শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

বছরে তিন লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত এক লাখের মৃত্যু -স্বাস্থ্যমন্ত্রী

 

সংসদ রিপোর্টার: দেশে প্রতিবছর প্রায় তিন লাখেরও বেশি মানুষ ক্যান্সার আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। আবার বছরে ক্যান্সার আক্রান্ত এক লাখ রোগী মারা হচ্ছে বলে জানান তিনি। তামাক দূষণ, অনিরাপদ, খাদ্যাভ্যাসের কারণে এ ধরনের রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এ বিষয়ে জনসচেতনতা ও চিকিৎসা সেবার মান বাড়াতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে বলে জানান তিনি।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে এম, আবদুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১) এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে বিকাল সোয়া ৪টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ক্যান্সার চিকিৎসার পরিধি বৃদ্ধি, সহজলভ্য ও মানোন্নয়নে সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। জাতীয়ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালকে ২০০৯ সালে ৫০ শয্যা হতে ১৫০ শয্যায় এবং ২০১৫ সালে ১৫০ শয্যা হতে ৩০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যান্য মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যান্সার ইউনিটের শয্যা সংখ্যাও বৃদ্ধির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

ক্যান্সার চিকিৎসার ঔষধ ( কেমোথেরাপি) উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিনামূল্যে রোগীদের প্রদান করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, দরিদ্র রোগীদের জন্য হাসপাতালের সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে বিশেষ অনুদান দেয়া হচ্ছে। জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা-ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যান্সার চিকিৎসার  জন্য অত্যাধুনিক রেডিওথেরাপি চিকিৎসার আধুনিক নতুন মেশিন ইতোমধ্যেই সংযোজন করা হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে মহিলাদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য কয়েকটি ব্রাকিথেরাপি মেশিন স্থাপন করা হয়েছে।

নকল- ভেজাল ঔষধ বিক্রি বন্ধে মডেল ফার্মেসি- মেডিসিন শপ স্থাপন 

সরকার ভেজাল, নকল ও মানহীন ঔষধ বিক্রি বন্ধে দেশের বিভাগীয় শহরসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মডেল ফার্মেসি ও মডেল শপ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে সংসদকে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। গতকাল সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বেগম মাহজাবিন খালেদে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জানান, সরকার ইতোমধ্যে ঢাকাসহ সারাদেশে ৩৯৫টি ফার্মেসি ও মডেল মেডিসিন শপ হিসাবে অনুমোদন দিয়েছে। এসব ফার্মেসি ও মডেল মেডিসিন শপ থেকে জনগণ মানসম্মত ঔষধ কেনার পাশাপাশি ঔষধের ব্যবহারবিধি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবে। সারাদেশব্যাপী মডেল ফার্মেসি ও মডেল মেডিসিন শপ প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে 

১১ কোটি ১০ লাখ ৩১ হাজার টাকা জরিমানা

 ভেজাল, নকল ও মানহীন ঔষধ বাজারজাতকরণ ও বিক্রি বন্ধে সরকার কঠোরতা অবলম্বল করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, জানুয়ারি ২০১৬ থেকে জুলাই ২০১৮ পর্যন্ত সারাদেশে ভেজাল ও নকল ঔষধ উৎপাদন ও বিক্রির দায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৪ হাজার ৮৪৯ টি মামলা দায়ের করে ১১ কোটি ১০ লাখ ৩১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে, ৯৯জন আসামীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- দেয়া হয়েছে, ৫৭টি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়েছে এবং আনুমানিক ৩৬ কোটি টাকার ঔষধ জব্দ ও ধ্বংস করা হয়েছে।

এছাড়া একই সময়ে  ভেজাল, নকল ও নিম্নমানের ঔষধ উৎপাদন ও বিক্রি করার দায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ড্রাগ কোর্টে ৬০টি এবং লাইসেন্স বিহীন ঔষধ বিক্রির দায়ে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ৯১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

বেগম নাসরিন জাহান রতনার এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দেশে বর্তমানে ৩১টি সরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরে ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৪ টি মেডিকেল কলেজ স্থাপণ করা হয়েছে। এগুলো হলো- যশোর মেডিকেল কলেজ, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম  মেডিকেল কলেজ- কিশোরগঞ্জ, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ, শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ-গোপালগঞ্জ,  শহীদ তাজউদ্দিন আহম্মদ মেডিকেল কলেজ, মানিকগঞ্জ, শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ- টাঙ্গাইল, শহীদ এম মনসুর আহমেদ আলী মেডিকেল কলেজ-সিরাজগঞ্জ, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ,  রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ, মুগদা মেডিকেল কলেজ এবং হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ। এছাড়া অতিসম্প্রতি নেত্রকোণা, নওগাঁ, নীলফামারী, মাগুরা ও চাঁদপুর এ ৫টি জেলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পাওয়া গেছে, এ বিষয়ে দ্রুত কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ