শুক্রবার ২৪ মার্চ ২০২৩
Online Edition

দেশে মাত্র ৩১ লাখ করদাতা এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক -অর্থমন্ত্রী

সংসদ রির্পোটার : ১৬ কোটি মানুষের দেশে মাত্র ৩১ লাখ করদাতা থাকা অত্যন্ত লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ২০২১ সালের মধ্যে এই সংখ্যা ৫০ লাখে উন্নীত করার চেষ্টা বলছে বলেও জানান তিনি।
গতকাল বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শামসুল হক চৌধুরীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, কর এর জাল বিস্তারের জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু দীর্ঘদিন হলো এর কোনো ফলপ্রসূ সুফল পাইনি। অধুনা কর প্রদানে উৎসাহ বেড়েছে। দুই বছর আগেও করদাতা ছিল ১৪ লাখ, এখন সেই সংখ্যা ৩১ লাখে উন্নীত হয়েছে। এখানে আমরা যে খুব বেশি অবদান রাখছি তা নয়।
তিনি আরো বলেন, তবে আমাদের দু’টি অবদান বলা যেতে পারে। আগে হয়রানির যে অভিযোগ ছিল সেই অভিযোগ মোটামুটি নিয়ন্ত্রণ করেছি। আগে কর অফিসে গেলে মানুষ ভয় পেতো, সেটা আর এখন নেই। এখন কর যারা আদায় করেন তারাও মানুষ। এরপর করদাতার সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু ১৬ কোটি মানুষের দেশে এই ৩১ লাখ করদাতা, এটা লজ্জার বিষয়। অন্ততপক্ষে ১৬ কোটি মানুষের দেশে ১ কোটি ৬০ লাখ করদাতা হওয়া উচিত।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি টার্গেট করেছি ২০২১ সালের মধ্যে করদাতার সংখ্যা ৫০ লাখে উন্নীত করার। সেজন্য প্রয়োজন বিভিন্ন ধরনের জরিপ। আমরা প্রথমে ঢাকায় ছাত্র-ছাত্রী পাঠিয়ে জরিপ করে যারা কর প্রদানে সক্ষমদের বিভিন্ন জনকে কর দেওয়ার নোটিশ দেবো। সেটা পরবর্তীতে জেলায়ও প্রসার করা হবে। কর মেলা করা হয়। মেলায় ভালো করও আদায় হয়। এজন্য নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে কর আদায়ে মেলা করি।
সরকারি দলের ইসরাফিল আলমের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত ৪ বছরে আয়কর আহরণ প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৬৩ হাজার ৭৮২ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। ২০১৩ সালের জুনে আয়কর বাবদ আহরণ করা হয়েছিল ৩৭ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। এই রাজস্ব আহরণ ২০১৭ সালের জুন মাসে প্রায় দ্বিগুণে দাঁড়ায়।
মন্ত্রী বলেন, ২০১৩ সালে দেশে রেজিস্টার্ড কর দাতার সংখ্যা ছিল প্রায় ১২ লাখ, এই সংখ্যা চলতি বছরের জানুয়ারিতে দাঁড়িয়েছে ৩৩ লাখে। শুধু করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধিই নয়, করদাতাদের কর প্রদানের সক্ষমতার হারও বেড়েছে।
তিনি বলেন, ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে মূল্য সংযোজন কর ও আমদানি পর্যায়ে প্রদেয় আমদানি শুল্ক প্রদানের সক্ষমতা  বেড়েছে। ২০১৩ সালের জুন মাসে আমদানি শুল্ক ও মূসক আহরণের পরিমান ছিল যথাক্রমে ৩২ হাজার ৩১৩ কোটি ও ৩৯ হাজার ১২৯ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৫৪ হাজার ৩৩০  কোটি ও ৬৬ হাজার ৮৯১ কোটি টাকা।
আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ২০১২-১৩ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১২ হাজার ২৫৯  কোটি টাকা, আহরণ হয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ১৫১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এ সময়ে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা, আহরণ হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৮১৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এ সময়ে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১০ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩৫ হাজার ২৮ কোটি টাকা, আহরণ হয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৭শ’ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এ সময়ে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১২ দশমিক ৩২ শতাংশ। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা, আহরণ হয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৫১৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা। এ সময়ে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১৪ দশমিক ৬০ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা, আহরণ হয়েছে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এ সময়ে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ