সরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে আরো ৩৪৯৩ কোটি টাকা
স্টাফ রিপোর্টার : সরকারি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণ কমাতে পারছে না। উল্টো গত তিন মাসে সরকারি ছয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের স্থিতি ছিল ৪১ হাজার ৬৮৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
গত মার্চের শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা। এই হিসাবে গত জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে সরকারি ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে তিন হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা। সম্প্রতি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের এ হিসাব প্রাক্কলন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। সূত্র জানায়, খেলাপি ঋণ বাড়লেও আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ‘আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ’র সঙ্গে সম্পাদিতব্য ব্যাংকগুলোর ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি’র (এপিএ) আওতায় খেলাপি ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা চলতি অর্থবছরের তুলনায় শিথিল করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এপিএ’র আওতায় চলতি ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে সরকারি ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের স্থিতি ৩৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকার মধ্যে সীমিত রাখতে বলা হয়েছে। এর বিপরীতে আগামী অর্থবছরের জন্য ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে ৪৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এটি চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় চার হাজার ৭০০ কোটি টাকা কম। অন্যদিকে, শতকরা হিসাবে আগামী অর্থবছর শেষে সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের হার দাঁড়াবে ২৩ শতাংশ। এদিকে, চলতি অর্থবছর শেষে সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের হার ২০ দশমিক ৭ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছে। অতি সম্প্রতি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এপিএ টিমের এক বৈঠকে আগামী অর্থবছরের এপিএ’র এ রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
জানা গেছে, গত ডিসেম্বর শেষে জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা এপিএ’র আওতায় চলতি অর্থবছর শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১২ হাজার কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতি ছিল ৯ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। এপিএ’র আওতায় চলতি অর্থবছর শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
গত ডিসেম্বর শেষে বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতি ছিল সাত হাজার ১২৪ কোটি ৭ লাখ টাকা এপিএ’র আওতায় চলতি অর্থবছর শেষে বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে সাত হাজার কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতি ছিল সাত হাজার কোটি টাকা। এপিএ’র আওতায় চলতি অর্থবছর শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতি ছিল পাঁচ হাজার ৫৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা। এপিএ’র আওতায় চলতি অর্থবছর শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে চার হাজার কোটি টাকা।
গত ডিসেম্বর শেষে বিডিবিএল’র খেলাপি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৬২৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এপিএ’র আওতায় চলতি অর্থবছর শেষে বিডিবিএলের খেলাপি ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৭০০ কোটি টাকা। আর্থিক বিভাগের এক পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা গেছে।