সরকার গণবিরোধী বলেই করোনা পরীক্ষায়ও টাকা নিচ্ছে -বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ‘শনাক্তকরণ পরীক্ষায়’ ফি নির্ধারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। গতকাল বুধবার এক অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই প্রশ্ন তুলেন।
তিনি বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশে আছে- এই মহামারির মধ্যে মানুষ না খেয়ে আছে, একমুঠো আহারের জন্য আজকে নিরন্ন অসহায় কর্মহীন মানুষ দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। অথচ করোনা টেস্টের জন্য ২শ’ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তান সেখানেও করোনা টেস্টে ২শ টাকা নেয়া হয় না। কত বড় গণবিরোধী গণশত্রু হতে পারে এই সরকার।
রিজভী বলেন, আজকে যদি একজন রিকশাওয়ালা তার করোনা টেস্ট করতে যেতে হয়, একজন ভ্যানওয়ালা করোনা টেস্ট করতে যেতে হয়, একজন মজুর, একজন কৃষি শ্রমিক তারা সারাদিন কাজ করার পর হয়ত ১শ থেকে ২শ টাকা ইনকাম করতে পারে, তাও পারে না, কেউ‘র ৬০/৭০ টাকা ইনকাম হয়। সে ২শ’ টাকা দিয়ে করোনা টেস্ট করবে কী করে? আমরা করোনা টেস্টে ফি নির্ধারণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
রিজভী বলেন, দেশে যদি জনগণের সরকার থাকতো এটা (টেস্টের জন্য ফি নির্ধারণ) করতো না। সরকারি চিকিতসা পৃথিবীর বহু দেশে এমনকি বৃটিশ আমলে, পাকিস্তান আমলেও সরকারি হাসপাতালে চিকিতসা অনেকটা ফ্রি ছিলো। আর উন্নত দেশগুলোতে প্রশ্নই আসে না।
তিনি বলেন, যখন এই মহামারীর সময়ে মানুষকে খাদ্য দেয়া দরকার, মানুষের জিনিসপত্রের দাম কমানো দরকার ঠিক এই সময়ে তারা(সরকার) সুযোগ পেয়ে গেছে। করোনার সময়ে মানুষ আর মিছিল করতে পারবে না-এই সময়ে যত পারিস বাড়াও, বিদ্যুতের দাম, তেলের দাম বাড়াও, গ্যাসের দাম বাড়াও। কী পরিমান একটা জুলুমবাজ সরকার, রক্ত শোষনকারী সরকার ক্ষমতায় আছে।
একটা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সুযোগ নিয়ে জনগনকে টার্গেট করেছে ওরা। আমরা যে বলি গণদুশমনের সরকার। সেই গণদুশমন আক্ষরিকভোবে এটা সত্য। না হলে তো এখন গ্যাসের দাম, বিদ্যুতের দাম কমানো উচিত। সেটা না করে তারা আরো বৃদ্ধি করছে। এই মহামারীর মধ্যে তো হাজার হাজার লোক নিয়ে নামতে পারবে না। অতএব এই সময় করে নাও।
সরকারের এহেন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিরও কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। আমরা নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা আর্থিকভাবে ভয়ংকর কষ্টের মধ্যে পড়েছি। প্রতিবাদ ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই এই মুহূর্তে। এই প্রতিবাদ জানাতে গেলে পুলিশ বলে কিনা অনুমতি লাগবে। আজকে সরকারের গুণগ্রাহী হিসেবে পুলিশ যে ভূমিকা পালন করছেন এটা ঠিক নয়। পুলিশ তো একটি নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান। তারা আচরণ করবে সরকারি দলের জন্য একরম, বিরোধী দলের জন্য অন্যরকম। বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে বিএনপি শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করে প্রতিবাদ করছে সেখানেও তারা(পুলিশ) হুমকি দিচ্ছে। সরকার রক্ত চুষে নেবে প্রতিবাদ করা যাবে না।
গুম হওয়া পরিবারের খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃবৃন্দের ভূমিকার প্রশংসা করেন রিজভী। নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে গুম হওয়া দুই পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা দিতে এই সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠান হয়।
উত্তরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল বক্তব্য রাখেন।
পরে ‘গুম’ হওয়া মীরপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সগীর হোসেনের স্ত্রী ও তেজগাঁও থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা কাউসার আহমেদের স্ত্রীর হাতে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন রিজভী।