মঙ্গলবার ২১ মার্চ ২০২৩
Online Edition

আল্লামা গোলাম সারোয়ার সাঈদী আর নেই

গতকাল বাদ আছর আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের মাঠ চত্বরে আল্লামা গোলাম সারোয়ার সাঈদীর জানাযা অনুষ্ঠিত হয় । ইনসেটে আল্লামা গোলাম সারোয়ার সাঈদী -সংগ্রাম

মুহাম্মদ নূরে আলম : মহান রবের ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেলেন প্রখ্যাত মুফাসসির, গবেষক, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার আড়াইবাড়ী কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ও আড়াইবাড়ী দরবার শরিফের পীর আল্লামা গোলাম সারোয়ার সাঈদী। গতকাল শনিবার ভোরে ৪টা ২০ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় আল্লামা গোলাম সারোয়ার সাঈদী ইন্তিকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি ও ইন্না ইলাইহি রাজিউন। বাদ আছর আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের মাঠ চত্বরে জানাযা শেষে প্রখ্যাত এই আলেমকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। মানুষের ঢল নামে নামাজে জানাযায়। দূর দূরান্ত থেকে দলমত নির্বিশেষ সর্বসাধারণ ছুটে আসেন এই আলেমকে একনজর দেখার জন্য। মাঠে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় মসজিদ, পাশের ফসলের মাঠ, মাদরাসার প্রতিটি কক্ষ, ছাদ ও রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে মানুষ জানাযায় অংশ নেন।  
তিনি দীর্ঘ দিন ধরে ফুসফুস ও ডায়াবেটিকস রোগে বোগছিলেন। এরই মধ্যে আবার করোনায় আক্রান্ত হন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ ১৬ দিন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে (সাবেক অ্যাপোলো হাসপাতাল) নীবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন আল্লামা গোলাম সারোয়ার সাঈদী। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও চারপুত্র সন্তান রেখে গেছেন।  
বাদ আসর জানাযা হলেও যোহরের আগে থেকেই কানায় কানায় ভরে যায় মাদরাসা ময়দান। জানাযায় ইমামতি করেন মরহুমের বড় ছেলে হাফেজ আব্দুস সোবহান। জানাযা শেষে আড়াইবাড়ি মাদরাসা সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে গোলাম সারোয়ার সাঈদীকে দাফন করা হয়। জানাযায় অংশ নেন দেশবরেণ্য ওলামা, পীর মাশায়েখ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রেণী-পেশার মানুষ। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় মরহুমের লাশ ঢাকা থেকে কসবা আড়াইবাড়ী পৌঁছে। এসময় লাশবাহী গাড়ি মরহুমের প্রিয় ক্যাম্পাস মাদরাসা মাঠে রাখা হয়। এক নজর দেখতে ভিড় জমায় হাজার হাজার ভক্ত ও মুসল্লিরা। এসময় শোকাহত তাওহীদী জনতার আল্লাহু আকবর ধ্বনি ও কান্নায় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
এ সময় মরহুমের নামাজে জানাযায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা আলেম, শিক্ষার্থী ও শুভাকাক্সক্ষীরা উপস্থিত ছিলেন। নামাজে জানাযার পূর্বে অনলাইনেযুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন আইন মন্ত্রী আনিসুল হক। নামাজে জানাযার পূর্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান, প্রখ্যাত আলেমে দীন আল্লামা কামালুদ্দিন জাফরী প্রমুখ। নামাজে জানাযায় অংশ নেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, এডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন, শ্রমিকনেতা আব্দুস সালাম, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে শামীম সাঈদী, সোনাকান্দার পীর মাওলানা মাহমুদুল হাসান, নাগাইশের পীর মাওলানা মোস্তাক ফয়েজী, কুমিল্লা মহানগরী আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, বি-বাড়ীয়া জেলা আমীর গোলাম ফারুক,  সেক্রেটারি মোবারক হোসাইন, জেলা শিবির সভাপতি হাফেজ নুরুল আমিন, মরহুম গোলাম সারওয়ারের বড় ভাই গোলাম কবির সাঈদী, ছোট ভাই গোলাম খাবির সাঈদী, কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাউছার জীবন, ভাইস চেয়ারম্যান মনির হোসেন, কসবা পৌর মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েলসহ বিশিষ্ট আলেমরা জানাযায় অংশ নেন। এ সময় শেষবারের মতো একবার দেখতে লাখো মানুষের ঢল নামে আড়াইবাড়ী মাদ্রাসা এলাকায়। লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় আড়াইবাড়ী মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বেশকিছু দিন ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে (অ্যাপোলো) লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। মাওলানা গোলাম সারোয়ার সাঈদী ছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমে দীন, তিনি সুবক্তা ও ওয়ায়েজ ছিলেন। গত কয়েক বছরে ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের উপর তার আলোচনা ইউটিউবে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। উল্লেখ্য: আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা হযরত মাওলানা আবু সাঈদ আসগর আহমাদ আল-কাদেরী (র.) -এর নাতি, গোলাম সারোয়ার সাঈদী আড়াইবাড়ীর মরহুম পীর আল্লামা গোলাম হাক্কানীর (রহ.) সাহেবজাদা, আল্লামা কামালুদ্দিন জাফরীর পৌত্রা ও ড. মিজানুর রহমান আজহারীর নানা। তিনি ছিলেন আরো অনেক আলেমের আত্মীয়।
গোলাম সরওয়ার সাঈদীর পরিচয়: গোলাম সরওয়ার সাঈদী ছিলেন একজন পীরজাদা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের প্রয়াত পীর সাহেব আল্লামা হযরত মাওলানা শাহ মুহাম্মদ গোলাম হাক্কানীর (রহ.)-এর সুযোগ্য সন্তান তিনি। এছাড়া আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা হযরত মাওলানা আবু সাঈদ আসগর আহমাদ আল-কাদেরী (র.) -এর নাতি তিনি। গোলাম সরোয়ার সাঈদীর প্রপিতামহ ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার নারুই গ্রামের হযরত মাওলানা মুকসুদ আলী (র.)।  তিনি দেশবরেণ্য আলেম ছিলেন। গোলাম সরোয়ার সাঈদীর দাদা মাওলানা আবু সাঈদ আসগর আহমাদ ১৯৩৭ সালে কসবা উপজেলার পৌর সদরের আড়াইবাড়ী আলিয়া মাদরাসা ও একটি সমৃদ্ধ পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেন।  পরবর্তীতে তার ছেলে মাওলানা মুহাম্মদ গোলাম হাক্কানী এর হাল ধরেন।  তারপর মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার সাঈদী ২০০৪ সালে মাদরাসাকে কামিল মানে উন্নীত করেন।
পাশাপাশি গড়ে তোলেন আড়াইবাড়ী ইসলামিয়া ছায়েদীয়া এতিমখানা, লিল্লাহ বোর্ডিং, আড়াইবাড়ী হাক্কানীয়া হাফেজী মাদরাসা, আড়াইবাড়ী সাইয়েদা সুরাইয়া নূরানী মাদরাসা, ইসলামী বুক ক্লাব।  বর্তমানে ইবতেদায়ী, জুনিয়র, দাখিল, আলিম ও ফাযিল কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে সেখানে। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই মাদরাসাটি এলাকায় শিক্ষা বিস্তার, অনৈসলামিক কার্যকলাপ রোধসহ বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছে। দায়িত্ব নিয়ে মাদরাসার পাঠাগারকে মূল্যবান ও দুষ্প্রাপ্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ বইয়ে সমৃদ্ধ করেন মাওলানা মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার সাঈদী। তিনি দেশ-বিদেশে বিভিন্ন সেমিনার সিম্পোজিয়ামে অংশ গ্রহণের মাধ্যমে অর্জিত অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের মাঝে তা বিলিয়ে দেন।
মাওলানা শাহ মুহাম্মদ গোলাম হাক্কানীর তৃতীয় ছেলে মাওলানা মো. গোলাম সারোয়ার সাঈদী। তার পাঁচ ছেলে ও চার কন্যার মধ্যে সাঈদীই সবচেয়ে বেশি পরিচিত। অন্যরা ব্যবসা ও চাকরিতে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ে তুললেও মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার সাঈদী পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করে গেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা  পড়াশোনা করা মাওলানা মো. গোলাম সারোয়ার সাঈদী বিগত কয়েক বছরে ইউটিউব চ্যানেলে ইসলাম বিষয়ক নানা বিষয়ে বয়ান করতেন।  এসব বয়ান  তাকে বিশেষ পরিচিতি এনে দিয়েছে। যে কারণে তরুণদের মধ্যে ব্যাপক আকর্ষণ রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষার্থীর। তার ইন্তেকালে কসবা আড়াইবাড়ী এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
কর্মজীবনে আল্লামা গোলাম সারোয়ার সাঈদী: আল্লামা গোলাম সারোয়ার সাঈদী কর্তৃক পরিচালিত আড়াইবাড়ি ইসলামিয়া সাঈদীয়া কামিল মাদরাসাটি এলাকায় শিক্ষা বিস্তার, অনৈসলামিক কার্যকলাপ রোধসহ বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তাঁর দক্ষ পরিচালনায় মাদ্রাসাটি ২০০৪ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গৌরব অর্জন করে। ফলে বাংলাদেরশর তৎকালীন মহামান্য রাষ্ট্রপতি ড. ইয়াজ উদ্দিন আহমেদ কর্তৃক ক্রেস্ট ও সনদপত্র লাভ করে। মানুষের নৈতিক মান উন্নয়নে আল্লামা গোলাম সারওয়ার সাঈদী তার বাবা ও দাদার রেখে যাওয়া কার্যক্রম দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক, অর্ধবার্ষিকী ও বাৎসরিক সব দাওয়াতি কার্যক্রম সুনিপুনভাবে পরিচালনা করে আসছিলেন। তার দক্ষ পরিচালনা থেকে বাদ যায়নি আধুনিক বিজ্ঞান, কম্পিউটার ল্যাব এবং তথ্যপ্রযুক্তির সুশিক্ষা।
আল্লামা গোলাম সারওয়ার সাঈদী নিজেও তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ওয়াজ-নসিহতে ব্যাপকভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি তাঁর প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরও বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত কম্পিউটার ও বিজ্ঞান মেলায় অংশ গ্রহণ, সাহিত্য সাময়িকী ও দেয়ালিকা প্রকাশ, ডিবেডিং ক্লাশ, লাইব্রেরী ওয়ার্ক, পত্র-পত্রিকা পাঠ, ইসলামি সাহিত্য ও গল্প-কবিতার পুস্তক অধ্যয়ন, কুইজ প্রতিযোগিতা, স্বাস্থ্য সচেতনতা গড়ে তুলতে ব্যাপক ব্যবস্থা রেখেছিলেন। আল্লামা গোলাম সারওয়ার সাঈদী ৫ ভাই ও চার বোনের মধ্যে তৃতীয় ছিলেন। তিনি আড়াইবাড়ি দরবারের বর্তমান দায়িত্বশীল এবং আড়াইবাড়ি কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছিলেন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী আল্লামা গোলাম সাওয়ার সাঈদী মৃত্যুকালে স্ত্রী ও ৪ ছেলেসহ দেশ-বিদেশে অসংখ্য ছাত্র, গুনগ্রাহী ভক্ত-আশেকান রেখে মহান রবের ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেছেন ওপারের সুন্দর ভুবনে। আল্লাহ তাআলা আল্লামা গোলাম সারওয়ার সাঈদীকে জান্নাতের সুমহান মাকাম দান করুন। আমিন।
আইন মন্ত্রীর আনিসুল হক শোক: আল্লামা গোলাম সারওয়ার সাঈদী মৃত্যুতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া ধর্মীয় সংগঠন, রাজনৈতিক দলগুলো তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। শোকবার্তায় আইনমন্ত্রী বলেছেন, মাওলানা গোলাম সারোয়ার সাঈদী সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। তার মৃত্যুতে কসবাবাসী একজন ভালো মানুষকে হারালো, যে ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়। আমি তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের শোক: আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের পীর আল্লামা গোলাম সারোয়ার সাঈদীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন। মরহুম সরোয়ার সাঈদীর বিশেষ অবদানের কথা স্মরণ করে গতকাল শনিবার এক যৌথ শোকবার্তায় তারা এ শোক প্রকাশ করেন।
যৌথ শোকবার্তায় বলেন, উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন, আড়াইবাড়ী কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ও আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের পীর আল্লামা গোলাম সারোয়ার সাঈদীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান।
তারা বলেন, মাওলানা গোলাম সারোয়ার সাঈদী দেশের একজন স্বনামধন্য আলেমে দ্বীন ছিলেন। এই মহান আলেমে দ্বীন  নিজের মেধা, যোগ্যতা, প্রজ্ঞা,আকর্ষণীয় বাচনভঙ্গি ও বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনার মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মাঝে ব্যাপক প্রভাব তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন।  তিনি ছিলেন সদা হাস্যোজ্জ্বল এক দায়ী-ইলাল্লাহ এবং ইসলামী জীবন আদর্শ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের এক অকুতোভয় সৈনিক। তিনি তার কর্মের মাধ্যমে আমাদের মাঝে জাগরুক থাকবেন শতাব্দী থেকে শতাব্দীকাল। মুসলিম উম্মাহর জন্য তিনি হয়ে থাকবেন প্রেরণার বাতিঘর। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ইসলাম ও মানবতার খেদমতে তিনি যে ভূমিকা রেখেছেন এ শূন্যতা সহজে পূরণ হবার নয়। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাকে জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করুন। তার পরিবারকে ধৈর্য্য ধারণের তৌফিক দিন। তার পরিবার যেন এ শোক কাটিয়ে উঠতে পারেন সেজন্য মহান রাব্বুল আলামীনের নিকট দোআ করছি।
মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী ফেসবুকে স্ট্যাটাস: তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে মিজানুর রহমান আজহারী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রিয় নানাভাই অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার সাঈদি (পীরসাহেব আড়াইবাড়ী দরবার)‏ আল্লাহর জিম্মায়। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আল্লাহ তায়ালা তাঁর দ্বীনের একনিষ্ঠ এই খাদেমকে কবুল করুন এবং জান্নাতুল ফিরদাউসের মেহমান বানিয়ে নিন। আমিন।
মিজানুর রহমান আজহারী আরও বলেন, একই মঞ্চে নানা নাতিকে আর হয়তো কোনদিন একসাথে দেখা যাবে না। বিদায় নানা ভাই। আমরাও আসছি, পরের কোন এক ফ্লাইটে। ইনশাআল্লাহ দেখা হবে আল্লাহর জান্নাতে। এভাবেই প্রিয়জনদের বিদায়গুলো আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় চিরসত্যকে, আর এই বলে স্মরণ করিয়ে দিয়ে যায় প্রস্তুত তো?
উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমে দীন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার আড়াইবাড়ী কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ও আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের পীরজাদা গোলাম সারোয়ার সাঈদী (৫২) মারা গেছেন কসবা আড়াইবাড়ী আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ, আলোচিত ইসলামী বক্তা গোলাম সারোয়ার সাঈদীর জানাজায় লাখো মানুষের ঢল নেমেছে।  দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আলেমগন তার জানাজায় শরিক হতে ছুটে আসেন। দীর্ঘ ১৬ দিন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে (সাবেক অ্যাপোলো হাসপাতাল) নীবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন থেকে অবশেষে চলেন গেলেন সুপরিচিত ধর্মীয়বক্তা অধ্যক্ষ গোলাম সারোয়ার সাঈদী। গতকাল শনিবার ভোরে ৪টা ২০ মিনিটে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মরহুমের ভাতিজা আড়াইবাড়ি দরবার কুমিল্লার পীর গোলাম পরোয়ার সাঈদী তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। গোলাম সারোয়ার সাঈদীর মৃত্যুতে সমবেদনা জানান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা ও আখাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ভিডিও কনফারেন্সও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমপি মরহুমের প্রতি শোক ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে। একই সাথে শোকসহ সমবেদনা প্রকাশ করেন-উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন, আড়াইবাড়ী কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ও আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের পীর আল্লামা  গোলাম সারোয়ার সাঈদী এর ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, কসবা পৌর মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল,উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো: মনির হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক কাজী আজহারুল ইসলাম, কসবা উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি খ.ম.হারুনুর রশীদ ঢালী প্রমুখ। এদিকে এই আলেমের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্রমহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের পীর আল্লামা গোলাম সারোয়ার সাঈদীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ