রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক আদালতে মিসর ও জাপানের দৃঢ় সমর্থন চাইলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার : রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাপানের দৃঢ় সমর্থন চাইলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। এই অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্যই রোহিঙ্গাদের নিজভূমিতে ফেরানোর ওপর জোর দেন তিনি। এদিকে ওআইসির নেতৃস্থানীয় দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা বিষয়ে গাম্বিয়াকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে মিশরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। মিশরের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ওয়ালিদ আহমেদ সামসেলদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ আহ্বান জানান।
গতকাল রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকির সঙ্গে এক বৈঠকে ড. মোমেন রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাপানের দৃঢ় সমর্থন নিয়ে আলোচনা করেন।
জাপানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করেন। নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার ও গাজীপুরের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জাপানি বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে জাপানের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। বৈঠকে জাপানি রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি সম্প্রতি মিয়ানমারে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের কথা উল্লেখ করে জানান, সেসময় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তার সরকার এ বিষয়ে চাপ অব্যাহত রাখবে বলেও তিনি আশ্বস্ত করেন।
বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে মিশরের সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে সেদেশের রাষ্ট্রদূত নিশ্চিত করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশ ও মিশরের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সহযোগিতা বাড়ানো এবং এক্ষেত্রে দু’দেশের সম্ভাবনা কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন ড. মোমেন। তিনি মিশরকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ বাংলাদেশিদের মিশর কাজে লাগাতে পারবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
ড. মোমেন বাংলাদেশে পেট্রো-কেমিক্যাল শিল্প স্থাপনের অনুরোধ করেন। এ বিষয়ে মিশর আগ্রহী বলে রাষ্ট্রদূত জানান। এসময় মিশরের রাষ্ট্রদূত বলেন, সেদেশের আলেকজান্দ্রিয়া অথনৈতিক অঞ্চলে বাংলাদেশের দু’জন বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করেছেন। মিশরের পেঁয়াজ বাংলাদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে বলেও ওয়ালিদ আহমেদ সামসেলদিন উল্লেখ করেন।
এসময় দু’দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সফর বিনিময়ের উপরও গুরুত্বারোপ করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে মিশর সফর করেছিলেন উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভ্রাতৃপ্রতিম দু’দেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। মিশরে অনেক বাংলাদেশি ছাত্রের লেখাপড়ার সুযোগ আছে। ঢাকায় আগামী ডি-৮ সম্মেলনে মিশরের রাষ্ট্রপতি অংশ নেবেন বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।