রবিবার ০২ এপ্রিল ২০২৩
Online Edition

রাবি’তে ইন্টারনেট সেবার বেহাল দশা ॥ চরম ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

রাবি রিপোর্টার : আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে শিক্ষার অপরিহার্য ও শক্তিশালী অনুষঙ্গ হচ্ছে ইন্টারনেট। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট সুবিধা প্রদানের উদ্দেশে ওয়াই-ফাই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে বেশ আগে থেকেই। তবে সংযোগ ও দুর্বল ফ্রিকোয়েন্সির কারণে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা থেকে অনেক দিন ধরেই বঞ্চিত বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবন, লাইব্রেরি ভবন, কেন্দ্রীয় মিলনায়তন, একাডেমিক ভবনসহ আবাসিক হলগুলোতে ওয়াইফাই ব্যবস্থার শোচনীয় অবস্থা। দুর্বল ফ্রিকোয়েন্সির কারণে ক্যাম্পাসের সব জায়গায় ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যায় না। বিশেষ করে হল ও একাডেমিক ভবনগুলোতে এই সমস্যা প্রকট। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ইন্টারনেট সংযোগ বাবদ প্রতিবছর একজন অনাবাসিক শিক্ষার্থীকে গুনতে হয় ১৮০ টাকা অন্যদিকে একজন আবাসিক শিক্ষার্থীকে আলাদা করে এককালীন প্রদান করতে হয় ৪০০ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন আবাসিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত ওয়াই-ফাই সুবিধা নিয়ে চরম অসন্তুষ্ট তারা। ওয়াই-ফাই রক্ষণাবেক্ষণের জন্য হলগুলোতে নেই কোনো লোকবল। যার ফলে শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ ভাড়া করা ব্রডব্যান্ড লাইন অথবা মডেমের ওপর নির্ভরশীল। শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. ইসা হক জানান, আমাদের পড়াশোনা ও শিক্ষা সম্পর্কিত কার্যাবলি এখন অনেকটাই অনলাইন কেন্দ্রীক। ইন্টারনেটের এমন গতির কারণে দিনের বেশির ভাগ সময় এর গতি থাকে সর্বোচ্চ ১০০ থেকে ১৫০ কেবিপিএস। যা দিয়ে ইউটিউব বা ফেসবুকের মত অ্যাপসগুলোতেও প্রবেশ করা যায় না। এমন সমস্যার কথা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মাহফুজা আক্তার জানান, ‘হলে নামে মাত্র ওয়াই-ফাই ব্যবস্থা চালু আছে। কিন্তু বাস্তবে এর কোনই মিল নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা প্রায় শেষ পর্যায়ে আমার। তবে আজ পর্যন্ত আমার রুম থেকে ওয়াই-ফাই ব্যবহার করতে পারলাম না। এর আগে আমরা ওয়াশ রুমে গিয়ে ওয়াই-ফাই কানেক্ট করে চালাতাম কিন্তু এখন আর সেই সুযোগটুকুও নেই।”
ইন্টারনেট ব্যবস্থার এই বেহাল দশা স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. বাবুল ইসলাম বলেন, ‘আবাসিক হলগুলোর প্রাধ্যক্ষদের সাথে এই বিষয়ে কথা হয়েছে। তারা উদ্যোগ নিলে আইসিটি সেন্টার থেকে সব ধরনের সহযোগীতার জন্য প্রস্তুত রয়েছি। মূলত ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় এবং ইন্টারনেটের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ওয়াইফাইয়ের স্পিড কিছুটা কম। তবে আমি মনে করি ওয়াইফাই ব্যবস্থার মাধ্যমে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব হবে না।’ স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রতিটি হলে ইন্টারনেট ব্রাউজিং রুম করা যেতে পারে বলে জানান তিনি। এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘যেহেতু করোনাকালীন দীর্ঘ সময় ইন্টারনেটের যাবতীয় যন্ত্রাংশ অব্যবহৃত ছিল তাই এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া আমাদের লোকবলেরও সংকট রয়েছে। আর এখন হুট করেই নতুন টেকনিশিয়ান নিয়োগ দেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। তবে এ নিয়ে আমরা ইতোমধ্যে উপাচার্য মহোদয়ের সাথে আলাপ করেছি এবং অতি শীঘ্রই এই সমস্যা সমাধানে জন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ