অভিযান আতঙ্কে খুলনার ক্লাব ছেড়ে জুয়াড়িরা ছুটছে আবাসিক হোটেলে
খুলনা অফিস : খুলনার ক্রীড়াঙ্গনের ক্লাবগুলোতে অভিযান আতঙ্কে থাকা জুয়াড়িরা ছুটছেন আবাসিক হোটেলগুলোতে। কক্ষ ভাড়া নিয়ে রাতভর জুয়া ও মাদকের আসর জমিয়ে রাখছেন তারা। জুয়া ও মাদকের নেশা কোনভাবেই ত্যাগ করতে পারছেন না এ পেশার মানুষ। নতুন পন্থায় জুয়ার আসর শুরু করেছে বলে একাধিক সুত্র থেকে জানা গেছে। এদিকে খুলনার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ইতোমধ্যে ক্রীড়াঙ্গনের ক্লাব, সাংবাদিক সংগঠনসহ যে যে স্থানে জুয়া পরিচালনা হয় এ ধরনের একটি তালিকা প্রস্তুত করেছে। নগরীতে প্রায় ২৫টি স্পটে জুয়া পরিচালনা হয় বলে ওই তালিকা উল্লেখ করা হয়েছে। এ সকল স্থানগুলো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে বলে জানা গেছে। অপরদিকে ইয়ং বয়েজ ক্লাবের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেছেন। ওই ক্লাবটি পরিচলানার জন্য ১৫ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটিও ঘোষণা করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অচ্ছিুক বেশ কয়েকজন পেশাদার জুয়াড়ির সাথে আলোচনা করে জানা গেছে, খুলনার ক্লাবগুলোসহ বিভিন্নস্থানে নিয়মিত জুয়ার আসরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ বেশ কিছু জায়গায় ক্যাসিনো ও ক্লাবে জুয়ার আখড়ায় র্যাব-পুলিশের অভিযানের খবরেই খুলনার এ চিত্র বলে জানান তারা।
তারা আরও জানান, কিছু পেশাদার জুয়াড়ি রয়েছে, তারা কোনভাবেই জুয়া না খেলে থাকতে পারেনা। এজন্য নগরীর অখ্যাত অনেক আবাসিক হোটেলে কক্ষ ভাড়া নিয়ে রাতভর জুয়ায় নিমজ্জিত হচ্ছেন। তবে তাদের এ সকল জুয়া খেলার বিষয়ে ওই সকল হোটেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবগত রয়েছেন। যেনে বুঝেই মোটা অংকের টাকা রুম ভাড়া দিচ্ছেন তারা।
উল্লেখ্য, রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন ক্লাবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পর খুলনার ক্লাব পাড়ায় সাময়িকভাবে জুয়া বন্ধ রয়েছে। তবে নিয়মিত হাউজি খেলা চলছে ক্লাবগুলোতে। ২০১৭ সালে র্যাব-পুলিশের পৃথক দু’টি অভিযানে একল ক্লাবে মাদক ও জুয়ার ভয়াবহ এ চিত্র সকলের নজরে এসেছিল। তবে এরপর থেকে আর কোন অভিযান হয়নি। ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট অনেকের দাবি ছিল এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের। তবে প্রভাশালীদের কারণে তা কখনো হয়ে ওঠেনি। প্রতিদিনই এ সকল ক্লাবে জুয়া থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় হয়। এসব টাকা ক্লাব পরিচালনাকারীরাসহ স্থানীয় রাজনৈতিক ও পেশাদার জুয়া পরিচালনাকারীদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা হতো। খুলনার প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি না জানলেও নিচের দিকের অনেক কর্মকর্তাও এসকল ক্লাব থেকে নিয়মিত চাঁদা পেতেন বলেও অনুসন্ধানে জানা গেছে।