শুক্রবার ৩১ মার্চ ২০২৩
Online Edition

হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) থেকে হজরত ইমাম ইবনে তাইমিয়া (র.)

মনসুর আহমদ:

॥ পূর্বপ্রকাশিতের পর ॥

ইমাম গাজ্জালী (র.) (১০৫৮-১১১১খ্রি.)

ওমর ইবনে আবদুল আজীজের পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পর্যায়ক্রমে উমাইয়া, আব্বাসীয় ও তুর্কী বংশোদ্ভূত বাদশাহদের হাতে যায়। তাদের সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতায় গ্রীক রোম, অনারব ও ইসলাম পূর্ব জাহেলিয়াত সমাজ ও রাষ্ট্রে ব্যাপকভাবে স্থান লাভ করে। পূর্ব হতে পশ্চিম পর্যন্ত সমস্ত মুসলিম জাহানে নৈতিক অবক্ষয় দেখা দেয় এবং মুসলমানদের ব্যক্তি সমাজ জীবন থেকে,কোরআন ও নবুয়তী আলো দূরে সরে যায়। এম পরিস্থিতিতে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের মৃত্যুর প্রায় দুইশত বছর পরে ৪৫০ হিজরীতে খোরসানের তুস নগরে ইমাম গাজ্জালী (র.) জন্ম গ্রহণ করেন। 

তিনি গ্রীক দার্শনিক পাটো অ্যারিষ্টটলের চিন্তাধারা থেকে মুসলমানদেরকে মুক্ত করার জন্য কলম ধরেন। ইবাদতের নামে শিরক ও বেদায়াতের ধারাকে বন্ধ করে দিতে তিনি ইসলামের আকীদা বিশ্বাসের মূল নীতিসমূহের যুক্তিসম্মত ব্যাখ্যা পেশ করেন এবং দ্বীনের জ্ঞানকে পুনরুজ্জীবিত ও সতেজ করেন। 

৪৮৮ হিজরীর জিলকদ মাসে তিনি সিরিয়ার উদ্দেশ্যে বাগদাদ ত্যাগ করেন। সুদীর্ঘ এগার বছর বিভিন্ন আরব অঞ্চলে থেকে তিনি গভীর সাধনা করেন এবং ৪৯৯ হিজরীর জিলকদ মাসে স্বগ্রাম নিশাপুরে ফিরে আসেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন মতাবলম্বীদের সাথে ব্যক্তিগত সাক্ষ্ৎ করে এবং তাদের মৌলিক গ্রন্থাবলীর পর্যালোচনার মাধ্যমে এদের পথ ও মতের মূল্যায়নের চেষ্টা করেন। সর্বোপরি তিনি সমকালীন শাসক গোষ্ঠীকে সরাসরি সংশোধনের দিকে আকৃষ্ট করতে থাকেন। একই সাথে জনগণের মধ্যে জুলুম নির্যাতনের সামনে স্বেচ্ছায় নত না হয়ে অবাধ সমালোচনা করার প্রেরণা সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালাতে থাকেন। 

এই সংস্কার আন্দোলনের সাথে সাথে তিনি পৃথিবীর যে কোন স্থানে ইসলামের নীতি ও আদর্শের ভিত্তিতে একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা করেন। কিন্তু তাঁর কর্মকা-ে রাজনীতিক রূপরেখা গৌণ ছিল। তিনি রাজনীতিক বিপ্লব সাধনের জন্য কোন নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালাননি। তবে তাঁর চিন্তাধারায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তাঁর ছাত্র মুহাম্মদ ইবনে তুমাত ‘আল মুয়াহিদুন’ নামক কর্মীদের নিয়ে উত্তর পশ্চিম আফ্রিকায় ১১২০ সালে একটি ইসলামী আন্দোলন গড়ে তোলেন। ১১৪৭ সালে তথাকার শাসক তাসদিন বিন আবুল হাসান নিহত হলে তুমার্তের ডান হাত আব্দুল মুমিনের হাতে কর্তৃত্ব আসে এবং গাজ্জালীর স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়। উক্ত রাষ্ট্র ব্যবস্থা ১২৬৯ সাল পর্যন্ত টিকে ছিল। 

হজরত আবদুল কাদের জিলানী (র.) :  ইমাম গাজ্জালীর জীবনের শেষ পর্যায়ে এলেন হজরত আবদুল কাদের জিলানী (র.)। আব্বাসীয় শাসনাধীনে ইসলামী মূল্যবোধ ও জীবন দর্শন যখন চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয় তখন রাষ্ট্রীয় কাঠামো সংশোধনের উদ্দেশ্যে হজরত জিলানী (র.) ১১২৭ খ্রিষ্টাব্দে বাব আল হালবা হতে সংস্কার আন্দোলনের ঘোষণা প্রদান করেন। প্রথমে তিনি তাঁর বক্তৃতা ডজন খানেক মানুষের সামনে পেশ করেন, পরে তার সংখ্যা ৭০ হাজারে পৌঁছে। তিনি তাঁর সত্য ভাষণে খলিফা কাজী বা সরকারি কর্মচারী যারাই রসূল (স.) ও কোরআনের নামে দেশে কুশাসন আমদানী করে তাদের সমালোচনা করেন। প্রথম দিকে একাকী তিনি এই সংস্কার আন্দোলন শুরু করেন। কিন্তু অতি অল্প সময়ে তাঁর আন্দোলন বিরাট আকার ধারণ করে। তিনি তাঁর জীবনের ৪০ বছর বাগদাদে প্রচার কাজ চালিয়ে যান। সারা মুসলিম বিশ্বে তাঁর সংস্কার আহ্বান ধ্বনিত ও প্রতিধ্বনিত হয়েছে। তাঁর আহ্বান ছিল শাসকবর্গের জন্য সতর্কবাণী। তাঁর সংস্কার আন্দোলন মানুষের নৈতিক দিককে বিশেষ ভাবে আলোড়িত করে, যা রাজনীতিক সংস্কারে বেশি অবদান রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। মুসলমানদের সংশোধন ও অমুসলমানদের মধ্যে দ্বীনের প্রসারে জীবন উৎসর্গ করে তিনি ৫৬২ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন। 

ইমাম ইবনে তাইমিয়া (র.)

খুলাফায়ে রাশেদীনের পর মুসলিম ইতিহাসের আদর্শবাদী ধারা যথেষ্ঠ দুর্বল হয়ে পড়লেও পরবর্তী প্রত্যেকটি যুগে এমন কিছু কিছু বিরল ব্যতিক্তত্বের আবির্ভাব ঘটেছে যারা পুনরায় ফিরে যেতে চেয়েছেন ইসলামর মূল ধারার দিকে। ইসলামী আদর্শ পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তাঁরা আজীবন সংগ্রাম ও সাধনা করেছেন। কেউ কেউ এ সাধনার কারণে তৎকালীন রাষ্ট্রশক্তির কোপ দৃষ্টিতে পতিত হয়েছেন। ইমাম ইবনে তাইমিয়া এমন এক ব্যক্তিত্ব। হিজরী অষ্টম শতাব্দীর শায়খুল ইসলাম হাফেজ ইবনে তাইমিয়া (র.) ছিলেন এমন এক ব্যক্তিত্ব যিন মুসলিম জাহানে জ্ঞান ও কর্মের এমন এক গতি প্রবাহ ও প্রাণ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন যার প্রভাব কয়েক শতাব্দী অতিবাহিত হওয়ার পরে আজও অব্যাহত রয়েছে। 

ইবনে তাইমিয়ার খান্দান পূর্ব থেকে খান্দান -ই -ইবনে তাইমিয়া নামে খ্যাত ছিল। কারণ ইবনে তাইমিয়ার পিতামহ ছিলেন আবুল বারকাত মাজদুদ্দীন ইবনে তাইমিয়া। সে নামে এ খান্দান পরিচিত হয়ে আসছিল। মাজদুদ্দীন ইবনে তাইমিয়া ছিলেন হাম্বলী মজহাবের অন্যতম ইমাম। এমন নামকরা একনিষ্ঠ শিক্ষিত ও ধর্মীয় খান্দানে ইবনে তাইমিয়া(র.) ৬৬১ হিজরীর ১০ ই রবিউল আউয়াল সোমবার জন্মগ্রহণ করেন তকিউদ্দীন ইবনে তাইমিয়া (র.)। 

ইবনে তাইমিয়া (র.) কোরআন ও সুন্নাহর মুখপাত্র হিসেবে ইসলামের সত্যতা ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে এবং জ্ঞান ও কর্মক্ষেত্রে বিরাজিত বিভ্রান্তি ও গোমরাহী দূর করবার জন্য বিস্তৃত ও পরিপূর্ণ ইসলামী প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। 

৬৯৫ হিজরী ৪ঠা শাবান হাম্বলীদের শায়খ আলামা যয়নুদ্দীন ইবনে মুনজা ইন্তেকাল করলে তিনি তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন এবং হাম্বলিয়া মাদ্রাসার প্রধানশিক্ষকের পদে ইবনে তাইমিয়াকে অধিষ্ঠিত করা হয়। 

ইবনে তাইমিয়া পঠন পাঠনে মশগুল ছিলেন এবং বিশিষ্ট ও সাধারণ সকল মহলে তাঁর জনপ্রিয়তা ও খ্যাতি নিত্যই বৃদ্ধি পাচ্ছির। এমনি মুহূর্তে ৬৯৮ হিজরীতে তাঁর বিরুদ্ধে প্রথম বিক্ষোভ সংঘঠিত হয়। দামিশকের বুকে ইবনে তাইমিয়ার এক ধরনের ধর্মীয় নের্তৃত্বও কর্তৃত্ব কায়েম হয়ে গিয়েছিল। তাঁর এই ধর্মীয় উত্থান এবং ব্যক্তিগত প্রভাব বৃদ্ধি আলেমদের একটি দল পছন্দ করতে পারেনি। এ সব আ লেমগণ তাঁর ভেতরে আত্মম্ভরিতা দেখতে পায়। ফলে একদল হিংসুটে ও ঈর্ষাকাতর লোকের সৃষ্টি হয়, যারা ইবনে তাইমিয়ার পতন ও অবমাননাকর অপমান দেখতে অভিলাষী ছিলেন। এদের অন্যতম ছিলেন শায়খ নসর আল মুনজী শায়খ নসর আল মুনজীর প্রতি গভীর বিশ্বাস রাখতেন সাম্রাজ্যের উজীরে আজম। এরা উভয়ই ইমামকে নিপীড়নও শাস্তির শিকারে পরিণত করতে চাচ্ছিলেন। 

 তখন সিরিয়া ছিল মিসর সাম্রাজ্যের একটি প্রদেশ এবং সকল দিক দিয়েই এর অধীনস্থ। মিশরে উজিরে আজম রুকনুদ্দীন বায়বার্স আল জাসনগীর ও শায়খ নসর আল মুনজীর চক্রান্তে ৭০৫ হিজরীর ও ৫ই রমজান তারিখে তাইমিয়া(র.)এর নিকট মিসরে হাযির বহবার ডাক এসে পৌঁছে। ২২শে রমজান তারিখে মিশরে পৌঁছার পর তার ধর্ম বিশ্বাস ও কতগুলী মাসয়ালার ব্যাপারে আপত্তি উত্থাপন করা হয়। এর পরিণতিতে তাঁকে কিছুকাল বুরুজে বন্দী করে রাখা হয়। পওে মিশরের ‘জুব’ কূপ নামক বিখ্যাত কয়েদখানায় তাঁকে তাঁর ভাই শরফুদ্দীন আবদুলাহ এবং যয়নুদ্দিীন আবদুর রহমান স্থানান্তরিত করা হয়। এখানে তাঁর প্রতি নানা ধরনের নির্যাতন চলে। অবশেষে চার মাস পরে তাঁকে মুক্তি দেয়া হয়। 

ইবনে তাইমিয়া তার সমসাময়িক যে সব সূফী দরবেশ গ্রীক দর্শন, মিশর ও ভারতীয় জ্যোতির্বিদ্যা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন তাদের সমালোচনা করতে ইতস্ত করতেন না। 

এ কারণে মিশরের শায়খ-ই তরিকত ইবনে আতাউলাহ আল- ইসকান্দারী তরীকত পন্থীদের পক্ষ থেকে শাসক কর্তৃপক্ষের নিকট ইবনে তাইমিয়ার বিরুদ্ধে নালিশ করে। সুলতান তাদের অভিযোগে প্রভাবিত হয়ে এজন্য প্রয়োজনীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। অবশেষে নিত্য দিনের অভিযোগ বিক্ষোভ ও হৈ হ্ঙ্গাামায় হুকুমত অতিষ্ঠ হয়ে তাঁকে জেলখানায় পাঠিয়ে দেয়। কিছুকাল পরে মাদ্রাসা -ই -সালিহিয়ায় অনুষ্ঠিত কাজী ও ফকীহদের সম্মিলিত দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাইমিয়া (র.)-কে মুক্তি দেয়া হয়। 

 কিছুদিন পরে জাশনগীর মিসরের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। তার ক্ষমতাসীনের পরপরই ইবনে তাইমিয়াকে আলেকজান্দ্রিয়ায় নির্বাসন দেবার ও সেখানে নজরবন্দী জীবন যাপনের সরকারি ফরমান জারি করা হয়। ৭০৯ হিজরীতে তাঁকে আলেকজান্দ্রিয়ায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। 

কিছুদিন যেতে না যেতেই সুলতান নাসির ইবনে কালাউন সাম্রাজ্যের শাসন ভার হাতে নিলে জাশনগীর মিশর থেকে পালায়ন করেন। পরে সিরিয়ার নায়েবে আমীর সায়ফুদ্দীনের হাতে ধরা পড়েন ও ৭ই জিলকদ মিশরে তাকে হত্যা করা হয়। এই পরিবর্তনের পরে সুলতান কালউনের নির্দেশে ইমামকে মুক্তি দিয়ে মিশরে নিয়ে আসা হয়। 

ইবনে তাইমিয়ার সম্মানজনক মুক্তি লাভের পর যখন তাঁর বিরোধীরা দেখতে পেল যে, তাঁর সৌভাগ্য তাবকায় আরও উন্নতি ঘটছে এবং কোন ইলমী সমস্যার ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে হাঙ্গামা করা কঠিন, তখন তারা জনসাধারণকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করে। বিরোধীদের আন্দোলনের এক পর্যায়ে তৎকালীন হুকুমত ৭২৬ হিজরীর ৭ই শাবান তাঁকে বন্দী করার নির্দেশ জারি করেন এবং তাঁকে বন্দী করে দামেশকের দুর্গে স্থানান্তরিত করা হয়। 

 দুর্গাভ্যন্তরে অবরুদ্ধ হবার পর লোকেরা প্রতিশোধ মূলক কর্মকা- পরিচালনার অধিক সুযোগ লাভ করে। হিংসুটে ও বিরোধী পক্ষের লোকেরা এ সময় শায়েখের অনুসারী, বন্ধুবান্ধব ও শাগরিদদের উপরে আক্রমণ চালায়। 

শায়খুল ইসলামের জেল খানায় প্রেরণ হাজার হাজার আলেম ও লক্ষ লক্ষ মুসলমানের জন্য বেদনার কারণ হয়। তারা একে সুন্নাহর মোকাবেলায় বিদয়াতের বিজয় হিসেবে ধরে নেয়। সাম্রাজ্যের বিভিন্ন কোণ থেকে বড় বড় আলেম ও ধার্মিক লোকের পক্ষ থেকে সুলতান-ই-মু’আজ্জাম এর খেদমতে তারা তাদের মানসিক প্রক্রিয়া জানায়ে চিঠিপত্র লিখতে থাকেন। 

 ইমাম ইবনে তাইমিয়া কারার অন্তরালে গভীর আগ্রহ সহকারে ইবাদত তেলাওয়াত ও গ্রন্থ রচনার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। জেলখানায় বসে রচিত তার একখানা পুস্তিকা ছিল জিয়ারতের মাসয়ালা সম্পর্কিত এতে তিনি মিশরের একজন কাজীকে প্রত্যাখ্যান করেন। কাজী সাহেব এর বিরুদ্ধে সুলতানের নিকট অভিযোগ পেশ করলে শায়খের কাছ থেকে লেখার যাবতীয় উপকরণ কেড়ে নেয়া হয়। তার থেকে দোয়াত কলম কেড়ে নেয়ার পর তিনি এ দিক সেদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিক্ষিপ্ত কাগজ পত্রে লিখতে শুরু করেন। 

 ইমাম ইবনে তাইমিয়া স্বীয় অভিভমতের বিশুদ্ধতা এবং নিজের নির্দোষিতা সম্বন্ধে স্থির ও নিশ্চিন্ত ছিলেন। তিনি তাঁর অপরাধ স্রেফ একটুকু মনে করতেন যে, তিনি শরঈ মাসআলার ক্ষেত্রে সমসাময়িক শাসকের কথা অমান্য করেছেন এবং যাকে তিনি হক মনে করেছেন জিদ ধরে তিনি তার উপরে আড় হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তিনি তাঁর এ অপরাধের স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং একে তিনি তার ঈমান ও তওহীদের দাবির পরিপূরক মনে করেছেন। 

জেলখানার অভ্যন্তরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ইন্তিকালের বিশ বাইশ দিন আগে তাঁর শরীর এমন খারাপ হয়ে পড়ে যা পরে আর ভাল হয়নি। এমতাবস্থায় ২২শে জিলকদ ৭২৮ হিজরীতে ৬৭ বছর বয়সে ইমাম ইন্তেকাল করেন। মুয়াজ্জিন দুর্গের মিনারে চড়ে শাইখুল ইসলামের মৃত্যুবার্তা ঘোষণা করেন। তাঁর জানাযায় ভক্তদের ভিড় এত বেশি ছিল যে, সৈন্যদেরকে কফিন ঘিরে রাখতে হয়। ভোরে দূর্গ থেকে কফিন বের হয়েছিল, কিন্তু অত্যাধিক ভিড়ের কারণে আসরের মুহূর্তে দাফন কার্য সমাপ্ত করা সম্ভব হয়। জানাযায় উপস্থিতির সংখ্যা ছিল প্রায় এক লক্ষ। যার মধ্যে ১৫ হাজার ছিল মহিলা। ইমাম ইবনে রজব বলেন, নিকট ও দূরবর্তী মুসলিম দেশগুলিতে (ইমামের) গায়েবানা জানাযা পড়া হয়, এমনকি ইয়েমেন ও চীনেও গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। 

এভাবেই যুগশ্রেষ্ঠ ইসলামী জগতের ভাস্বর তারকা ইবনে তাইমিয়া নির্যাতিত অবস্থায় পৃথিবী থেকে বিদায় গ্রহণ করেন। ইন্নালিলাহি  ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন।  [সমাপ্ত]

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ