার হয়। আগে ফারুক মেম্বার ঘাট চালাত। এ বছর মনিরুল মেম্বার ঘাট ইজারা পাওয়ার পর রাতের আঁধারে আগের ইজারাদারদের লোক হিসেবে পরিচিত এলাহী নামের এক ব্যক্তি নৌকার তলা ছিদ্র করে ডুবিয়ে দেওয়ার সময় ধরা পড়ে। এ ঘটনায় খোকসা থানায় মামলা হয়েছে। মনিরুল মেম্বার কেন ঘাট চালাতে পারছে না, বারবার লাঞ্ছিত হচ্ছে, নৌকা ডুবিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এসব কী কারণে হচ্ছে সেটা তো বোঝায় যাচ্ছে।
ভুক্তভোগী ইজারাদার সাবেক বেতবাড়িয়া ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলাম জানান, বামনপাড়া খেয়া ঘাট গত ১ জুলাই থেকে বুঝে নেওয়ার পর থেকেই আগের ইজারাদার ফারুক নানাভাবে তাকে হয়রানি করছে। রাতে নৌকা ভাঙচুর করার সময় ফারুক ও এলাহী নামের দুজনকে তারা আটক করে থানায় নিয়ে যান। পরে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সুপারিশে তাদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয় পুলিশ এবং থানা থেকে ফিরে এসেই নৌকা ভাঙচুর ও তাকে মারধর করে ফারুখ ও তার দলবল। এ বিষয়ে খোকসা থানায় মামলা হয়েছে।
খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিপন বিশ্বাস জানান, খেয়াঘাট জেলা পরিষদ নিয়ন্ত্রণ করে। বিষয়টি নিয়ে কুষ্টিয়া জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা জনভোগান্তি নিরসনের জন্য বিষয়টি নিয়ে দ্রুত বসব। দায়িত্বশীল রাজনৈতিক নেতা যারা আছেন তাদের মাধ্যমে বসে সমাধান করা হবে।