ব্যাংক লুটপাটকারীদের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশের দাবি সংসদে
সংসদ রিপোর্টার : ব্যাংক লুটপাটকারিদের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশের দাবি জানানো হয়েছে জাতীয় সংসদে। একইসঙ্গে ব্যাংক জালিয়াতি ঘটনায় সরকার ও আওয়ামী লীগকে বিব্রত করছে বলে দাবি করেন এমপিরা।
বৃহষ্পতিবার সংসদে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত প্রস্তাব উত্থাপন করে সরকার দলীয় এমপি ইসরাফিল আলম। তিনি বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরের ব্যর্থতায় সরকারের সকল সফলতা ম্লান করে দিচ্ছে। পরে বিষয়টি নিয়ে বিবৃতিতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ বিষয়টিকে আমলে নিয়ে বলেন, আমি স্বীকার করি এখনো সমস্ত ব্যবস্থাটি সম্পূর্ণ ত্রুুটিমুক্ত নয়। কিন্তু আমাদেও চেষ্টার কোন কমতি আছে বলে আমি মনে করি না। শুধু চাইলেই একটা জিনিস পাওয়া যায় না। এটাকে কার্যকরি করতে সময় লাগে। এখানে দেখতে হয় যে অনুশাসন বা বিধান আমরা করছি, সেটা যেন প্রয়োগবাদী হয় সেটাই আমাদের লক্ষ্য। মুহিত বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরের সমস্ত ব্যবস্থা ত্রুটিমুক্ত নয়। তবে ত্রুুটিমুক্ত করতে সরকারের চেষ্টার কোনো ত্রুুটি নেই। এদিকে ইসরাফিল আলমের সিদ্ধান্ত প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়ে সংশোধনী প্রস্তাব দেন ১০ এমপি। তবে প্রস্তাব উত্থাপনের সময় ৩ জন উপস্থিত ছিলেন না। বাকীরা তাদের সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করেন। তারা হলেন-আওয়ামী লীগ মনোনিত সংরক্ষিত সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নাভানা আক্তার, ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি, মনিরুল ইসলাম, নুরজাহান বেগম, উম্মে রাজিয়া কাজল এবং জাতীয় পার্টি মনোনিত সংরক্ষিত সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান।
সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নিয়মকানুন প্রতিষ্ঠার লক্ষে অনেক বড় বড় পদক্ষেপগুলো সরকার গ্রহণ করেছে। অনেক উচ্চপদস্থ ব্যাংক কর্মকর্তারা ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর পর্যন্ত তাদের বিভিন্ন রকমের শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। আমি স্বীকার করি এখনো সমস্ত ব্যবস্থাটি সম্পূর্ণ ত্রুুটিমুক্ত নয়। কিন্তু আমাদেও চেষ্টার কোন কমতি আছে বলে আমি মনে করি না। শুধু চাইলেই একটা জিনিস পাওয়া যায় না। এটাকে কার্যকরি করতে সময় লাগে। এখানে দেখতে হয় যে অনুশাসন বা বিধান আমরা করছি, সেটা যেন প্রয়োগবাদী হয় সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সিদ্ধান্ত প্রস্তাব উত্থাপন করে ইসরাফিল আলম বলেন, আর্থিক খাত ও ব্যাংকিং সেক্টর নিয়ে সবসময় কোনো না কোনো বিতর্কে আমাদেরকে প্রায়ই বিব্রত, বাকরুদ্ধ ও হতাশ হতে হয়। যারা আইন প্রয়োগের দায়িত্বে রয়েছেন তাদের ব্যর্থতার কারণে ব্যাংকিং সেক্টর এই সংকটে পতিত হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগকেও বিব্রত হতে হচ্ছে। ব্যাংক খাতে এই বিশৃঙ্খলার কারণে দেশের আর্থিক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে রাষ্ট্রের সুশাসন ব্যহত হয়। ব্যাংক থেকে নামে বেনামে টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। ব্যাংকের পরিচালকসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা এর সঙ্গে জড়িত এটা সাদা চোখেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়নি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় যথাযথ ছিল না। অনেক ব্যাংককে হাজার হাজার কোটি টাকা সরকারকে জোগান দিতে হচ্ছে। এইসব টাকা সাধারণ মানুষের ঘাম ঝরানো টাকা। সাধারণ মানুষ ব্যাংকে টাকা রেখে পায় না, এই নজির বাংলাদেশে কম ছিল। সরকারের সফলতা ম্লান করে দিচ্ছে ব্যাংকিং সেক্টরের এই ব্যর্থতা। কারা এই টাকা লুটপাট করেছে, কারা এর সঙ্গে জড়িত এদের নাম তালিকা ওয়েব সাইডে প্রকাশ করতে হবে।