সিলেটে সেই ফাঁড়ির সামনে অনশনে রায়হানের মা

সিলেট ব্যুরো : ছেলে রায়হান আহমদের হত্যার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে আমরণ অনশনে নেমেছেন মা সালমা বেগম। গতকাল রোববার সকাল ১১ টা থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিনি বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে অনশনে বসেন। অনশনস্থলে তারা বিভিন্ন ধরনের ফেস্টুন প্রদর্শন করেন। অনশনরত রায়হানের পরিবারের সদস্যদের মাথায় এ সময় কাফনের কাপড় (সাদা কাপড়) বাধা রয়েছে।
অনশনরত অবস্থায় রায়হানের মা সালমা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলেকে এই ফাঁড়িতে নির্মমভাবে নির্যাতন করে মারা হয়েছে। এ ফাঁড়িতেই আমার ছেলের প্রাণ গেছে। আমিও আজ এ ফাঁড়িতে এসেছি। আমাকেও এখানে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হোক।’
তিনি বলেন, ‘রায়হান নিহতের ঘটনায় বরখাস্তকৃত সকল পুলিশ সদস্যই তো পুলিশের জিম্মায় আছেন। তাদের কেন এক সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? দুইজন দুইজন করে আটক করে করে কি বছরের পর বছর চলে যাবে? এ জীবনে কি আমি আর আমার ছেলে হত্যার বিচার দেখে যেতে পারবো না? তাছাড়া ছেলে হত্যার ১৪ দিন পেরিয়ে গেলেও কেন ঘটনার মূল হোতা এসআই আকবরকে গ্রেপ্তার করছে না পুলিশ?’
উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে নগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে রায়হান আহমদকে গুরুতর আহত অবস্থায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহী। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান রায়হান। প্রথমে পুলিশ ফাঁড়ির পক্ষ থেকে ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হয়। পরে রায়হানের পরিবার পুলিশি নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে বলে পাল্টা দাবি তুলে। এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী হত্যা ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর এ ঘটনায় বন্দর বাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিন জনকে প্রত্যাহার করা হয়। মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাশ ও হারুনুর রশিদকে গ্রেপ্তার করে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে। এদিকে, টিটুর ৫ দিনের রিমান্ড গতকাল শেষ হলে ফের তিনদিনের রিমাণ্ডে নেয়া হয়।