রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

যুক্তরাজ্যে শোক ও আতঙ্কের মধ্যেই শেষ হলো নির্বাচনী প্রচারণা

৭ জুন, বিবিসি : সন্ত্রাসী হামলার পর শোকের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের শেষ দিনের প্রচারে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন টেরিজা মে ও জেরমি করবিন।
শেষ মুহূর্তে প্রচারে কনজারভেটিভ ও লেবার দলের এ দুই শীর্ষ নেতা ব্রেক্সিট, জাতীয় স্বাস্থ্য নীতিমালা, মানবাধিকার আইনসহ মূল দাবিগুলোকেই প্রচারের আলোতে আনেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
আজ বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যজুড়ে ভোট গ্রহণ। তাই মঙ্গলবার ছিল প্রচারের শেষ দিন।
এ দিনে মে বলেন, ব্রেক্সিটের পর যুক্তরাজ্যে চাকরির পরিমাণ বাড়বে; বাড়বে বাড়িঘর, আরও উন্নত হবে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
অন্যদিকে করবিন ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও স্কটল্যান্ডের র্যাকলিগুলোতে বলেছেন, জাতীয় স্থাস্থ্য খাতকে বাঁচাতে ভোটারদের হাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আর মাত্র ২৪ ঘণ্টা সময় আছে।
কনজারভেটিভদের নীতিতে জাতীয় স্বাস্থ্য খাত, সামাজিক নিরাপত্তাসহ পুলিশের সংখ্যা এবং পেনশনের পরিমাণ কমে যাবে বলে নির্বাচনী প্রচারের শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছে লেবাররা।
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে বলছেন, নির্বাচিত হলে তিনি সন্ত্রাসী হামলা মোকাবেলায় প্রয়োজনে যুক্তরাজ্যের এখনকার মানবাধিকার আইনের সংস্কার করবেন তিনি।
দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ম্যানচেস্টার ও লন্ডন ব্রিজ এলাকায় দুই দফা সন্ত্রাসী হামলার কারণে নির্বাচনী প্রচারে ছিল নিরাপত্তার কড়াকড়ি। শেষ দিনে কনজারভেটিভ শীর্ষ নেতা মে প্রচার শুরু করেন লন্ডন থেকে; এরপর যান সাউথ কোস্ট, নরফোক, নটিংহ্যামশায়ার এবং ওয়েস্ট মিডল্যান্ডে
পুরো প্রচারজুড়েই মে বলেছেন ব্রেক্সিটের কথা, যা নিশ্চিত করতেই ৫০ দিন আগে হঠাৎ করেই আগাম নির্বাচনের ডাক দেন তিনি।
 মে’র দাবি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পেছনে আগে যুক্তরাজ্যের যে ব্যয় হত, তা বেঁচে যাওয়ায় ‘বিশাল উপকার’ হবে। তিনি কনজারভেটিভদের প্রতিশ্রুত ২৩ বিলিয়ন পাউন্ডের ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি ফান্ডের ব্যাপারে ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন; বলেন এর মাধ্যমে যুক্তরাজ্যজুড়ে বাড়িঘর, রাস্তা, রেল ও ব্রডব্যান্ড যোগাযোগের উন্নতি হবে।
 মে বলেন, বছরখানেক আগে ব্রিটেনের জনগণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে গিয়ে উজ্জ্বল ভবিষ্যত নির্মাণের পক্ষে রায় দিয়েছিল।
“আমার পরিকল্পনা হচ্ছে সেই উজ্জ্বল ভবিষ্যৎকে নিশ্চিত করা, যেন তা যুক্তরাজ্যের চরদিকে পৌঁছে যায়; ব্রেক্সিটের সুযোগ আমাদের দেবে আরও বেশি চাকরি, আরও বাড়িঘর, ভালো সড়ক ও রেল যোগাযোগ এবং বিশ্বমানের ডিজিটাল যোগাযোগ, যেখানেই আপনি থাকুন না কেন।”
অন্যদিকে লেবার পার্টির শীর্ষ নেতা করবিন বলছেন, জাতীয় স্বাস্থ্য খাত আরও পাঁচ বছর অর্থসঙ্কট, কর্মচারি সঙ্কট ও বেসরকারীকরণের মধ্য দিয়ে যেতে পারে না।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বার্মিংহামে গানের অনুষ্ঠানের মতো করে আয়োজিত এক নির্বাচনী র্যা লিতে তিনি বলেন, কনজারভেটিভরা বলছে নির্বাচনের পর তারা শক্তিশালী ও স্থায়ী সরকার উপহার দেবেন।
“তারা কি বলছে, এখন তাহলে তাদের কি অবস্থা? কি বলছে তারা? তারা ভাবছে ৮ তারিখের নির্বাচনের পর সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি আপনাদের বলছি, তারা আমাদের অবমূল্যায়ন করছে, তাই নয় কি?” প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ছাড়াও প্রচারে চালিয়েছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক ও গ্রিন পার্টির নেতারা।
লিবারেল ডেমোক্রেটদের শীর্ষ নেতা টিম ফেরন প্রধানমন্ত্রী মে’কে ‘খোলা চেক’ না দিতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। যেসব আসনে তার দল এবং কনজারভেটিভদের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে সেখানে লেবার সমর্থকদের ভোটও ‘ধার’ চেয়েছেন তিনি।
ফেরন বলেছেন, সামাজিক সংস্কার খাতে কনজারভেটিভদের ‘হৃদয়হীন’ ও ‘অসহ্য’ অবস্থান বদলাতে লেবার সমর্থকদের প্রতি তার এই আহ্বান। শেষ নির্বাচনী র্যাবলিতে গ্রিন পার্টি যুক্তরাজ্যের জনগণকে ‘হৃদয় দিয়ে বিবেচনা করে’ ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। “সমগ্র যুক্তরাজ্যের জনগণকে আমি কেবল মাত্র সাংসদদের দেখে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন কেমন দেশ চায় তা বিবেচনা করে ভোট দেন”, বলেন গ্রিন পার্টির অন্যতম শীর্ষ নেতা জনাথন বার্টলে।
নির্বাচনে বিভিন্ন আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৪ বাঙালি প্রার্থী। যার মধ্যে আছেন গত নির্বাচনে লেবারের টিকেটে নির্বাচিত রুশনারা আলী, টিউলিপ সিদ্দীক ও রূপা হক।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ