ভারতীয় সকল পণ্য বর্জন এখন বড় জিহাদ

খুলনা ব্যুরো : আজকের পর থেকে আমরা কোন মুসলমান ভারতীয় কাপড় দিয়ে পাঞ্জাবী তৈরি করবো না, স্ত্রী-কন্যাদের ভারতীয় কাপড়ের থ্রি-পিস করবো। আর এটাই হবে আমাদের জন্য এখন সবচেয়ে বড় জিহাদ। এভাবেই ভারতীয় পণ্য-সামগ্রী ব্যবহার না এবং শাড়ী কিনে দিব না, ভারতীয় কোন টিভি চ্যানেল আমরা দেখবো না। এভাবে আমরা ভারতীয় সকল পণ্য বর্জন করতে অঙ্গীকার করা হয়েছে আলেম-উলামাদের সমাবেশ থেকে।
ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও দিল্লী শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন কুমার জিন্দাল কতৃক রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শানে অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনা নিউমার্কেট সংলগ্ন বায়তুন নূর মসজিদ চত্বরে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ অঙ্গীকার করা হয়।
খুলনা জেলা ইমাম পরিষদের উদ্যোগে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি মাওলানা মো. সালেহ। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন খুলনা জেলা ইমাম পরিষদের সহ-সভাপতি হাফেজ মাওলানা মোস্তাক আহমেদ, অধ্যক্ষ মাওালানা মো. রহমাতুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, যুগ্ন সম্পাদক মাওলানা নাসির উদ্দিন কাসেমী, অধ্যক্ষ মাওলানা এ এফ এম নাজমুস সউদ, হাফেজ মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মোল্লা মেরাজুল হক, মাওলানা শফিকুল ইসলাম, মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, সাইখুল ইসলাম বিন হাসান, মাওলানা হেকতম আলী, মাওলানা নূর সাইদ জালালী, মাওলানা এএসএম জাফর সাদিক, মাওলানা কারামাত আলী, মাওলানা আনোয়ারুল আজম, মাওলানা ইবরাহিম খলিল, শেখ মো. নাসির উদ্দিন প্রমুখ।
তবে, বায়তুন নূর মসজিদ চত্বরে সমাবেশ কর্মসূচি থাকলেও ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের অংশ গ্রহণে তা ফেরিঘাট থেকে জোড়াগেট পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। ফলে নগরীর ময়লাপোতা মোড়, সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল এবং ফেরিঘাট থেকে জোড়াগেট পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সমাবেশ স্বরণকালের সেরা জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভারতের বিজেপি মুখপাত্র নুপুর শর্মা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ কটূক্তি ও চরম মিথ্যাচার করেছে। তাকে কারাগারে পাঠালেও এর শাস্তি হবে না। রাসুলের (সা.) অপমানকারীর শাস্তি হচ্ছে ‘কতল’ করা। এ ধরণের শাস্তি হলে আর কেউ দুঃসাহস দেখাতো না।
বক্তারা ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে সকল ভারতীয় পণ্য আমদানী বন্ধের আহবান জানিয়ে বলেন, মুসলিম ব্যবসায়ীরা ভারতীয় পণ্য আমদানী করবেন না। আর এটাই হচ্ছে ঈমানের দাবি। আর আমরা যদি ভারতীয় পন্য বর্জন করে এখন এই জিহাদ করতে না পারি তাহলে মিছিল-সমাবেশ করে কোন লাভ নেই। নেতৃবৃন্দ ভারতকে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করতে ভারতীয় পণ্য বর্জনের পাশাপাশি জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব পাশ করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।
ডুমুরিয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ : মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.) ও আম্মাজান আয়েশা সিদ্দিকাকে (রা.) নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি দলের দুই নেতার কটুক্তি’র প্রতিবাদে ডুমুরিয়া ইমাম পরিষদের উদ্যোগে বিশাল সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশে মনোয়ারা সুপার মার্কেট চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মোহতামিম মাওলানা মুসতাক আহমেদ। এ সময় বক্তৃতা করেন হজরত মাওলানা আব্দুর রহমান, সাংবাদিক এস এম জাহাঙ্গীর আলম, মুফতি আব্দুল কাইয়ুম জমার্দ্দার, মুফতি আবু সাঈদ আল মাহমুদ, হাফেজ তৌফিকুর রহমান, হজরত মাওলানা ইউসুফ আজাদী, মুফতি আব্দুস সালাম, মাওলানা আব্দুল গফফার, মাওলানা মুজিবুর রহমান, এইচ এম এ রউফ, মাওলানা আজহারুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান গাজী আব্দুল হালিম, মুফতি ফকরুল হাসান, মাওলানা আব্দুর রশিদ, মাওলানা মাহমুদুল আলম, মুফতি ফায়েজুল করিম, মুফতি জাকারিয়া, হাফেজ মোঃ ওহিদুজ্জামান, হাফেজ মাওলানা মামুদুল হাসান, মাওলানা অহিদুজ্জামান, হাফেজ আব্দুর রহিম প্রমুখ। সমাবেশ শেষে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা অংশ গ্রহন করেন এবং সমাবেশের পূর্বে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্লোগান ও মিছিল সহকারে এসে সমাবেশে যোগ দেন।
রূপসায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ : রূপসা উপজেলায় পৃথক পৃথক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার নৈহাটি শহিদ মিনার রোডস্থ বায়তুন নূর জামে মসজিদে তৌহিদী জনতার উদ্যোগে উপজেলা সদর কাজয়িায় এই প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কট এবং বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নিন্দা প্রস্তাব ও প্রতিবাদ জানানোর দাবি জানানো হয়। মিছিল শেষে নূপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দালের কুশপুত্তলিকায় জুতা নিক্ষেপ করে তা আগুনে পোড়ানো হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক। মসজিদের খতিব তৌহিদুল ইসলাম কচির পরিচালনায় সমাবেশে বক্তৃতা করেন মাওলানা মুফতি মাসুম বিল্লাহ, মাওলানা সাইফুল্লাহ কবির, হাফেজ মাওলানা মো. রবিউল ইসলাম, মাওলানা সাইফুল ইসলাম, মাওলানা জাকারিয়া, মো. মাহমুদুর রহমান, মো. হারেজ শেখ, তারেক আহম্মেদ টিপু, বাদশা মিয়া, মো. দিদারুল ইসলাম, মো. রবিউল ইসলাম, মো. শহিদুল্লাহ আল আজাদ শেখ। অপরদিকে একই দিন জুম্মাবাদ উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন কাজদিয়া বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল ও সমাবেশে কয়েক হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ গ্রহণ করেন। মুফতি মো. আহসান উল্লাহর সভাপতিত্বে ও আবুল হোসেন দুয়ারির পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মিছিল পূর্ব সমাবেশে বক্তৃতা করেন ইমরান বিন লুতফার, মাওলানা মনির আহম্মেদ, হাফেজ হেদায়েত উল্লাহ, ইব্রাহিম, আমিরুল ইসলাম, মাওলানা কবির প্রমুখ।