মঙ্গলবার ২১ মার্চ ২০২৩
Online Edition

শুধু পরীক্ষার জন্য নয়- শিক্ষার্থীদেরকে জীবন গড়ার সার্বিক প্রস্তুতি নিতে হবে -প্রফেসর কোরবান আলী

গতকাল শনিবার নিজস্ব মিলনায়তনে তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা টঙ্গীর বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিতরণ করেন তামিরুল মিল্লাত ট্রাস্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কোরবান আলী -সংগ্রাম

তা’মীরুল মিল্লাত ট্রাস্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কোরবান আলী বলেছেন, শুধু পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য নয়; বরং পরিবার, সামাজ, দেশ তথা পৃথিবীর সর্বত্র জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেয়ার জন্য ছাত্রদেরকে জীবন গড়ার সার্বিক প্রস্তুতি নিতে হবে। শুধু মাদ্রাসায় নয়; বরং গুনে-মানে সর্বত্র সেরা হতে হবে। এই প্রতিযোগিতা সর্বত্রই বজায় রাখতে হবে। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর সর্বত্র আমরা ফার্স্ট হবো এমন লক্ষ্য নিয়ে এগুতে হবে। তিনি তা’মীরুল মিল্লাত মাদ্রাসার ছাত্রদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, যে কোন ভাল কাজ; বিশেষ করে অর্থনৈতিক কাজে প্রতিযোগিতা করতে হবে। গ্লোবাল কমপিটিশনে তোমরা অবদান রাখবে। পৃথিবীর যে কোন স্থানে কমপিটিশনে ফাস্ট, সেকেন্ড, থার্ড হতে হবে। দেশকে আলোকিত করবে; পৃথিবীকে আলোকিত করবে মাদরাসার ছাত্ররা।
গতকাল শনিবার টঙ্গী তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তা’মীরুল মিল্লাত ট্রাস্টের সেক্রেটারি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবেদীন। মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মো. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সহকারী অধ্যাপক মাওলানা সাঈদুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকার মীর হাজীরবাগ তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. মাওলানা মো. আবু ইউসুফ খান, তা’মীরুল মিল্লাত ট্রাস্টের মোতওয়াল্লী মাওলানা সাব্বির আহমেদ, ছাত্র প্রতিনিধি মো. খায়রুল আনাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে কুরআন থেকে তিলাওয়াত করেন মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র মুহাম্মদ আদনান। এ সময় মাদ্রাসার সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা শফিক উল্লাহ আল-মাদানীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও ছাত্ররা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কোরবান আলী আরো বলেন, আমাদের মাদরাসার মূল লক্ষ্য হলো ছাত্ররা এখানে শিক্ষিত হয়ে কুরআস-হাদীসের আলোকে জীবন গড়বে। তা’মীরুল মিল্লাত মাদরাসা বাংলাদেশের মাদরাসাগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ মাদরাসা। এর তিনটি শাখা রয়েছে। তার মধ্যে গাজীপুরের এই শাখায় ছাত্র সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আমরা এই মাদ্রাসা নিয়ে গর্ব করি। মাদরাসাটি আরো উন্নত ও ভাল করুক আমরা এই প্রত্যাশা করি। তিনি বলেন, যখন নির্ধারিত কারিকুলামে পাঠদান কার্যক্রম চলে তখন ছাত্র-শিক্ষকরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এতে তাদের মধ্যে একগুয়েমি চলে আসতে থাকে। ফলে কারিকুলাম ছাড়াও আমরা কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকি। যাতে তাদের মধ্য থেকে একগুয়েমি ভাব দূর হয়ে যায়। তিনি বলেন, আমরা একাডেমিক কার্যক্রম দেখে সাফল্য পরিমাপ করে থাকি। তাতে এই মাদরাসা শ্রেষ্ঠ। রেজাল্টের দিক থেকে প্রায় প্রতিবারই বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠস্থান দখল করে এই মাদরাসা।
অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মাদ যাইনুল আবেদীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লাগাতার বন্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ৯ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। ৭১ সালের পরীক্ষা ৭২ সালে হয়েছিল। যারা ৭২ সালে পরীক্ষা দিয়েছিল তাদেরকে লেখা-পড়া ছাড়া পাস বলে অবহেলা করা হতো। তাদের ভাল কোন চাকরি হতো না। এবারের ২০ সালের অবস্থাও এমন হয় কিনা ভয় হয়। কিন্তু লেখা-পড়া ছাড়া কেউ পাস করুক আমরা তা চাই না। তাই আমরা অনলাইনে ক্লাশ চালু রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। কিন্তু অনলাইনেরও ক্ষতিকর দিক রয়েছে। তিনি বলেন, অনলাইনে ক্লাশে অংশ নেয়ার সুযোগে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিকর দিক নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। এতে নৈতিকতার অবক্ষয় নিয়ে আমরা চিন্তিত। তিনি ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন, নৈতিকতার অবক্ষয় যাদের হয়েছে তাদের দিয়ে দুনিয়ার ভাল কোন কাজ হয় নাই, হবেও না। নৈতিকতাসম্পন্ন মানুষ যুগ যুগ ধরে মর্যাদা পেয়ে আসছে। অন্ত:দৃষ্টি দিয়ে তারা অনেক দূর পর্যন্ত দেখতে পারে। তারা অন্যায় কাজে জড়িত হয় না।
অনুষ্ঠান শেষে করোনায় আক্রান্ত স্থানীয় সংসদ সদস্য, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও তাঁর সহধর্মিনীর আশু রোগমুক্তি কামনা ও মাওলানা গোলাম সরওয়ার সাঈদীর রূহের মাগফিরাতের জন্য মোনাজাত পরিচালনা করেন অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ