ঈদ মহান আল্লাহর আনন্দোপহার
সালমা নাসরিন সিদ্দিকী : ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে উৎসব। মুসলিম জাহানের সবচেয়ে বড় আনন্দের দুটি দিন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। এ দুটি ঈদ মুসলিমদের জন্য মহান রাব্বুল আ’লামীনের পক্ষ থেকে বিশেষ উপহার।
প্রিয়নবী (সা.) মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনায় এলেন। দেখলেন এখানকার লোকেরা বছরে দুটি উৎসব পালন করে। আনন্দ ফূর্তির মধ্যে পুরো দিন কাটায়। দিনভর খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকে। রাসূল (সা.) তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কিসের উৎসব পালন কর? লোকেরা বলল, আমরাতো জাহেলি যুগ থেকেই এই উৎসব পালন করে আসছি। আমরা এ দু’দিন খেল-তামাশা করে করে কাটাই। অতঃপর রাসূল (সা.) বলেন, “আল্লাহ তা’য়ালা তোমাদেরকে সে দুটি দিনের পরিবর্তে আরো উত্তম দুটি দিন উপহার দিয়েছেন- একটি ঈদুল ফিতর আর অপরটি ঈদুল আযহা। এখন থেকে খুশী ও আনন্দের দিন হিসেবে এ দু’টি দিন উদযাপন কর।”
পবিত্র মাস মাহে রমযান সমাগত। চারদিকে রমযানের প্রস্তুতির চেয়ে ঈদুল ফিতরের প্রস্তুতি চোখে পড়ার মত। অথচ সঠিকভাবে রমযান পালন ছাড়া ঈদের আনন্দ যে পুরোপুরি তাৎপর্যহীন তা অনেকেই বুঝতে পারে না। ঈদুল ফিতরের মূল তাৎপর্য কতই না চমৎকার। হযরত সা’দ বিন আওম আনসারী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, ঈদুল ফিতরের সকালে আল্লাহ তা’আলা সকল শহরে ফেরেশতাদের পাঠান, তারা প্রত্যেক রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়ান। অতঃপর উচ্চস্বরে ঘোষণা করেন যা জ্বীন ও মানুষ ব্যতীত সকল প্রাণী শুনতে পায়। তারা বলেন,
“হে মুহাম্মাদের উম্মত! তোমরা এক করুণাময় প্রতিপালকের দিকে বেরিয়ে এস, যিনি পর্যাপ্ত পরিমাণে দান করেন এবং বড় বড় গুনাহ মাফ করেন। যখন তারা ঈদগাহে সমবেত হয় তখন আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে বলেন- কোন শ্রমিক যখন তার কাজ সম্পন্ন করেন তখন তাকে কি প্রতিদান দেয়া উচিত?
ফেরেশতারা বলেন, হে আমাদের প্রভু! তার প্রতিদান এই যে, তার প্রাপ্য পুরোপুরিভাবে দেয়া হোক। আল্লাহ বলেন, তাহলে তোমাদেরকে সাক্ষী রেখে বলছি, আমি তাদের রমযানের রোযা ও রমযানের রাতের নামাযের প্রতিদান হিসেবে তাদের জন্য আমার ক্ষমা ও সন্তোষ ঘোষণা করলাম। আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন, হে আমার বান্দারা, তোমরা আমার কাছে ক্ষমা চাও। আমার সম্মান ও প্রতাপের শপথ, আজ তোমরা তোমাদের আখিরাতের সঞ্চয়ের জন্য যা কিছু চাইবে তা আমি দেব। আর দুনিয়ার জন্য যা কিছু চাইবে, তা আমি বিবেচনা করব। আমার মর্যাদার শপথ, আমি তোমাদের ভুলত্রুটি ক্ষমা করব যতক্ষণ তোমরা আমার দিকে মন নিবিষ্ট রাখবে। আমার সম্মান ও প্রতাপের শপথ, আমি তোমাদেরকে অপমানিত করবো না। তোমাদেরকে অপরাধীদের সামনে লাঞ্ছিত করবো না। তোমরা আমাকে সন্তুষ্ট করেছ। আমি তোমাদের উপর সন্তুষ্ট হয়েছি। এরপর ফেরেশতারা আনন্দিত হয় এবং রমযান শেষে এই উম্মতকে আল্লাহ তায়ালা যা দান করেন, তাতে সন্তুষ্ট হয়ে যায়। (বায়হাকী)
ঈদুল ফিতরের দিন রোযাদারদের পুরস্কারের দিন। আর তাদের জন্যই ঈদ পুরস্কার হিসেবে আসবে যারা পরিপূর্ণ হক আদায় করে রোযা রাখে। পুরো রমযান মাসব্যাপী কে কতটা নিষ্ঠা সহকারে সিয়াম সাধনা করতে পারল, রমযানের রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের সুযোগ গ্রহণ করতে পারলো, নিজের আমলনামা ভারী করার সাথে সাথে গুনাহগুলো মাফ করিয়ে নিতে পারল এটাই হতে পারে আনন্দ পরিমাপের মাপকাঠি। অথচ বর্তমান সমাজ এ মৌলিক চেতনা থেকে আজ বহুদূরে সরে গেছে। রমযানে সিয়াম পালন না করেও তারা আনন্দ উৎসবে মত্ত। আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ও ইসলামী চেতনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যেখানে সবাই পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য প্রতিযোগিতা করবে সেখানে আজ সবাই নতুন জামা-কাপড়, গয়না, খাদ্যদ্রব্যের বিলাসিতা নিয়ে প্রতিযোগিতায় মত্ত। পুরো রমযান মাস জুড়ে কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকায় অনেকেই হয়তো সঠিকভাবে সিয়াম পালন, সালাত আদায় করতে পারে না। বিপণীবিতানের উপচে পড়া ভিড়ে ইজ্জত-আব্রু, পর্দার যে লংঘন হচ্ছে সে ব্যাপারেও সবাই যেন উদাসীন। ঈদের দিন মুসলমানরা সাধ্যের মধ্যে ভাল জামাকাপড় পরবে, সুসজ্জিত হবে, ধনী-দরিদ্র সবাইকে সাধ্যমত আপ্যায়ন করানোর চেষ্টা করবে এটাই রাসূল (সা.)-এর সুন্নাত। কিন্তু আনন্দের মাঝে বাড়াবাড়ি ইসলাম কখনোই পছন্দ করে না। যেখানে রাসূল (সা.)এর যুগে ঈদের আনন্দের মাঝে রূহানী পরিবেশ বিরাজ করত, সেখানে আজ ঈদের আনন্দকে দুনিয়াবী রূপ দেয়া হচ্ছে। ইসলাম যে ধরণের আনন্দকে নিষেধ করেছে তার মাধ্যমেই সবাই ঈদ উদযাপনের চেষ্টা করছে। সপ্তাহব্যাপী থেকে এখন দশ/বারো দিন জুড়ে টিভিতে কুরুচিপূর্ণ অনুষ্ঠানের হিড়িক পড়ে যায়। রমযানের শুরু থেকেই যার বিজ্ঞাপন শুরু হয়ে যায়। দুনিয়াবী দৃষ্টিকোণ থেকে উৎসব মানেই আনন্দ বুঝালেও মুসলমানদের জন্য ঈদের এ দুটি দিন শুধুই আনন্দের নয়। এ আনন্দের মূল চেতনা তাওহীদ থেকে উৎসরিত। যার সাথে জড়িয়ে আছে নিজ প্রভুকে আনন্দ-দুঃখ সর্বাবস্থায় স্মরণ করার শিক্ষা, নিজের আনন্দ সকলের সাথে ভাগাভাগি করে নেয়ার শিক্ষা, সামাজিক সুসম্পর্ক সৃষ্টি ও পারস্পরিক সহযোগিতা, সহমর্মিতা প্রদর্শনের শিক্ষা, ঈদের দিন তাই সর্বপ্রথম সালাত আদায়ের মাধ্যমে মহান রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করে মুসলমানরা।
কেমন ছিল মদীনার সেই ঈদ
আমরা যে ঈদ পালন করি এর সূচনা মদিনা থেকে। আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর আগে। আজ আমরা ঈদকেন্দ্রীক যে বিশাল আনুষ্ঠানিকতা, জাঁকজমকতার আয়োজন করি তখন ছিল না। তবে সেই ঈদে ছিল প্রাণ। লোক দেখানো কোন মনোভাব ছিল না। ঈদ সবার মাঝে এক পবিত্র আনন্দের আবেগ ছড়িয়ে দিত। নতুন জামা-কাপড়, খাওয়া-দাওয়ার অনেক বাহারি আয়োজন না থাকলেও সেই ঈদে আনন্দের কোন কমতি ছিল না। সাহাবীরা একে অপরের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন এই বলে, “তাকাব্বাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা” অর্থাৎ আল্লাহ আমার ও আপনার তরফ থেকে ঈদকে কবুল করে নিন।
বর্তমান সময়ের শালীনতা বিবর্জিত বিনোদনের মাধ্যমে ঈদ উদযাপন সংস্কৃতি থেকে মুসলমানদের দ্রুত বেরিয়ে আসা উচিত। ইসলাম ও শরীয়তের সীমার মাঝে যে কোন নির্মল বিনোদনের অনুমতি দিয়েছে। রাসূল (সা.) এর যুগে ঈদ নীরস ছিল এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই। আয়েশা (রা.) বলেন, ঈদের দিন রাসূল (সা.) ঘরে এলেন। তখন আমার কাছে দুটি মেয়ে গান গাইছিল। তাদের দেখে রাসূল (সা.) অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে শুয়ে পড়লেন। আমার বাবা আবু বকর সিদ্দিক (রা.) এ অবস্থা দেখে আমাকে ধমকাতে লাগলেন। বললেন, নবীজীর কাছে শয়তানের বাঁশি! এ কথা শুনে রাসূল (সা.) বললেন, মেয়ে দুটিকে গাইতে দাও।
আরেক ঈদে আবিসিনিয়ার কিছু লোক লাঠি-সোটা নিয়ে খেলা করছিল। আয়শা (রা.) তা দেখার ইচ্ছা পোষণ করলে রাসূল (সা.) তাঁকে দীর্ঘক্ষণ আড়াল করে রেখে খেলা উপভোগের সুযোগ করে দেন।
মদীনার ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের সাথেও আনন্দ করতেন প্রিয় নবী (সা.)। ঈদের দিন কিছু ভালো খাবারের ব্যবস্থা রাসূল (সা.) এর ঘরেও হতো। সাহাবায়ে কেরামও নিজের সাধ্যমত ভালো খাবারের ব্যবস্থা করতেন। মদিনার অলিতে-গলিতে শিশুরা মেতে উঠতো ঈদ আনন্দে। কত পবিত্র আর নির্মল ছিল সে আনন্দ।
রাসূল (সা.) এর ঈদ উদযাপন
রাসূল (সা.)-এর উদযাপিত ঈদের আদলেই আমাদের ঈদ উদযাপন হওয়া উচিত।
- রাসূল (সা.) ঈদের দিনে বের হয়ে দু’রাকাত ঈদের সালাত আদায় করতেন।
- ঈদের দিন রাসূল (সা.) ঈদগাহে যাওয়ার আগে গোসল করতেন, আতর-খুশবু মাখতেন। ভালো কাপড় পরতেন।
- রাসূল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম ঈদের জামাতে যেতেন পায়ে হেঁটে। যেতেন এক পথে, ফিরতেন অন্য পথে। উভয় পথের লোকদের সালাম দেয়া ও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন এই বলে, “তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা।”
- ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের সালাত আদায়ের পূর্বে খাবার গ্রহণ করতেন। ঈদুল আযহায় কিছু খেতেন না। সালাত আদায়ের পর কুরবানীর গোশত দিয়ে খাবার গ্রহণের সূচনা করতেন।
ঈদ থেকে আত্মপর্যালোচনার, সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার
দীর্ঘ একমাস সংযম শেষে ঈদের দিন মুমিনের আনন্দের দিন। তা সত্ত্বেও এটি প্রকৃত মুমিনের জন্য আত্মসমালোচনার দিন। এজন্যই ঈদের দিন হযরত আবু হুরায়রা (রা.) অর্ধ পৃথিবীর শাসক হযরত ওমর (রা.)-এর বাড়িতে গিয়ে তাকে ক্রন্দনরত দেখতে পান। তিনি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “ইয়া আমীরুল মুমিনীন! সবার মুখে খুশী, উৎফুল্লতার জোয়ার। আপনি খলীফা হয়ে আজ কেন এভাবে কাঁদছেন? হযরত ওমর (রা.) তখন বললেন, “আবু হুরায়রা! তারা যদি এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে থাকে যে বিগত রমযানে তারা আল্লাহর মকবুল বান্দাদের তালিকাভুক্ত হয়েছে, তাহলে তারা আনন্দ করতে পারে। আর যদি আল্লাহর দরবার হতে বিতাড়িত হয়ে থাকে তাহলে কান্নাকাটি করাই উচিত ছিল। আমি জানিনা বিগত রমযানে আমি কি আল্লাহর মকবুল বান্দাদের তালিকাভুক্ত হয়েছি, না বিতাড়িতদের কাতারে শামিল হয়েছি। কি দারুণ আত্মোপলব্ধি।
ঈদ সামাজিক সম্প্রীতির এক অনন্য নিদর্শন। ঈদের এ আনন্দ উদযাপনে উঁচু-নিচু, ধনী-গরীব কোন ভেদাভেদ নাই। বরং অসচ্ছল মুসলিমরাও যেন সুন্দরভাবে ঈদের আনন্দে শরীক হতে পারে তার জন্য সচ্ছল মুসলিমদের উপর সাদাকায়ে ফিতর ধার্য করা হয়েছে। রাসূল (সা.) ঘোষণা করেছেন, “সাবধান! সাদাকায়ে ফিতর প্রত্যেক মুসলমান নারী-পুরুষ, আযাদ-গোলাম ও ছোট-বড় সকলের উপর ওয়াজিব।”
গোলাম ও নাবালকদের সাদকা অভিভাবক পরিশোধ করবেন। এমনকি এই সাদকা যাতে বিত্তহীনদের কেনাকাটা ও মেহমানদারিতে সহায়ক হয়, তাই ঈদের নামাযের পূর্বেই পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। ঈদ সারা বিশ্বের মাঝে সাম্য, সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার যে নজীর রেখে যায় তা আর অন্য কোন ধর্মীয় উৎসবে পরিলক্ষিত হয় না।
ঈদ মুসলিম উম্মাহর জাতীয় ও অভিন্ন উৎসব। ঈদের মহাজাতীয় উৎসবের মাধ্যমে যে সুন্দর জীবনাচার ফুটে ওঠে, সেটাই আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি। অথচ আজ ইসলামী সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র সর্বব্যাপী। হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতির নামে বিজাতীয় কিছু উৎসবকে আমাদের সংস্কৃতিতে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। এদিকে নিজের সংস্কৃতির ব্যাপারে সঠিক ধারণা, বিশ্বাসের অভাবে অনেকেই সেদিকে ঝুঁকে পড়ছে। পাশাপাশি চলছে ঈদের ন্যায় সার্বজনীন উৎসবকে তার মূল চেতনা থেকে দূরে সরিয়ে অপসংস্কৃতির আদলে পালন করার অপচেষ্টা। ঈদের আনন্দ উপভোগের জন্য যেসব উপায় উপকরণ ব্যবহৃত হচ্ছে তা মূলত অশ্লীল, নিরর্থক ও বেহুদা সময় নষ্ট। অশ্লীল গান, নাটক, সিনেমা উপভোগ করে আনন্দ প্রকাশ করা মূলত জাহেলী যুগের উৎসবের মূলনীতি। মুসলমানরা এভাবে উৎসব পালন করতে পারে না। আমাদেরকে এসব অপসংস্কৃতি ঝেড়ে ফেলে তাওহীদি চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে নিজেদের ব্যক্তি জীবন, সমাজ-সংস্কৃতি পরিশুদ্ধ করে নিতে হবে। ঈদকে সেই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে উদযাপন করা উচিত যেভাবে রাসূল (সা.) উদযাপন করেছেন।
মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আত্মিক পরিশুদ্ধির প্রচেষ্টার অনবদ্য উপহার ঈদুল ফিতর। তাই রমযানে তাকওয়া অর্জন ও নেক আমল বৃদ্ধির প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হওয়া উচিত যেন সর্বোচ্চ পুরস্কারধারী হওয়া যায়। তাহলে আমরা ঈদের প্রকৃত স্বাদ উপভোগ করতে পারবো। অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে মোড়ে মোড়ে দাঁড়ানো ফেরেশতাদের অভিবাদন গ্রহণ করতে পারবো। তেমনটি একটি রূহানী পরিবেশ নির্মল আনন্দে ভরপুর ঈদ উদযাপনের চেতনা ছড়িয়ে পড়–ক সবার প্রাণে। আমাদের মাঝে ঈদ ফিরে আসুক তার সঠিক রূপে, অনাবিল আনন্দের বার্তা ছড়িয়ে।
ঈদের রাতের বিশেষ মর্যাদা
রমযানের প্রতিটি রাতই বরকতপূর্ণ। কিন্তু ঈদের রাতের মর্যাদাকে আরো কিছু দিক থেকে বিশেষায়িত করা হয়েছে। ঈদের রাতের আমল মহান রাব্বুল আ‘লামীনের নিকট অনেক বেশী পছন্দনীয়।
হাদীসে বলা হয়েছে- “যে ব্যক্তি সওয়াবের আশায় দুই ঈদের রাত জেগে ইবাদত করবে, যেদিন সকলের অন্তর মরে যাবে, সেদিন তার অন্তর মরে যাবে না।”
আরও বলা হয়েছে- “রমযানে ইফতারের সময় প্রতিদিন আল্লাহ এক হাজার জাহান্নামবাসীকে জাহান্নাম মুক্ত করেছেন। তাদের প্রত্যেকের জন্য জাহান্নামে যাওয়া অবধারিত ছিল। তবে রমযান মাসের শেষ দিন (ঈদের দিন) আল্লাহ সেদিন রমযানের প্রথম থেকে ঐদিন পর্যন্ত যত মানুষকে ক্ষমা প্রদর্শন করেছেন তৎসমান পাপীকে ক্ষমা করে দেবেন।” (বায়হাকী)
দুঃখজনক হলেও সত্য বর্তমানে ঈদের রাতের এ মর্যাদা মানুষের অন্তর থেকে বিলীন হওয়ার পথে। অশ্লীল গান-বাদ্য বাজিয়ে পটকা ফুটিয়ে যেভাবে ঈদকে স্বাগত জানানোর প্রচেষ্টা চলে তা মুসলিম হিসেবে আমাদের পরিচয়কেই প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে।