ছড়া

নীল সবুজের হাট
হোসেন মোতালেব
নীল সবুজের হাটে দেখি
গল্প ছড়ার মেলা
হরেক রকম গল্প ছড়া
করছে সেথায় খেলা ।
একটা ছড়া মস্ত বড়
একটা ছোট অতি
একটা ছড়া পড়লে বাড়ে
মূল্যবোধের গতি ।
একটা ছড়া সত্য শেখায়
একটা শেখায় নীতি
একটা শেখায় কর্মোদ্যম
একটা শেখায় প্রীতি ।
একটা শেখায় দেশাত্মবোধ
দেশকে ভালবাসা
একটা ছড়া উৎসাহ আর
উদ্দীপনায় খাসা ।
মায়ের স্মৃতি
জাহাঙ্গীর অরণ্য
মাগো আমি হাসছি অনেক
ওদের সাথে খেলছি অনেক
সাঁঝের বেলা চুপটি করে
ফিরছি একা ঘরে।
যেদিন তুমি চলে গেলে
কী কথা যে বলে গেলে
আমি তখন ঘুমিয়েছিলাম
ছোট্ট পাটির ‘পরে।
মাগো তোমার মুখটি কেমন
¯েœহভরা হাতটি কেমন
তোমার ছায়া পাই না কেনো
অন্য কাউকে ঘিরে!
মাগো তুমি কোথায় থাকো
খোকা বলে কারে ডাকো
আমার মতো কাঁদছো নাতো
সাঁঝের আঁধার ঘরে।
বাবার স্বপ্ন
স্বপন শর্মা
বাবার অফিস বনানীতে
আমরা আজিমপুরে
বাসা এবং বাবার অফিস
নয় তো বেশি দূরে!
তবুও নিত্য দু’বেলা রোজ
আলাপ হতো ফোনে
আমায় নিয়ে হাজার রকম
স্বপ্ন আঁকত মনে।
সেদিনও ঠিক নিয়ম মাফিক
আলাপ সকাল বেলা,
বলল আমায় পড়া-শোনায়
করবে না অবহেলা।
বনানীর সেই অগ্নিকান্ডে
স্বপ্ন ছাইয়ের পর
অনেক দূরে অচিন পুরে
বাবার না কি ঘর!
আর আসেনা সেদিন থেকে
ফোন করে না আর
কেমন আছি? খাইছি কি না!
নেয় না খবর তার!
দিশা
মোহাম্মদ আবু বকর
রাতারগুল পাতারফুল
হরিদ -সবুজ লতা
তাদের দেখে লাজে মরে
লজ্জাবতীর পাতা।
বনমহিষের ডুবসাঁতারে
চলছে জলের খেলা
পাতার ফাঁকে রোদেল হাসি
চেতী প্রথম বেলা।
গাছে গাছে খুব মিতালি
শাখে জড়াজড়ি
প্রজাপতির অরূপ ডানায়
রঙিন ওড়াউড়ি।
গাছের ডালে বানর নাচন
পাখির কলতান
মনে কেড়ে নেয় মাঝির গলায়
ভাটিয়ালি গান।
শামুকখোল পাখির সারি
বড়ই মনোলোভা
প্রাণটা আমার ভরিয়ে দিল
জলবনের এই শোভা।
হঠাৎ করে মেঘের আড়ে
লুকিয়ে গেল আলো
জলের বনে নামলো আধার
মুখটি করে কালো।
পথ হারালো প্রবীণ মাঝি
দিক নাহি যায় চেনা
শংকিত মন অজানা ভয়
মিলবে কি ঠিকানা।
আচমকা এক আলোকছটা
পড়লো এসে নায়ে
দীপ্যমান এক মানব এলো
সফেদ জামা গায়ে।
শক্ত হাতে ধরিল হাল
মিললো পথের দিশা
সবার মুখে ফুটলো হাসি
দূর হলো নিরাশা।
পাখি বাঁচাই
আলাউদ্দিন হোসেন
কৌটা করে ভাটি ভরে
পানি ধরে রাখি
রৌদ্রতাপে তৃষ্ণা মিটাক
বেঁচে থাকুক পাখি।
সোনার দেশে বাঁচুক পাখি
সোনার পরিবেশে
ইচ্ছেমত উড়ে বেড়াক
স্বাধীন বাংলাদেশে।
ইচ্ছেমত তৃষ্ণা মিটাক
যখন যেথায় খুশি
রৌদ্রতাপে পানি পেয়ে
মুখে ফুটুক হাসি।
লাল সবুজের দেশ
মিনহাজ উদ্দীন শরীফ
রংতুলিতে আঁকে খোকা
গ্রাম বাংলার ছবি;
উদাস মনে যেমন করে
ছড়া লিখেন কবি।
লাল-সবুজের চিত্র আঁকে
পতাকা দেয় নামটা;
লক্ষ প্রাণের আত্মত্যাগের
বাংলাদেশ যার দামটা।
নিবিড়ভাবে ধ্যানে থেকে
রক্তিম সূর্য আঁকে;
মুক্তিকামীর রক্তে ডোবা
দেখায় গিয়ে মাকে।