শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

সখীপুরে টুং-টাং শব্দে মুখরিত হচ্ছে কামার পাড়া

জাকির হোসেন, সখীপুর (টাঙ্গাইল)ঃ সখীপুর উপজেলায় রয়েছে কামার পাড়া বাজার। তার পথ ধরে হাঁটতেই কানে আসছিল টুং-টাং আওয়াজ। কামারশালার দূরত্ব যতই কমছিল আওয়াজ ততই স্পষ্ট হচ্ছিল। তবে কাছে না গিয়েই বোঝা যাচ্ছিল সেখানে বিশাল কর্মজজ্ঞ চলছে। শেষ পর্যন্ত দেখাও গেলো তাই। সামনাসামনি বসে সমানতালে তাঁতালো লোহা পেটাচ্ছেন দুজন। একজনের হাতে রয়েছে হাতুর অপরজনের হ্যামার। কালের বিবর্তনে হাতে টানা হপার আর নেই। তার পরির্বতে হয়েছে মোটর দিয়ে তৈরি করা বিশেষ মেশিন। কামাররা তার নাম দিয়েছেন ‘বুলার’। একটি মোটা পাইপের মধ্যে দিয়ে বিরামহীনভাবে বাতাস ঢুকছে কয়লার অগ্নিকুন্ডে। আর সেখানে পুড়িয়ে লাল করা হচ্ছে মোটা মোটা লোহার পাত। সেখান থেকে টিনের চিমনি বেয়ে কালো ধোঁয়া বেরিয়ে যাচ্ছে বাইরে। লোহা পুড়ে লাল হতেই সাঁড়াশি দিয়ে ধরে তোলা হচ্ছে রেললাইনের কাটা খন্ডের ওপর। এর পর পরই শুরু হচ্ছে হাতুরি আর হ্যামারের বর্ষণ। চোখের পলক ফেলতেই লোহার পাতটি ধারালো চাপাতি হয়ে যাচ্ছে। হাতুরের বাড়ি আর হাতের জাদুতে আগুনে পোড়া লালাভ কাঁচা লৌহখন্ড ছুরি-চাকু বা ধারালো বটির আকার নিচ্ছে। ব্যস্ততা বেড়েছে সখীপুর উপজেলার কামার পাড়ার কামার শিল্পীদের। অনেকক্ষণ পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেও তা বেমালুম ভুলে যান কামারশিল্পী মো. জাফর মিয়া। যেন হাতের কাজ ফেলে কথা বলার কোনো ফুরসতই নেই তার। বর্তমানে চাপাতি সাড়ে ৬শ’ টাকা কেজি, ছুরি ৪শ’ টাকা কেজি এবং বটি সাড়ে ৩শ’ টাকা কেজি হিসাবে বিক্রি করছেন তারা। চাহিদা থাকায় ক্রেতাদের জন্য নিত্যনতুন হাতিয়ার তৈরি করছেন। আর আকার ভেদে ১শ’ থেকে ৫শ’ টাকার মধ্যেও কোরবানির জন্য বিভিন্ন হাতিয়ার তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বড় ছুরি ৪০, চাপাতি ৬০, দা ৫০ এবং ছোট ছুরি ২০ টাকায় শান দিচ্ছেন তারা। সখীপুর উপজেলার কর্মকার জালাল বলেন, দেশে করোনা আসার আগে কোরবানির ঈদে এক মাস পরিশ্রম করে প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো রোজগার করেছি। সেই আশায় গত বছর ২ শতাধিক ছুরি-চাপাতি তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু করোনার কারণে চাহিদা না থাকায় এবার ১ শতাধিক ছুরি-চাপাতি তৈরি করা হয়েছে বাইরের পাইকার না আসায় এবার বিক্রির সংখ্যা কম।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ