শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

অপূর্ব রাজনৈতিক প্রজ্ঞার অধিকারী রসুল মুহাম্মাদ (স:)

আহমদ মনসুর : পৃথিবীতে বিভিন্ন কালে বিভিন্ন দেশে কালজয়ী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জন্ম গ্রহণ করেছেন যাদেও কথা ও প্রজ্ঞার পরিচয় দুনিয়ার মানুষ বেশিদিন স্মরণে রখেনি। কিন্তু রসুল মুহাম্মাদ (স:)-এর মাঝে আল্লাহ রেসালতী জ্ঞানের সাথে এমন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় আলোকিত করেছেন যে রাজনৈতিক প্রজ্ঞার কথা চিরকাল মানুষ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ রাখবে। আমরা হাদিস শাস্ত্রের মাধ্যমে জানতে পাই বনীইসরাইলের নবীগণ ছিলেন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে বিজড়িত। হজরত আবু হোরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল (স:) বলেছেন, “কানাত বনু ইসরাইলা তাসুসুহুমুল আম্বিয়াউ”-বনী ইষরাইলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিচালক ছিলেন তাদের নবীগণ। কিন্তু সে সব নবীগণের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেরর পরিচয় আমাদের কাছে অস্পষ্ট। কিন্তু হজরত মুহাম্মাদ (স:)-এর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও প্রজ্ঞা মুসলমানদের কাছে শুধু উজ্জ্বল ও সুস্পষ্টই নয় বরং তা তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের আদর্শ ও প্রেরণার অনন্ত উৎস। অপূর্ব রাজনৈতিক প্রজ্ঞার অধিকারী রসুল মুহাম্মাদ (স:) (২য় কিস্তি)
রসুল (স:)-এর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ছিল দীনের প্রচার ও প্রতিষ্ঠা- তথা তাবলীগে দীন ও একামতে দীনের প্রয়োজনে। এ কারণে তাঁর সিয়াসত তথা রাজনীতিকে রেসালত থেকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই।
রসুল (স:)-এর বিশাল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে হুদাইবিয়ার সন্ধি ছিল নিঃসন্দেহে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্বয়ং রব্বল আলামীন এ সন্ধিকে ‘ফতহুম মুবীন ‘ আখ্যায়িত করে ঘােষণা প্রদান করেন - “ইন্না ফাতাহ্না লাকা ফাতহাম্ মুবিনা”- হে নবী! আমরা আপনাকে সুস্পষ্ট বিজয় দান করেছি। এ সন্ধি নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনার মধ্য দিয়ে পাওয়া যাবে রসুলের বিরাট রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার পরিচয়।
৫ম হিজরী সনের শাওয়াল মাসে আহযাব যুদ্ধ শেষ হল। সমস্ত কোরইশ শক্তি মুসলমানদের উপর ক্ষিপ্ত। এমনি অবস্থায় ৬ষ্ঠ হিজরীতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রিয় রসুলকে স্বপ্নের মাধ্যমে হুকুম প্রদান করলেন উমরা’ করার। প্রভুর ইঙ্গিত পেয়ে ৬ষ্ঠ হিজরীতে জিলকদ মাসের শুরুতে রসুল (স:) সঙ্গী সাথী নিয়ে মদীনা থেকে যাত্রা শুরু করলেন। যুল হুলাইফা নামক স্থানে পৌছে সকলেই ইহরাম বাধলেন। কোরবানী করার উদ্দেশ্যে সঙ্গে নিলেন ৭০টি উট। নিরস্ত্র অবস্থায় উমরার উদ্দেশ্যে এক বিরাট কাফেলা নিয়ে রসুল (স:) তাঁদের সকলের রক্ত পিপাসু দুশমনদের ঘরের দিকে যাত্রা করলেন। আর এ আশ্চর্য ধরনের অভিযাত্রার দিকে গোটা আরব বিশ্ব তাকিয়ে ছিল অবাক দৃষ্টিতে।
হজরত মুহাম্মাদ (স:) এগিয়ে চলছেন সামনে। জিলকদ মাস হারাম মাসের একটি। এ মাসে যে কাফেলাই ইহরাম বেঁধে হজ্জ বা উমরা করার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে তা প্রতিরোধ অধিকার নেই কারও। কিন্তু না, কোরাইশদের মনে প্রতিহিংসা জেগে উঠল। তারা ভাবল, “যদি আমরা মুহাম্মাদকে এতবড় একটা কাফেলা নিয়ে বিনা বাধায় আমাদের শহরে প্রবেশ করতে দেই তা হলে সারা দেশে আমাদের আর কোন প্রতিপত্তি থাকবে না। লোকেরা ভাববে আমরা মুহাম্মাদের ব্যাপারে ভয় পেয়ে গেছি।” এই শ্লাঘা বোধতাদেরকে রসুলের আগমন পধে বাধা দিতে উদ্বুদ্ধ করল। কোয়শরা পূর্ণ শক্তি নিয়ে “ যী তাওয়া” নামত স্থানে এবং খালিদ ইবনে ওলীদ দুই শত উষ্ট্রযান আরোহী সৈন্য সহ ‘কুরাউল গাইম’ নামক স্থানে রসুলের অগ্রযাত্রা রোধ করার উদ্দেশ্যে আবস্থান নিল।
রসুল (স:) কোরাইশদের হীন উদ্দেশ্য জানতে পেরে তার স্বাভাবিক চলার পথ পরিবর্তন করে অত্যন্ত বন্ধুর দুরতিক্রম্য পথ ধরে অত্যন্ত কষ্ট করে হাজির হলেন ‘হুদাইবিয়া’ নামক স্থানে।
কোরইশরা চক্রান্ত চালাল যেন নবী ফিরে যান তাঁর সাথীদেরকে নিয়ে। নবী (স:)-এর কাছে এল বুদাইল ইবনে আরকা , হুলাইস ইবনে আল কামা ও উরওয়া ইবনে মাসউদ সাকাফী। তারা রসুলের সাথে আলাপ করে তার পবিত্র উদ্দেশ্য সম্পর্কে নিশ্চিন্ত হয়ে কোরইশদেরকে রসুলের প্রতিহিংসা ত্যাগ করতে পরামর্শ প্রদান করল। কিন্তু কোরাইশদে দুষ্ট বুদ্ধি এতে থেমে রইল না। তারা চুপি চুপি আক্রমণ চালাল রসুল ও তার সাথীদেও উপরে। একবার এল চল্লিশ পঞ্চাশ জনের এক বাহিনী, আর একবার এণ ৮০ জনের এক বাহিনী। কিন্তু দুইবারই তারা পরাজিত হল এবং ধরা পড়ে গেল সাহাবীদের হাতে। কিন্তু রসুল (স:) তাদের সবাইকে মুক্তি দিলেন। অবশেষে রসুল (স:) স্বয়ং হজরত ওসমান (রা:)কে নিজের পক্ষ থেকে দূত হিসেবে পাঠালেন মক্কায়। কিন্তু কোরইশরা সমস্ত কুটনৈতিক বিধান লংঘন করে হজরত ওসমান (রা:)কে আটক করে রাখল। এ দিকে খবর এল হজরত ওসমান রাঃকে শহীদ করা হয়েছেঠ। এ অবস্থায় সাহাবাগণ রসুলের হতে বায়াত করলেন এ কথার উপরে যে, “আমরা এখান হতে মৃত্যু পর্যন্ত পশ্চাদপসারণ করব না।”
পরবর্তীতে জানা গেল সংবাদটি ছিল মিথ্যা। হজরত ওসমান (রা:) ফিরে এলেন। আর কোরাইশদের পক্ষথেকে এল এক প্রতিনিধি দল নিয়ে সুহাইল ইবনে আমর। অনেক কথা বার্তার পর রসুলের সাথে কোরইশদের এক সন্ধি চুক্তি হয়, যা হুদাইবিয়ার সন্ধি নামে খ্যাত। এই চুক্তির মধ্যে ছিল-
দশ বৎসর কাল পর্যন্ত উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ থাকবে। এক দল অপর দলের বিরুদ্ধে গোপন বা প্রকাশ্যে কোন রকমেরই তৎপরতা চালাবে না। এ ছাড়া অন্য যে সব চুক্তি ছিল তা দেখে মুসলমানদের সমগ্র বাহিনী খুবই উদ্বিগ্ন ও অস্থির হয়ে পড়ল।
কিন্তু এ সব চুক্তির মধ্যে যে কল্যাণময় দিক ছিল তা রসুলের দৃষ্টিতে ছিল ভাস্বর। তাই সঙ্গী সাথীদের অস্থিরতা সত্ত্বেও রসুল (স:) এই চুক্তি তে স্বাক্ষর করে যে রাজনৈতিক দূরদর্শিতার প্রমাণ দিয়েছিলেন তা দেখে বর্তমান কালের শ্রেষ্ঠ রাজনীতিবিদরা বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে পড়ে।
এই সন্ধি ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য ছিল এক মহা বিজয় সূচক ঘটনা। এই চুক্তির মাধ্যমে আরব দেশে সর্বপ্রথম ইসলামী রাষ্ট্রের অবস্থিতিকে যথারীতি স্বীকৃতি ও সমর্থন দেয়া হল। শুধু তাই নয়, কোরাইশরা রসুলের সাথে সন্ধি চুক্তি করে ইসলামী রাষ্ট্র অধিকৃত অঞ্চলের উপরে রসুল (স:)-এর স্বাধীন সার্বভৌম কর্তৃত্ব মেনে নিল। এই চুক্তির মাধ্যমে মুসলমানদের জন্য আল্লাহর ঘর জিয়ারত করার অধিকার মেনে নিয়ে আরব বাসীদের দিলে ইসলামের বিরূদ্ধে যে ঘৃণা ও বিদ্বেষ জেগে উঠেছিল তার অবসান হল।
এই সন্ধির ফলেই মুসলমান জাতি সর্ব প্রথম নিজস্ব সত্তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে। সন্ধির মাধ্যমে রসুল (স:)মক্কা বাসীদের সাথে যুদ্ধ বিগ্রহ হতে মুক্তি লাভ করেন। রসুল (স:) এই অবকাশ কালে কাল বিলম্ব না করে বিশ্বব্যাপী ইসলামের আহ্বান ছড়িয়ে। দেবার জন্য এক আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি জিলহজ্জের পরবর্তী হিজরী ৭ম বৎসরের প্রথম মাস মহরমে তৎকালীর বিশ্বের বৃহৎ শক্তিবর্গের ছয় জন সম্রাটের প্রতি লিপি লিখলেন এবং ছয় জন দূত একই দিনে প্রেরণ করে এই ব্যবস্থার উদ্বোধন করলেন। এই কাজ সুচারু রূপে সম্পন্ন করার জন্য বিজ্ঞ দূতদেরকে দায়িত্ব প্রাপ্ত নিজ নিজ গন্তব্য দেশের ভাষাও শিক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
হজরত আমর ইবনে উমাইয়াকে পাঠান হল আবিসিনিয়ার বাদশাহ নাজ্জাশীর দরবারে, রোমের সম্রাট হেরাক্লিয়াসের নিকট লিপি দিয়ে পাঠান হল হজরত দেহইয়া কলবী (রা:)কে , পারস্য সম্রাটের নিকট পাঠান হল হজরত আবদুল্লাহ ইবনে হোযায়ফাকে , মিসরের কিবতী জাতির খ্রিষ্টান শাসনকর্তা মোনাযিরর ইবনে হারেসপাস সানীর নিকটর শুজা ইবনে ওহব (রা:)কে এবং ইয়ামানার প্রধান ব্যক্তি হাওয়াযা ইবনে আলীর নিকট পাঠান হল সালীত ইবনে আমর (রা:)কে। এসব চিঠির মূল বক্তব্য ছিল আল্লাহ ও তার রসুলের প্রতি ঈমান গ্রহণের আহ্বান, শিরক মুক্ত জীবন যাপনের আহ্বান।
রসুল (স:) হোদাইবিয়া থেকে ফিরে এসে মাত্র ১০/ ২০ দিনের মধ্যে বহির্বিশ্বে ইসলামকে তড়িৎ গতিতে ছড়িয়েও দেয়ার এক বিপ্লবী ও বৈজ্ঞানিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন। দূত মারফৎ রসুলের আহ্বানে এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকায় এক অপূর্ব আলোড়ন সৃষ্টি হল। এই লিপির মাধ্যমে শত শত যুগের সাধারণ দাওয়াতের মাধ্যমে যে কাজ সম্ভব ছিল না তা মাত্র ১টি মাসের মধ্যে সম্ভব হল। এমন প্রজ্ঞাপূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বিশ্বের দ্বিতীয় কোন দিগবিজয়ীর পক্ষে গ্রহণ ও বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে বলে দেখা যায় না।
রসুল (স:) ঐ ছয়খানা চিঠি ছাড়াও আরও অনেক লিপি পাঠিয়েছিলেন বিভিন্ন বিশেষ ব্যক্তিবর্গের কাছে। যেমন-আদ বংশীয় শাসনকর্তা মোনযের ইবনে সওয়ার এর নিকট আলা ইবনুল হারামী (রা:)কে পাঠন হল। এ ছাড়া গাসসানের শাসন কর্তা জাবালা ইবনে আইহামকে, সামাওয়া এলাকায় নুফাসা আবনে ফরওয়াহ, রোনদের প্রসিদ্ধ পাদরী জাগাতেরকে লিপি পাঠিয়ে দীনের দাওয়াত প্রদান করা হয়। এ ভাবেই রসুলের প্রজ্ঞাসঞ্জিত দাওয়তের পদ্ধতিতে বিশ্বের কোনে কোনে ইসলামের ডাক পৌছে গেল। আর এ ভাবেই ৭ম হিজরীতে নবী করীম (স:) চৌদ্দ শতের অধিক সাহাবা নিয়ে ওমরা পালন করে পূর্ব বৎসরে দেখা স্বপ্নকে বাস্তব রূপ প্রদান করেন।
হোদায়বিয়ার সন্ধি হওয়ায় মদীনা ইসলামী রাষ্ট্র দক্ষিণ দিক হতে সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত লাভ করে। এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার মাত্র তিন মাসের মধ্যেই ইহুদীদের শক্তি কেন্দ্র খয়বর জয় হয়ে গেল। অতঃপর ফাদাক, ওয়াদিউল কুরা, তাইমা ও তবুকের ইহুদী জনবসতিগুলি ইসলামের অধীনে চলে এল। এ ছাড়া মধ্য আরবের যে সব গোত্র ইহুদী ও কোরইশদের সাথে জোটবদ্ধ ছিল, তারা এক এক করে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় স্থান করে নিল। এ ভাবে হুদাইবিয়ার সন্ধির মাত্র ২ বৎসরের মধ্যে কোরাইশ ও মুশরিকদের শক্তি চাপা পড়ে গেল এবং ইসলামের সর্বাত্মক বিজয় সহজ হয়ে এল।
মদীনা সনদসহ হুদাইবিয়ার সন্ধি চুক্তি রসুল (স:)-এর শ্রেষ্ঠ রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার উজ্জ্বলতম প্রমাণ। হুদাইবিয়ার চুক্তি রাষ্ট্র নায়ক হিসেবে রসুলের বুদ্ধিদীপ্ত প্রতিভা ও বিচক্ষণতার শ্রেষ্টতম নিদর্শন।
পৃথিবী বহু দিগবিজয়ী বীরের জন্ম দিয়েছে। আলেক জাণ্ডার থেকে হিটলার নেপােলিয়ান সহ শত শত দিগবিজয়ী বীর শত শত রক্তের নদী বহায়ে, লক্ষ কোটি মানুষের জীবন পাত ঘটিয়ে যে সাম্রাজ্য বিস্তার ঘটিয়েছিল তা কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। কিন্তু রসুল (স:) তার ওহী লব্ধ নির্দেশ ও আল্লাহ প্রদত্ত ইলহামও হিকমাহর মাধ্যমে পৃথিবী ব্যাপী যে বিপ্লব ও বিজয় ঘটালেন তাতে কোন রক্তের ফোটা বয়নি। তাঁর দীনেরর বিজয় ও প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র কালের স্রোতে ভেসে তো যায়ই নি , বরং তা শতাব্দীর পর শতাব্দী গৌরবের সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। এ ইতিহাস মানবতার শ্যেষ্ঠ আদর্শ, বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম রাজনীতিবিদ হিসেবে রসুল (স:)কেই প্রমাণ করছে।
আল্লাহর রসুল আরবের বিভিন্ন প্রভাবশালী গোত্রের সাথে যে সব চুক্তি করেছিলেন সে গুলির অন্তত ত্রিশটির মূল পাঠ হাদিস গ্রন্থে সংরক্ষিত আছে। এ গুলির মধ্যে হুদাইবিয়ার চুক্তি রাজনৈতিক দিক দিয়ে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। এ সব চুক্তি ছাড়াও দীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে রসুল (স:) দুইশত নয়টি প্রতিনিধি দলকে সাক্ষাত প্রদান করেন। অন্তত তিনশত গোত্রপতির সাথে আলোচনা করে তাদেরকে শান্তি চুক্তি মেনে নিতে রাজি করান। তিনি বিভিন্ন স্থানে দূত প্রেরণ করেন এক শতেরও বেশি, আর লিপি পাঠান চার শতাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের কাছে।
রসুলুল্লাহ (স:)-এর হুদাইবিয়ার সন্ধিসহ এ সব রাজনৈতিক কথাবার্তা ছিল একামতে দীনের বিপ্লবী কর্মসূচীর অংশ। আজন তাই যারা তাবলীগে দীন, দাওয়াতে দীন ও ইকামতে দীনের কাজ করে যাচ্ছেন তাদের উচিত রসুল (স:)-এর এ সব কর্মকাণ্ডের মাঝে কর্মসূচী অনুসন্ধান করা। রেসালতী কর্মকাণ্ড বিবর্জিত সিয়াসতী তৎপরতা মানুষকে যেমন গোমরাহীতে পৌঁছে দেয়, তেমনি সিয়াসত তথা রাজনীতিকে রেসালত তথা দীনি কর্মকাণ্ড মুক্ত করা চরম বর্বরতার জন্ম দেয়, যা মানবতার জন্য চরম অভিশাপ।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ