তিন বীরাঙ্গনা মুসলিম রমনী
উম্মে আইরিন : ১) বীরাঙ্গনা সোনা বিবি
যে সব মুসলিম নারী বিধর্মী শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করে খ্যাতি অর্জন করে ইতিহাসে অমর হয়ে রয়েছেন সোনা বিবি তাদের অন্যতম। সোনা বিবির বাবা ছিলেন রাজা চাঁদ রায়। চাঁদ রায় এবং তাঁর ভাই কেদার রায় বাংলার বীর ঈশা খাঁকে প্রচুর সম্মান করতেন। চাঁদ রায় ছিলেন মশহুর জমিদার। ঈশা খাঁ প্রায়ই যাতায়াত করতেন তাঁদের প্রাসাদে।
রাজা চাঁদ রায়ের ছিল এক বাল্য বিধবা সুন্দরী কন্যা। তার নাম ছিল সোনা মণি। তিনি ঈশা খাঁর চারিত্রিক মাধুর্য , দৈহিক গঠন ও বীরত্বে দারুণ ভাবে বিমোহিত হয়ে পড়েন। এক সময় ধর্মের সকল বাধন ছিন্ন করে পালিয়ে সোনামণি আসেন ঈশাখাঁর প্রাসাদে এবং ঈশার খাঁর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং নতুন নাম রাখেন সোনা বিবি। প্রথমে এ বিবাহে ঈশা খাঁ মোটেই রাজি ছিলেন না। কারণ রাজা চাঁদ রায় ছিলেন তার বিশেষ বন্ধু।
ঈশা খাঁর মৃত্যুর পর রাজ্য পরিচালনার ভার গ্রহণ করেন সোনা বিবি। উপরে উপরে বন্ধুত্ব থাকলেও চাঁদ রায় ও কেদার রায় মোটেই সহ্য করতে পারতেন না বীর ঈশা খাঁকে। ঈশা খাঁর মৃত্যু পর অপমানের প্রতিশোধ নিতে তাঁরা আক্রমণ করেন ঈশা খাঁর সুরক্ষিত সোনাকুন্ডা দুর্গ। সোনা বিবি এ দুর্গেই অবস্থান করতেন। তিনি তাদের আক্রমণ থেকে দুর্গ রক্ষার জন্য নিজেই পুরুষের বেশে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সপ্তাহের পার সপ্তাহ চলে গেল কিন্তু দুর্গের পতন ঘটাতে ব্যর্থ হল কেদার রায় আর চাঁদ রায়। বীরাঙ্গনা সোনা বিবি প্রতিজ্ঞা করলো জীবন দেবো তবু বন্দী হবো না। যে প্রতিজ্ঞা সেই কাজ। সোনাকুন্ডা দুর্গের পতন হল বটে তবে অমুসলিম বাবা চাচার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাতে গিয়ে যুদ্ধ ক্ষেত্রেই সোনাবিবি জান কোরবান করলেন।
২) অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে চাঁদ বিবি
সে অনেক দিন আগের কথা। মোগল সম্রাট বাবর যখন আফগানিস্তানে তার বিরোধী শক্তির সাথে সংগ্রামে লিপ্ত , তখন দাক্ষিণাত্যে হাসান গঙ্গুঁ বাহমনীর রাজত্ব চলছিল বেশ দাপটে। গোটা ভারত তাঁর প্রতাপ ছিল ছড়িয়ে। কিন্তু এই বাহমনী রাজত্ব বেশি দিন টিকেনি। বাবরের ভারত বর্ষে প্রবেশ করার আগেই বিরাট বাহমনী সাম্রাজ্য ছোট ছোট খ-ে বিভক্ত হয়ে পড়ে। সৃষ্টি হয় বেরার, বিজাপুর, বিদার, আহমদ নগর ও গোলকুন্ডা রাজ্য।
এই আহমদ নগর রাজ্য ছিল বহুকাল নিযাম শাহীর অধীনে। নিযাম শাহীর পর পর আট জন বাদশাহর শাসন শেষ হলে তখন তারা কেউ এর উত্তরাধিকারী হিসেবে বাকি রইল না।
তখন নিযাম শাহীর উচ্চাভিলাষী কর্মকর্তারা বাদশাহী লাভের জন্য নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলো। সে রাজ্যের একজন আবিসিনীয় সেনাপতি চেয়েছিলেন বাদশাহ হতে। কিন্তু মন্ত্রী মিয়া মঞ্জু তা মেনে নিতে রাজি হলেন না। শেষ নিযামের ফুফু চাঁদ বিবি চাচ্ছিলেন নিযামের উত্তরাধিকারিণী হতে। এই নিয়ে আহমদ নগরে চলছিল প্রচুর দ্বন্দ্ব।
আহমদ নগরে বাস করতো প্রচুর আবিসিনীয় লোক। ফলে আবিসিনীয় দল শক্তিশালী হলো। অবস্থা বেগতিক দেখে মন্ত্রী মিয়া মঞ্জু আকবরের পুত্র মুরাদের কাছে সাহায্য চেয়ে পাঠালেন। তখন মুরাদ ছিলে গুজরাটে। মন্ত্রী মঞ্জুর তাঁর রাজ্য চাঁদ বিবির হাতে দিয়ে শহর ত্যাগ করলেন।
সে সময় সম্রাট আকবরের প্রতাপ ও মোগল সৈন্যদের অজেয় শক্তির কথা শত্রুদেরকে আতঙ্কে নিমিজ্জত করে রেখেছিল। এ সময় চাঁদ বিবির কাছে খবর এল যে, মোগল ও রাজপুত্র সৈন্য বাহিনীর সেনাপতি হয়ে মুরাদ তার বাহিনী নিয়ে শহরের দিকে দ্রুত এগিয়ে আসছে।
খবর শুনে চাঁদ বিবি মোটেই ভয় পেলেন না। “এ সময় তাঁর দুই প্রধান সেনাপতি তাঁদের বাহিনী নিয়ে আহমদ নগর রাজ্যের বাইরে ছিলেন। চাঁদ বিবি এ অবস্থায় অল্প কিছু সৈন্যের উপর নির্ভর করে সাহস নিয়ে মুরাদকে প্রতিহত করার সিদ্ধান্ত নিলেন। যেহেতু তাঁর গোটা শহরটা উঁচু ও মজবুত দেয়াল পরিবেষ্টিত তাই তিনি ভয় পেলেন না। বুদ্ধিমতী চাঁদ বিবি প্রয়োজনীয় গোলা বারুদ দেয়ালের উপর স্তুপ করতে লাগলেন। তিনি শহরের বাহির থেকে প্রচুর খাদ্য সম্ভার যোগাড় করে মওজুত করতে লাগলেন। এমন ভাবে দৃঢ় প্রস্তুতি নিয়ে মুরাদ বাহিনীর অপেক্ষা করতে লাগলেন চাঁদ বিবি।
একদিন তিনি তাঁর শহর প্রতিরক্ষার দেয়ালের উপর বিচরণ করতে গিয়ে দেখতে পেলেন যে শহরের উত্তর দিকে মোগল সৈন্য জমায়েত হয়েছে। মোগলদের বাহিনীতে ছিল প্রচুর খাদ্য রসদ এবং সুদক্ষ প্রকৌশলীর দল। শহরের বাইরে মোগল বাহিনী কোন কোলাহল ছাড়াই অবস্থান করছে। দ্বিতীয় দিনে শহরে প্রতিরক্ষা বাহিনী দেখতে পেল যে মুরাদ কিছু প্রকৌশলী ও সৈন্য সমেত শহরের দিকে এগিয়ে আসছেন। তিনি তার সৈন্যদেরকে চাঁদ বিবির গোলাগুলি থেকে রক্ষার জন্য প্রকৌশলীদেরকে পরিখা খননের নির্দেশ দিলেন। কিভাবে সেনাবুহ্য রচনা করতে হবে তার নির্দেশ দিলেন সেনাধ্যক্ষদেরকে। শহর রক্ষায় নিযুক্ত অতন্ত্র প্রহরীরা চাঁদ বিবিকে এসব বিষয় জানিয়ে দিল।
নগর পরিবেষ্টিত দেয়াল এতই উঁচু যে কোন সৈন্যই এই প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে শহরে প্রবেশের সাহস করল না। মুরাদ ভাবল প্রাচীরের নিচে সুড়ঙ্গ খুড়ে ঐ ছিদ্র পথে শহরে প্রবেশ করতে হবে। তাই তাঁর নির্দেশ তাঁর প্রকৌশলীরা ছাউনী থেকে শহর পর্যন্ত ও প্রাচীরের নিচে সুড়ঙ্গ তৈরীর কাজ শুরু করে দিল। সৈন্য বাহিনী খুব তাড়াতাড়ি সুড়ঙ্গ তৈরী কাজ শেষ করে ফেললো। কিন্তু সুড়ঙ্গ পথ দিয়ে তো বেশি সৈন্য একত্রে শহরে প্রবেশ করা সম্ভব নয়। তাই তারা দেয়াল ভেঙ্গে ফেলার জন্য প্রাচীরের নিচের সুড়ঙ্গে বারুদ জমা করতে লাগল তাতে যেন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে প্রাচীর চুরমার করে দেয়া যায়।
বুদ্ধিমতী চাঁদ বিবিও ও বসেছিলেন না। তিনিও শহর থেকে মুরাদের ছাউনি পর্যন্ত গোপন সুড়ঙ্গ তৈরী করার প্রচেষ্টা করেছিলেন কিন্তু তার পূর্বেই মুরাদের বাহিনীর সুড়ঙ্গ পথে পোতা তিনটি মাইন চাঁদ বিবির বাহিনীর হস্তগত করল। বাকি দুটি হস্তগত করার আগেই প্রচণ্ড ভাবে সে দুটি বিস্ফোরিত হল। বিকট শব্দ ও মেঘে এলাকা ঢেকে ফেললো। ধূম কুন্ডলী সরে গেলে দেখা গেল প্রাচীরের নিচে বিরাট সুড়ঙ্গ। মোগল বাহিনী ইতিমধ্যে সুড়ঙ্গ পথ বেয়ে শহরের কাছে পৌঁছল। কিন্তু ইতিমধ্যে নগর রক্ষীরা ভয়ে পালিয়েছে।
চাঁদ বিবি এ অবস্থায়ও ভেঙ্গে পড়লেন না। চাঁদ বিবি সাহস নিয়ে কঠোরভাবে ফিরে দাঁড়ালেন। তিনি মুখে হেজাব ঢেকে গোটা শরীরে যুদ্ধ বর্ম পরিধান করলেন। হাতে খোলা তরবারি নিয়ে সুড়ঙ্গ পথে আগলিয়ে দাঁড়ালেন। তার এই সাহসিকতা পূর্ণ আচরণে হতোদ্দম সৈন্য বাহিনীর বুকে সাহসের সঞ্চার হলো। এবার চাঁদ বিবির নেতৃত্বে তারা সুড়ঙ্গ পথ দখল রাখার চেষ্টা করল যেন মোগলরা এ পথে শহরে প্রবেশ করতে না পারে। এই প্রতিক্ষায় মোগল বাহিনীর লাশে প্রাচীরের নিচের গর্ত পরিপূর্ণ হয়ে গেল। এভাবে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে মোগলরা রণে ভঙ্গ দিল।
চাঁদবিবি গোটা রাত ভরে ভাঙ্গা দেয়াল মেরামত কাজ সম্পন্ন করালেন। ভাঙ্গা প্রাচীর ৭ ফুট উঁচু করে মেরামত করা হল ও সুড়ঙ্গ পথ বন্ধ করে দেয়া হল। পরে তিনি তার অনুপস্থিত সেনাপতিদেরকে অতি দ্রুত তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসার নির্দেশ পাঠালেন। কিন্তু পথিমধ্যে এই নির্দেশনামা পড়ল যুবরাজ মুরাদের হাতে। চিঠি পড়ে রাণীর সাহসিকতায় মুরাদ মুগ্ধ হলেন। তিনি এই নির্দেশ নামার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর সৈন্য বাহিনীকে তা পড়ে শোনালেন। মুরাদ চাঁদ বিবির সাহসিকতা পূর্ণ কাজে মুগ্ধ হয়ে যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করলেন। আহমদনগর এই ভাবে চাঁদ বিবির সাহসিকতা ও কৌশল পূর্ণ ব্যবহারে মুক্ত রইল। সেই হতে সাহসিনী চাঁদ বিবি পরিণত হলেন চাঁদ সুলতানায়।
৩) বালাজি রাও এর মোকাবেলায় এক মুসলমান নারী
যে হৃদয় পূর্ণ হয় ঈমানের আলোতে সে হৃদয়ে বাসা বাঁধতে পারে না মানুষের ভয়, মরণের ভয়। মরণ ভয়কে উপেক্ষা করে মারাঠা সেনাপতি বালাজি রাও- এর মোকাবেলায় দাঁড়িয়ে ছিলেন সুপ্রসিদ্ধ সেনাপতি গওস খাঁর বিধবা পত্নী। লুণ্ঠনকারী মারাঠাদের অত্যাচারে বাংলার জনগণ অতিষ্ঠ। এলাকার পর এলাকা লুণ্ঠন করে চলছে মারাঠা বাহিনী। এক সময় বালাজি রাও টিকারী ও গয়া হয়ে মানপুর ও বিহারের ভিতর দিয়ে এগিয়ে চলছেন। তিনি তার বাহিনী নিয়ে লুণ্ঠন কার্য চালিয়ে এসে পৌঁছলেন মুঙ্গের ও ভাগলপুর।
মুঙ্গের ও ভাগলপুরের অধিবাসীরা মারাঠাদের হাতে দারুণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলো। বহু লোক গঙ্গাঁর অপর তীরে পালিয়ে গেল। কিন্তু গওস খাঁর বিধবা পত্নী বিপুল পরিজন সহ পরে রইলেন ভাগলপুরে। কেউ তাঁর নিরাপত্তায় এগিয়ে আসবে তাও সম্ভব হলো না। বড়ই চিন্তাযুক্ত তিনি। অবশেষে ঈমানী চেতনায় উদ্দীপ্ত রমণী মারাঠা বাহিনীর প্রতিরোধ করতে শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে নিজের ও পরিবারের ইজ্জত রক্ষা করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হলেন।
এই বীর রমণী তাঁর আত্মীয় ও আশ্রিতদের ডেকে বললেন যে, বালাজি রাও -এর লোকজন নারীদেরকে বেইজ্জত করে। অতএব তাদের এই বেইজ্জতির হাত থেকে রক্ষা পেতে আমাদেরকেই বুক পেতে দাঁড়াতে হবে। কারণ বেইজ্জতি হালে বেচেঁ থাকার চেয়ে ইজ্জত রক্ষার প্রয়োজনে মৃত্যুবরণ অনেক শ্রেয়। তাঁর এমন সাহসিকতা পূর্ণ আচরণ ও ভাষণে সমস্ত নারীরা উজ্জীবিত হয়ে উঠল। প্রতিজ্ঞা করল মারাঠাদের কাছে ইজ্জত দেব না, আল্লাহর রাহে জীবন দেব।
তিনি এবার সমস্ত ঘরবাড়ির প্রবেশ পথ রূদ্ধ করে দিলেন। তাঁর নিজের বাসাটিতে যথা সম্ভব সুরক্ষার ব্যবস্থা করলেন। তাঁর কাছে ছিল কিছু মরচে পড়া বন্দুক, সেগুলি তিনি আশ্রিতদেরকে দিয়ে শক্তিশালী মারাঠা বাহিনীর বিরুদ্ধে আত্ম রক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করলেন।
ভাগলপুরের অধিকাংশ অধিবাসী পালিয়ে যায়, যারা রয়ে যায় তাদের ইজ্জত আব্রুসহ ধনসম্পদ লুণ্ঠিত হয়। লুণ্ঠনকারীরা বাধাপ্রাপ্ত হয় গওস খাঁর বিধাব পত্নীর ধ্বংসাপন্ন গৃহগুলি হতে। এসব গৃহগুলি হতে থেমে থেমে বন্দুকের আওয়াজ ধ্বনিত হতে ছিল। লুণ্ঠনকারীরা হতবিহবল হয়ে পড়ল। তারা সমস্ত পাড়া অবরোধ করে ফেলল। অবরুদ্ধ এলাকা থেকে বন্দুকের গুলি এসে পড়তে লাগল মারাঠা লুণ্ঠনকারীদের উপর। কিছু মারাঠা বাহিনী আহত হল। এ মতাবস্থায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় মারাঠা বাহিনী। জোর পূর্বক এসব অবরুদ্ধ গৃহ তারা দখল করবে না ফিরে আসবে, এ নিয়ে ভাবছে লুণ্ঠনকারীরা।
এ অবস্থা জানতে পারলেন সেনাপতি বালাজি রাও। তাঁর হৃদয়ে জাগ্রত হল কৌতুক মিশ্রিত শ্রদ্ধাবোধ। তার কাছে এ ঘটনাটি বিচিত্র মনে হল। প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য তিনি উৎসাহী হয়ে লোক নিয়োগ করলেন। এসব লোক মারফত তিনি অবগত হলেন যে এ রমণী কোন সাধারণ রমণী নন, সুপ্রসিদ্ধ সেনাপতি গওস খাঁর বিধাব পত্নী। নদীর অপর তীরে বাসা সুরক্ষা ও জীবিকার ব্যবস্থা করতে অসমর্থ হওয়ায় বেইজ্জতি ভোগ অপেক্ষা নিজ গৃহের ধ্বংসস্তুপের নিচে সমাহিত হওয়াকেই অধিকতর গৌরবজনক বিবেচনা করে বিরাট বাহিনীর বিরুদ্ধে অবরোধ সৃষ্টি করতে সাহস করেছেন। তাঁর দৃঢ়তায় উৎসাহিত মুষ্টিমেয় আশ্রিতের সাহায্যে তিনি এত চমৎকার রূপে উহা রক্ষা করেছেন যে এত অধিক বাধা মোকাবেলায় অনভ্যস্ত মারাঠা বাহিনী ইহা অধিকারের সাহস হারিয়ে ফেলল। তারা দূর হতে এ প্রতিরোধ দৃশ্য তাঁকিয়ে দেখতে লাগল।
বালাজি রাও এ সংবাদ শুনে সন্তুষ্ট হলেন। একজন সামান্য রমণীর এত অধিক সাহসী পূর্ণ আচরণে তিনি বিস্মিত হলেন। তিনি মুসলিম মহিলার এ দৃঢ় পূর্ণ আচরণের প্রশংসা করেই তৃপ্ত হলেন না। তিনি দাক্ষিণাত্যের কিছু দামী বস্ত্র ও কিঙখাবের উপহার সহ তাঁর কাছে একটি বাণী পাঠালেন। তাঁর গৃহ নির্বিঘ্ন রাখার জন্য একদল দেহরক্ষী পাঠালেন। সমগ্র মারাঠা বাহিনী এলাকা পরিত্যাগ করা না পর্যন্ত দেহরক্ষী বাহিনীকে সেখানে অবস্থানের নির্দেশ দেয়া হল। প্রহরীরা কঠোর ভাবে আদেশ প্রতিপালনের পর সসম্মানে বীর রমণীর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তারা মূল বাহিনীতে ফিরে গেল। -(তথ্য-সিয়ারে মুতাখ্ খিরীন)