একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লংঘনের অভিযোগ আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার
১৭ অক্টোবর, রয়টার্স : রাশিয়ার মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি লংঘন করার জন্য একে অপরের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলছে সাবেক দুই সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান।
নাগোরনো-কারাবাখকে কেন্দ্র করে এ দুই দেশের মধ্যে ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরু হয়। গত সপ্তাহে মস্কোর মধ্যস্থতায় দেশদুটি একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার কথা জানালেও কয়েকদিন ধরেই পরষ্পরের বিরুদ্ধে নতুন করে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ করে আসছে।
আর্মেনিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় গানজা শহরে ১৩ বেসামরিক নিহত ও ৪০ জনের বেশি আহত হয়েছে বলে গতকাল শনিবার আজারবাইজান অভিযোগ করেছে। অন্যদিকে আজারবাইজানের বিরুদ্ধে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় গোলাবর্ষণ অব্যাহত রাখার অভিযোগ করেছে আর্মেনিয়া।
দুই দেশের এই সংঘাতকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চল তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে অস্থিতিশীল সময় পার করছে।
বিতর্কিত অঞ্চল নাগোরনো-কারাবাখকে কেন্দ্র করে গত শতকের ৯০ এর দশকের পর এই প্রথম দুই সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের মধ্যে এমন সংঘর্ষ দেখা যাচ্ছে।
নাগোরনো-কারাবাখকে আজারবাইজান নিজেদের বলে দাবি করলেও অঞ্চলটি এখন আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠীর লোকজনের নিয়ন্ত্রণে; আর্মেনিয়াও তাদের সমর্থন দিচ্ছে।
১৯৮৮-৯৪ সাল পর্যন্ত এ অঞ্চলকে ঘিরে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ চললেও পরে একটি যুদ্ধবিরতি হয়। আর্মেনিয়াতে রাশিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটি আছে। আজারবাইজানের সঙ্গেও মস্কোর সম্পর্ক ভালো। আজারবাইজানের প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয় আর্মেনিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর গানজার একটি আবাসিক এলাকার প্রায় ২০টি অ্যাপার্টমেন্ট ভবন গুড়িয়ে গেছে বলে দাবি করেছে।
রয়টার্সের এক চিত্রগ্রাহক গতকাল শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে উদ্ধারকর্মীদের কাজ করতে এবং একটি এক্সক্যাভেটরকে ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে দেখেছেন।
আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় গানজায় হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
আজেরি সৈন্যরা নাগোরনো-কারাবাখের সবচেয়ে বড় ও ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল স্তেপানাকের্তে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে বলেও পাল্টা অভিযোগ করেছে তারা। হামলায় তিন বেসামরিক আহত হয়েছে বলেও জানিয়েছে আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
স্তেপানেকের্তে অবস্থিত রয়টার্সের এক ক্যামেরাম্যান জানান, ভোরের দিকে তিনি বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
আজারবাইজানের কিছু ড্রোন আর্মেনীয় বসতির উপর দিয়ে উড়ে গিয়ে বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা ও বেসামরিক অবকাঠামোতেও হামলা চালিয়েছে, বলেছে আর্মেনিয়া।