লঞ্চ ডুবির কবল থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেল ৫ শতাধিক যাত্রী
এম. তরিকুল ইসলাম লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) সংবাদদাতা : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশ দ্বার বলে পরিচিত শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ী নৌ-রুটে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে ৭ থেকে ৮ গুণ যাত্রী বোঝাই করে চলাচল করছে এ নৌ-রুটের লঞ্চগুলো । আর এসব বিষয়গুলো দেখার জন্য বি.আই.ডব্লিউ.টি এর নৌ নিরাপত্রা ও ট্রাফিক ব্যাবস্তাপনা বিভাগ (নৌ নিট্রা) ঘাটে একজন এডি, তিনজন টিআই ও শিমুলিয়া ঘাটে একজন বাদিং সারেং দিয়েছে। কিন্তু তাদের চোখের সামনেই নানা ধরনের অনিয়ম করে এক শ্রেণির লঞ্চ মালিক ও স্টাফরা অতিরিক্ত যাত্রী বোজাই করে এ নৌ-রুটের পদ্মা নদী পারি দিচ্ছে যার ফলে যে কোন সময়ে ঘটতে পারে পিনাক-৬ এর চেয়েও বড় ধরনের দূঘটনা। আর এসবের জন্য নাম প্রকাশ না করার শর্থে এ রুটে চলাচলরত একাধীক লঞ্চ মালিক , লঞ্চ স্টাফ ও লঞ্চ সংশ্লিস্টরা ঘাটে দায়িত্ব পালনরত বি.আই.ডব্লিউ.টি এর নৌ নিরাপত্রা ও ট্রাফিক ব্যাবস্তাপনা বিভা গের (নৌ নিট্রা) সহকারী পরিচালক (এডি) শাহাদাৎ হোসেনের ঘাফলতি, ক্ষামখেয়ালীপনা, একঘেয়ামী ও চাঁদাবাজিকেই দায়ী করছেন। এক তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায় এ নৌ-রুটে ৮৭টি লঞ্চ রয়েছে । এসব লঞ্চ থেকে প্রতিদিন ১০০ টাকা করে দৈনিক ৮৭০০ টাকা করে লঞ্চের সুপার ভাইজার ও কখনোবা বাদিং সারেং মোয়াজ্জেমের মাধ্যমে এসব চাদাবাজির টাকা উঠানো হয় এবং সন্ধ্যার পরে নির্ধারিত লঞ্চ যাওয়ার পরে আতিরিক্ত ট্রিপ এর ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা করে রাখা হয় । যে সব লঞ্চের মালিকরা এসব টাকা দিতে গরিমিশি করে তাদেরকে ভিবিন্ন প্রকার মামলা মোকদ্দমার ভয় দেখানো হয় বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক লঞ্চ মালিক ও স্টাফরা জানান।যার ফলে একান্ত বাধ্য হয়েই লঞ্চ মালিকদের এসব চাদার টাকা দিতে হচ্ছে এডি শাহাদাতকে। এভাবেই প্রতিমাসে ২লক্ষ ৬০ হাজার থেকে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা চাদাবাজি করে হাতিয়ে নিচ্ছে এডি। এ দিকে গত ১৬ ডিসেম্বর শনিবার রাতে কাঠালবাড়ী ঘাট থেকে অতিরিক্ত যাত্রী বোজাই করে ছেড়ে আসা শিমুলিয়া গামী হাসান খান ট্রাসফোর্টের (এম.১৫১২২) এমভি রিয়াদ এক্রপ্রেস লঞ্চটি পদ্মায় প্রায় ৫ শতাধীক যাত্রী নিয়ে ডুবার কবলে পরে।পরে লঞ্চে থাকা যাত্রীদের আৎচিতকারে কারণে মাজ নদীর চরে কিছু যাত্রী নামিয়ে দিয়ে। পুনরায় লঞ্চটি অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে রাত পৌনে ৯ টার দিকে লঞ্চটি শিমুলিয়া ঘাটে আসে । লঞ্চটি ঘাটে ভিরার সাথে সাথেই লঞ্চে থাকা যাত্রীরা মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানায় এ সময়ে কথা হয় ঐ লঞ্চের যাত্রী বরিশাল থেকে আসা বেসরকারী চাকুরীজিবী বাকেরগঞ্জের মৃত আবুল হাসেমের পুত্র মো. বাদল, খুলনা থেকে আসা ব্যাবসায়ী মনোজ হাওলাদার, খুলনা সদরের বাসিন্দা ব্যাংকার মর্তুজা হোসেন, মো. সাইদুর রহমান, মজনু, রুবেল ও আবুল কাসেমের সাথে তারা বলেন লঞ্চের সামনে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা লিখা রয়েছে দিনে ২৪০ ও রাত্রে ৮৬ জন কিন্তু আমরা বারবার বলার পরেও জোর করে প্রায় ৫ শতাধীক যাত্রী উঠায় লঞ্চটিতে। লঞ্চটি এ নৌ-রুটের চ্যানেলে আসলে লঞ্চটির ভিতরে পানি উঠতে শুরু করলে লঞ্চটি ডুবতে বসে ,এ সময়ে যাত্রীরা আল্লাহর নাম জপতে থাকে, পরে কিছু যাত্রী মাজ নদীর চরে নামিয়ে দিয়ে লঞ্চটি শিমুলিয়া ঘাটে চলে আসে। এসময়ে একটি কাটা সার্ভিসের সুপার ভাইজারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন লঞ্চটিতে সোহাগ, সার্বিক পরিবহনসহ ৩টি পরিবহন গাড়ীর যাত্রী ছারাও অংসখ যাত্রী ছিলো।
লঞ্চ স্টাফরা জানান -হ্যাচ কভারের কটটি লাগানো হয়নি তাই পানি উঠছিলো পরে হ্যাচ কভারের কটটি লাগিয়ে দিলে পানি উঠা বন্ধ হয়ে যায়। এরকম অতিরিক্ত যাত্রী প্রায় সব লঞ্চই বহন করে। এ ব্যাপারে মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির আইসি এসআই শরজিৎ কুমার ঘোষ বলেন খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আমি ও এএসআই শরিফুল ইসলাম, জেলা পুলিশের ডিএসবি মো. সোহরাফ হোসেন ও নৌ-পুলিশের সদস্যরা মিলে আটকে পরা যাত্রীদের উদ্বার করে ঘাটে নিয়ে আসি। এসময়ে তিনি এডি শাহাদাৎএর প্রসঙ্গ উঠলে তিনি বলেন এডি সাহেবকে একটু আগে মোবাইলকরে ব্যাপারটি জানালে, এবং অতিরিক্ত যাত্রী বহন করার ব্যাপারটি বললে তিনি উল্টো আমাকে বলেন, এসব একদম আমার নিজিস্ব ব্যাপার এসব নিয়ে অপনাদের কথা বলতে হবেনা। এসময়ে তিনি বলেন, যাত্রীদের উদ্ধার করে তো আমাদের আনতে হয় জবাবে এডি শাহাদাৎ বলেন, লঞ্চ ডুবুক আর যাই হোক, আমার ব্যাপার আপনার কি? বলে লাইনটি কেটে দেন। উল্লেখ নৌ-পুলিশ যাত্রীদের নিরাপত্রা ও অতিরিক্ত যাত্রী বহনের ব্যাপারে সর্বদা সজাগ ও সচেতন থাকলেও এডি শাহাদাৎ হোসেনের কারনে নৌ-পুলিশের সদস্যরা স্বাধীন ভাবে ঘাটে দায়িত্ব পালন করতে পারেনা। এসব ব্যাপারে এডি শাহাদাৎ হোসেনের এর মোবাইলে কয়েকদফা কল দিলেও তাকে মোবাইলে পাওয়া যায়নি।