যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী নির্যাতন মামলায় রংপুরে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে
রংপুর অফিস : যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতন এবং পরকীয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংক রংপুর কার্যালয়ের কর্মকর্তা মামুনুর রহমান মামুনকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে রংপুর নগরীর ধাপ কাকলী লেনের মৃত লুৎফর রহমানের পুত্র বাংলাদেশ ব্যাংক রংপুর কার্যালয়ের কর্মকর্তা মামুনুর রহমান মামুনের সাথে ১১ বছর আগে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার পান্থপাড়া গ্রামের মনসুর আলী মন্ডলের কন্যা রুপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মাফরুহা আখতারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামীর বাবার বাড়ি রংপুর নগরীর ধাপ কাকলী লেনের বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। ১১ বছর সংসার জীবনে ৭ বছর পর তাদের এক কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। তার বর্তমান বয়স ৪ বছর। মামলার বাদিনী অভিযোগ করেন তার স্বামী ঠুনকো ঘটনায় তাকে মারধর করতো। এক পর্যায়ে তার স্বামী বাংলাদেশ ব্যাংক রংপুর কার্যালয়ের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার স্ত্রীর সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিসহ ভাইরাল হলে ব্যাংকে তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে মামুন প্রায়ই তাকে মারধর করতো। অবশেষে পরকীয়ার বিৃষয়টি জানাজানি হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে মামুন ওয়াদা করে সে আর পরকীয়ায় লিপ্ত হবে না এবং স্ত্রীকে নির্যাতন করবে না। তবে ঐ নারীর সাথে পরকীয়া চালিয়ে যায়। এ সব ঘটনার ছবি এবং তাদের মোবাইলে দেয়া শত শত ম্যাসেজ ও অডিও প্রকাশ পেলে ঘটনার প্রতিবাদ করলে আসামী মামুন আবারো তাকে অমানুষিক নির্যাতন করে। শুধু তাই নয় ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে ওই টাকা তাদের বাসার তৃতীয় তলা নির্মাণ করা হবে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি করায় গত ২১ মে তারিখে তাকে বেদম মারধর এবং গলা টিপে হত্যার চেষ্টা করে গভীর রাতে ৪ বছরের কন্যা সন্তানসহ বাসা থেকে বের করে দেয়।
গুড়ুতর অসুস্থ অবস্থায় গোবিন্দগঞ্জে বাবার বাসায় এসে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে গত ১ জুলাই তারিখে রংপুর মেট্রোপলিটান পুলিশের কোতয়ালী থানায় মাফরুহা আখতার বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করে। মামলা নম্বর ৩, তারিখ ১-৭-২০। মামলার পর বাদীকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে আসামী মামুন। ফলে জীবনের নিরাপত্তাহীনতার আশংকায় রুপালী ব্যাংক রংপুর সেন্ট্রাল রোড শাখা থেকে বগুড়া শাখায় বদলী নিয়ে যান। এদিকে এ ঘটনার দায়ের করা মামলায় গত ২৭ অক্টোবর মঙ্গলবার রংপুরের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শওকত আলীর আদালতে আসামী মামুনুর রহমান হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী পিপি আব্দুল মালেক এ্যাডভোকেট ও রইছ উদ্দিন বাদশা এ্যাডভোকেট জানান আসামী তার স্ত্রীর প্রতি যে অমানুষিক নির্যাতন করেছে তার ভিডিও চিত্র সে নিজেই ধারণ করে রেখেছে তার পরকীয়ায় লিপ্ত হওয়া প্রেমিকাকে দেখানোর জন্য। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল ছবি প্রেমিকার কাছে দেয়া শত শত ম্যাসেজ ও অন্যান্য কাগজ পত্র প্রমাণ করে আসামী একজন নারী নির্যাতনকারী।