বাতেন বাহার এর গুচ্ছছড়া

শীতের পাখি
শীতের দেশে হিম কুয়াশা যখন সীমার বাইরে
সবকিছুতে বরফ জমা, বসার জায়গা নাইরে!
এমনি দিনে পাখ্ পাখালি পায় না ভেবে দিশা
উষ্ণতা আর খাদ্য চেয়ে খুঁজে পাখার ভিসা!
পাখার ভিসা আলোর দিশা শীত যেখানে কম
হাওর নদী বাঁওড় যেথা সত্যি মনোরম
সে দিক উড়ে শীতের পাখি লয়রে খুঁজে ঠাঁই
ঠাঁই পেয়ে ঠিক, এতো উড়েও কোন দুঃখ নাই।
কারণ থাকার ঠাঁই পেয়েছে, শীতের কষ্ট নেই
শীতের পাখি তাই গল্পে হারায় ভাবের খেই।
খুদে কবি
বলতে পারো-ছোট্ট খোকা শীতের আনাজ কি কি?
শীতের ভোরে খেয়ার ঘাটে কখন কি হয় বিকি?
শীতের দিনে-চুলোর পাশে কেমন লাগে মাকে?
কি কথা কয় শীতের পাখি দাঁড়িয়ে নদীর বাঁকে?
হাওর নদী পুকুর বিলে কি মাছ পড়ে ধরা?
এসব নিয়ে দাওনা লিখে মিষ্টি ক’খান ছড়া।
ছড়ার মাঝে দাওনা এঁকে খেজুর গাছের ছবি
এসব এঁকে হওনা তুমি মায়ের খুদে কবি।
মায়ের কবি গাঁয়ের ছবি বাংলা ভাষার রূপ
যে সব ছবি আঁকলে তুমি শান্তি পাবে খুব।
শান্তি পাবে বিশ্ববাসি বাংলা মাকে দেখে
তুমিও হবে সেরার সেরা এসব ছবি এঁকে।
গাঁয়ের স্মৃতি
মাটির টানে পিঠের ঘ্রাণে গাঁয় যদি যাও শীতের দিনে
দেখবে সে গাঁ অনেক চেনা, জাগবে প্রীতি স্মৃতির পিনে!
পথের পাশে সীম টমেটো, লাউ লতা ও কলাই শাক
হলুদ মাখা সর্ষে হাসি, পড়বে চোখে মধুর চাক।
দেখবে তরল রূপোর দুলে সাজানো সব, দুর্বা ঘাস
টুপ্ টুপাটুপ্ ঝরছে রূপো, সূর্যালোকে ফুলের বাস।
ফুলের বাসে বঁইচি বনে তিল ঘুঘুরা গাইছে গান
মৌ মাছিরা উড়ছে বায়ে মধুর খোঁজে আকুল প্রাণ।
ভাসবে বায়ে প্রীতির ছবি, স্মৃতির বাসে নলের গুড়
নলের গুড়ে পায়েশ পুলি, গানের আসর বাউল সুর,
বাউল মনে মটরশুটি, ধনেপাতার গন্ধ বেশ
গন্ধে প্রিয় ছন্দ গীতি, ছন্দে প্রীতি ভাবের দেশ।
ভাবের দেশে মা মাটি মন, মন নাচাবে সর্ষে ফুল
খেয়ার ঘাটে নতুন বাজার প্রীতির মেলা নদীর কূল।
নদীর কূলে হু হু হাওয়া- ঘুড়ির মতো উড়বে মন
মনের মাঝে গল্প হবে বন বীথি ও ফুলের বন।
বন ছেড়ে যেই ফিরবে বাড়ি, মন মাতাবে হলুদ মাঠ
সতত মন খুঁজবে দেখো গাঁয়ের স্মৃতি- প্রীতির পাঠ!
প্রীতির পাঠে মন হারাবে, হাঁটতে একা পথের বাঁকে
হাঁটলে ঠিকই পাইবে দেখা, শত খুঁজেও পাওনি যাকে।