ঢাকা, রোববার 2 April 2023, ১৯ চৈত্র ১৪২৯, ১০ রমযান ১৪৪৪ হিজরী
Online Edition

করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন কিনা, জানিয়ে দেবে স্মার্টফোন

স্টাফ রিপোর্টার: সম্প্রতি কোনও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন কিনা তা ব্যবহারকারীকে জানিয়ে দেবে স্মার্টফোন। এমন একটি প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটাচ্ছে অ্যাপল ও গুগল। প্রযুক্তি বিশ্বের এই দুই মহারথির যৌথ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো কোনও অ্যাপস ডাউনলোড ছাড়াই একজন ব্যবহারকারী এই সেবা নিতে পারবেন। ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বজায় রেখেই এই সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ইতোমধ্যে এই প্রযুক্তি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডাটা প্রটেকশন সুপারভাইজারও ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন।

অ্যাপল ও গুগলের বিশ্বাস, স্বেচ্ছায় এই প্রযুক্তি গ্রহণকারীদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিশ্চিত করা যাবে। ব্যবহারকারীর কন্ট্রাক ট্রেসিং (যোগাযোগ শনাক্ত) পদ্ধতিতে ব্যবহার হবে স্মার্টফোনের ব্লুটুথ সিগনাল। এর মাধ্যমেই সম্প্রতি ব্যবহারকারীকে আক্রান্তের ঝুঁকিতে ফেলার মতো কাছাকাছি আসা ব্যক্তিকে শনাক্ত করবে ওই প্রযুক্তি। পরে সান্নিধ্যে আসা কোনও ব্যক্তির করোনাভাইরাস শনাক্ত হলে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর কাছে সংকেত পাঠানো হবে। এই প্রযুক্তিতে কোনও জিপিএস লোকেশন তথ্য বা ব্যক্তিগত তথ্য রেকর্ড করা হবে না।

অ্যাপল ও গুগলের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই উদ্যোগের চূড়ান্ত গুরুত্ব হলো গোপনীয়তা, স্বচ্ছতা ও সম্মতি। আর আগ্রহী অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে আমরা এটি কর্মক্ষম করার দিকে তাকিয়ে আছি। অন্যদের বিশ্লেষণের জন্য আমরা আমাদের কাজ খোলামেলাভাবে প্রকাশ করবো।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, এই প্রযুক্তি বিশ্লেষণ করে দেখার জন্য তার প্রশাসনের সময় প্রয়োজন। হোয়াইট হাউসের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এটা খুবই আগ্রহ উদ্দীপক কিন্তু ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রশ্নে অনেকেই এনিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘আমরা এটা খুব কঠোরভাবে খতিয়ে দেখতে যাচ্ছি। আর খুব শিগগিরই এবিষয়ে জানাতে পারবো।’

তবে এর চেয়ে বেশি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের ডাটা প্রটেকশন সুপারভাইজার। তিনি বলেন, ‘এই উদ্যোগের আরও মূল্যায়নের দরকার। তবে খুব দ্রুত দেখার পরেও মনে হয়েছে এটা সঠিক পথে এগুচ্ছে।’ তবে অনেকেই বলছেন এই উদ্যোগের সফলতা নির্ভর করতে পারে যথেষ্ট মানুষের করোনা পরীক্ষার ওপর।

আইওএস অপারেটিং সিস্টেসের ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান অ্যাপল আর অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের নেপথ্যের প্রতিষ্ঠান গুগল। এই দুই অপারেটিং সিস্টেমই বিশ্বের বেশিরভাগ স্মার্টফোনে ব্যবহার হয়।।

সিঙ্গাপুর, ইসরায়েল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং পোলান্ডের মতো কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে মানুষের ফোন ব্যবহার করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সতর্কতা পাঠাচ্ছে। এছাড়া যুক্তরাজ্যম ফ্রান্স, ও জার্মানির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষও নিজস্ব উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি মিউনিসিপ্যাল সরকার তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ ব্যবহার করে মানুষকে সতর্ক করছে।

তবে গুগল ও অ্যাপল যে প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে তাতে মানুষ বিদেশে ভ্রমণ বা অন্য যে কোনও ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার সময়েও কাজ করতে থাকবে।

এই উদ্যোগ নিয়ে গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে কাজ করছে গুগল। তবে শুক্রবারের আগে তা প্রকাশ করা হয়নি। এই উদ্যোগ সফল হলে বহু দেশের লকডাউন প্রত্যাহার ও সীমান্তে কড়াকড়ি শিথিলের জন্য সহায়ক হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ