টমেটোসহ অধিকাংশ সবজির দাম বৃদ্ধি
স্টাফ রিপোর্টার : এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৭০ থেকে ৮০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে টমেটো। একই সাথে শশা, গাজরসহ অধিকাংশ সবজির দাম বেড়েছে। তবে চালের দাম মিল ও পাইকারি পর্যায়ে কেজি প্রতি ২ থেকে ৩ টাকা কমেছে। খুচরা পর্যায়ে চালের দাম কমতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা।
গতকাল শুক্রবার রাজধানী বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে কাঁচাবাজারে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে টমেটোর দাম। গত সপ্তাহে টমেটোর দাম ছিল প্রকারভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। বর্তমানে দাম বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি। শুধু টমেটো নয় প্রায় সব সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা।
বিক্রেতাদের বক্তব্য দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা থাকার কারণেই কাঁচাবাজারে তার প্রভাব পড়েছে।
অস্বাভাবিকভাবে টমেটোর দাম বাড়ার প্রসঙ্গে সবজি ব্যবসায়ী মতিউর রহমান বলেন, কিছুদিন ধরে দেশী টমেটো বাজারে তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না। আর এলসি করা অর্থাৎ ভারত থেকে আনা টমেটোর দাম পাইকারি বাঁজারে বেশি থাকার কারণে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজি বেগুন ১৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা, শসা ১০-১৫ টাকা বেড়ে ৫০-৬০ টাকা। ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ৩৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। করলা কেজি প্রতি ২৫ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ১০ টাকা বেড়ে ৩০-৩৫ টাকা, ঝিঙা ৫০ টাকা, পটল ৪৫ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, মূলা ৪০, কচুর লতি ৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ১০০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতিটি ৭০ টাকা, গাজর ৬০, কাঁকরোল ৬৫ টাকা, পুঁইশাক প্রতি আটি ২০ টাকা, লালশাক ১০ টাকা ও লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, ধনে পাতা আটি ১০ থেকে ১৫ টাকা।
এদিকে মিল ও পাইকারি পর্যায়ে সব ধরনের চালে কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তবে মিল ও পাইকারি বাজারে চালের দাম কমলেও খুব বেশি প্রভাব পড়েনি খুচরা পর্যায়ে। ফলে স্বস্তি ফেরেনি ভোক্তাদের মাঝে।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, ইতোমধ্যে সব ধরনের চালে ২ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে। পাইকারি বাজারে সবেমাত্র চালের দাম কমানো হয়েছে; আমরাও চালের দাম কমিয়েছি। আগের চালগুলো বিক্রি শেষ হলে নতুন চাল আনার পর খুচরা বাজারে চালের দাম আরও কমবে।
চালের বাজারে দেখা গেছে, মোটা স্বর্ণা চাল ২ টাকা কমে প্রতি কেজি ৪৬ টাকা, পারিজা চাল ৪৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া মিনিকেট (ভালো মানের) ২ টাকা কমে ৫৬-৫৮ টাকা, মিনিকেট (সাধারণ) ৫৪-৫৬ টাকা, বিআর২৮ ৫০ টাকা, সাধারণ মানের নাজিরশাইল ৫২ টাকা, উন্নত মানের নাজিরশাইল ৫৪ টাকা, পাইজাম চাল ৪৮-৫০ টাকা, বাসমতি ৫৪ টাকা, কাটারিভোগ ৭৪-৭৬ টাকা এবং পোলাও চাল (পুরাতন) ১০০ টাকা, (নতুন) ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বাজার দর পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি চালে ১ থেকে ২ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
বাজারে কেজিপ্রতি দেশী পেঁয়াজ ২৮ টাকা; ভারতীয় পেঁয়াজ ২৮ টাকা; দেশী রসুন ১০০ টাকা; ভারতীয় রসুন ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। হাইব্রিড টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা; দেশী টমেটো ৯০ দরে। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ৮০ টাকা; আলু ২৩ টাকা।
মুদি বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ছোলা ৮৫ টাকা; দেশী মুগ ডাল ১৩০ টাকা; ভারতীয় মুগ ডাল ১২০ টাকা; মাসকলাই ১৩৫ টাকা, দেশী মসুর ডাল ১২৫ টাকা; ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া ৫ লিটারের ভোজ্য তেলের বোতল ব্র্যান্ড ভেদে ৫০০-৫১০ টাকা; প্রতি লিটার ভোজ্য তেল ১০০-১০৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দারুচিনি ৩৬০ টাকা; জিরা ৪৫০ টাকা; শুকনা মরিচ ২০০ টাকা; লবঙ্গ ১৫০০ টাকা; এলাচ ১৬০০ টাকা; চীনের আদা ১২০ টাকা এবং ক্যারালা আদা ১৪০ টাকা; হলুদ ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে দেখা গেছে, আকার ভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০-৩৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩৫০-৪৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ২০০-২৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১৫০-২৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০-৮০০ টাকা, প্রকার ভেদে চিংড়ি ৪০০-৮০০ টাকা, প্রতিটি ইলিশ ৮০০-১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে; প্রতি কেজি ইলিশের দাম রাখা হচ্ছে ১৬০০ টাকা।
ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা; লেয়ার মুরগি ২২০ টাকা; দেশী মুরগি প্রতি পিস ৪০০ টাকা; পাকিস্তানি লাল মুরগি ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর গোশত ৫০০-৫২০ টাকা; খাসির গোশত ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।