৭ হাজার গ্রাহকের পাওনা ২৫৮ কোটি টাকা
স্টাফ রিপোর্টার : ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্টে ৩৫ ভাগ ছাড়ের সুযোগ নিতে ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকায় দুটি মোটরসাইকেলের ফরমায়েশ (অর্ডার) দিয়েছিলেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আয়নাল হোসেন। গত বছরের জুনে টাকা দেন তিনি। ৪৫ দিনের মধ্যে মোটরসাইকেল পাওয়ার কথা থাকলেও তা পাওয়া যায়নি। আয়নাল হোসেন বলেন, মোটরসাইকেল না দিয়ে তিন মাস পর আলেশা মার্ট আমাকে ব্যাংকের চেক দিয়েছিল। এক বছরের বেশি সময় ধরে সেই চেক দিয়ে আমি টাকা তুলতে পারিনি। বেশ কয়বার চেষ্টা করেছি, কিন্তু প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে টাকা না থাকায় টাকা তুলতে পারিনি।
গ্রাহকদের দেওয়া চেকের মেয়াদ অধিকাংশেরই শেষ। কিন্তু আলেশা মার্ট চেক রিপ্লেস ও মূল টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি প্রতিষ্ঠানটির সব অফিস, কলসেন্টার দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। শুধু গ্রাহক আয়নাল হোসেনই নয়, এভাবে বিভিন্ন ছাড়ে আলেশা মার্টে মোটরসাইকেল, গাড়িসহ নানা পণ্য অর্ডার করে সেই পণ্য কিংবা টাকা ফেরত পাননি প্রায় সাত হাজার গ্রাহক। গতকাল শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আলেশা মার্টের কাছে পাওনা টাকা ফেরতের দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে আলেশা মার্ট কাস্টমারস অ্যাসোসিয়েশন, আলেশা মার্ট বিক্ষোভ ও আন্দোলন গ্রুপ।
সাংবাদিক সম্মেলনে আলেশা মার্ট কাস্টমারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ৩০০ কোটি টাকার মধ্যে মূল্য পরিশোধের গেটওয়েতে থাকা ৪২ কোটি টাকা গ্রাহকদের পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি ২৫৮ কোটি টাকা পাবেন গ্রাহকেরা। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গ্রাহকদের দেওয়া চেকের মেয়াদ অধিকাংশেরই শেষ। কিন্তু আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান চেক রিপ্লেস ও মূল টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেননি। এমনকি তাদের সব অফিস, কলসেন্টার দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ই-কমার্সে অর্ডারকারী ৯০ভাগ গ্রাহক ছাত্রজনতা। আর আলেশা মার্ট চেয়ারম্যান খুবই সুনিপুণভাবে এসব গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে তাদের কষ্টের টাকাগুলো আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছেন। ৩৩ থেকে ৩৪ বার ফেসবুক লাইভে এসে তিনি শুধু মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সময়ক্ষেপণ করেছেন, কিন্তু গ্রাহকের কোনো লাভ হয়নি। গ্রাহকদের পক্ষ থেকে দাবি-দাওয়া তুলে ধরে সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়, তারা চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম সিদ্দিকীর গ্রেপ্তার চান না। তারা চান, তাকে আইনি নজরদারিতে রেখে তার সব সম্পদ বিক্রি করে তাঁদের দেনা পরিশোধ করে দেওয়া হোক। এ জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।