মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪
Online Edition

দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বিশেষ ভূমিকা রাখছে

খুলনা অফিস : দেশের দক্ষ ও প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ গড়তে খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বিশেষ ভূমিকা রাখছে। প্রতিষ্ঠানটি চরম জনবল সঙ্কটের মধ্যেও বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়ন ও নিরাপদ অভিবাসনে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য বিশ্ব শ্রমবাজারে চাহিদার ভিত্তিতে কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদান, সুষ্ঠু ও সুসংহত অভিবাসন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কর্মপ্রত্যাশি জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করা।

খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলনা শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে নগরীর আড়ংঘাটা থানাধীন তেলিগাতিতে ১৯৭৭ সালের ১ অক্টোবর ১২.৫১ একর জমিতে বিশ্বব্যাংকের আইডি’র প্রকল্পের আওতায় স্থাপিত হয়। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮৫ সালে ১ জানুয়ারি মাত্র ৪টি ট্রেড নিয়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করে বর্তমানে ট্রেডের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭টি। প্রতিষ্ঠানটি বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং বৃত্তিমূলক কারিগরি প্রশিক্ষণ দুই ভাগে বিভক্তে তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এসএসসি ভকেশনালের আওতায় প্রতিষ্ঠানটিতে নবম ও দশম শ্রেণিতে মোট ৫৯৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে অপরদিকে ট্রেকনিক্যাল ট্রেনিং কোর্সে এবং জেনারেল ট্রেনিং কোর্সের আওতায় সেইফ কোর্সে বছরে ৪২০ জন, কম্পিউটার কোর্সে ১১০ জন, মোটর ড্রাইভিং কোর্সে ৮০ জনসহ বিভিন্ন ভাষা শিক্ষা কোর্সে ৮০ জন, খুলনা জেলা থেকে প্রাক বহির্গমন ব্যক্তিদের ৩ দিনের মৌলিক প্রশিক্ষণ কোর্সের ১১৩তম ব্যাচ পর্যন্ত ৪৭ হাজার ৫জন তাদের প্রশিক্ষণ শেষ করেছে। এছাড়া এই প্রতিষ্ঠান থেকে সদ্য সমাপ্ত স্টেফ কোর্স থেকে ২ হাজার ৭ জন তাদের প্রশিক্ষণ কার্যাক্রম শেষ করেছে এবং চলমান সেইফ কোর্স থেকে ২ হাজার ৬৬২ জন প্রশিক্ষণ শেষ করেছে।

খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মঞ্জুরিকৃত ১৪৫টি পদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক পদই রয়েছে শূন্য। এর মধ্যে শূন্য রয়েছে উপাধ্যক্ষ পদ, ৫টি চীফ ইন্সট্রাক্টরের মধ্যে ৩টি পদই শূন্য, সিনিয়র ইন্সট্রাক্টর ২৬টি পদের মধ্যে ১৬টি পদ শূন্য, ৪৬টি ইন্সট্রাক্টর পদের মধ্যে ২৮টি শূন্য রয়েছে, সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর পদটিও শুন্য, প্রধান সহকারী পদ শূন্য, উচ্চমান সহকারী দুটি পদের মধ্যে ১টি শূন্য পদ, হিসাবরক্ষক পদ ১টি তাও শূন্য, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ৪টি পদের মধ্যে ৪টি পদই শূন্য, হোস্টেল সুপারের পদটি শূন্য রয়েছে। চরম জনবল সঙ্কট আর অবকাঠামো, আসবাপত্র এবং যন্ত্রপাতির সঙ্কটের মধ্যেও প্রতিষ্ঠানটি তাদের সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। নানা প্রতিকূলতার মধ্যে আশার কথা হলো প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ সরকার এবং কোরিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি আধুনিকায়নে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। চলতি বছরের জুলাই থেকে এই প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম দৃশ্যমান হওয়ার কথা রয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ১৯৭৭ সালের নির্মিত জরাজীর্ণ একাডেমিক ভবন ভেঙে নতুন দশতলা বিশিষ্ট ভবন, ডাবল লিফটের দশতালা বিশিষ্ট অডিটরিয়াম ভবন, ওয়ার্কশপ ভবন, আধুনিক গাড়ির গ্যারেজ, সাবস্টেশনসহ প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপক পরিবর্তন হতে চলেছে। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মেহেদী হাসান বলেন, দেশের পুরাতন ১১টি টিটিসির মধ্যে এটি অন্যতম ও বৃহত্তম প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। এখানে অবকাঠামোগত সমস্যা অত্যন্ত প্রকট। আবাসিক ভবন, ওয়ার্কশপ ভবনসহ দীর্ঘদিনের পুরাতন ভবনসমুহ জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপুর্ণ হয়ে পড়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠনটির সামনের বাউন্ডারী ঘেষে বিভিন্ন দোকানপাট নির্মাণ করায় প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ ও সৌন্দর্য্য নষ্ট হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি অতি শিগগিরই বড় ধরনের মর্ডানাইজেশন ও রিনোভেশনের কাজ শুরু হবে। যা বাস্তবায়ন হলে দীর্ঘদিনের অবকাঠামোগত সকল সমস্যার সমাধান হবে। এছাড়া আরও বিবিধ ফ্যাসিলিটি ও সক্ষমতা প্রাপ্ত হয়ে দক্ষতা উন্নয়নে উচ্চমানের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্ববাজারে এই প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিত্ব করার আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ