বুধবার ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩
Online Edition

হয়রানির নাম বুকপোস্ট

যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম চিঠিপত্র। এসব পাঠানোর জন্য ব্যবহার করা হয় পোস্ট অফিস। চিঠিপত্রের ক্ষেত্রে কোন অভিযোগ নেই। পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বই পাঠানোর একটি পদ্ধতির নাম বুকপোস্ট। যত সমস্যা সব এই বুকপোস্ট করার ক্ষেত্রে। প্রথমত: আমি যাত্রাবাড়ী এলাকায় থাকি। স্বভাবতই আমাকে যাত্রাবাড়ী পোস্ট অফিসে যেতে হয়। সেখান থেকে প্রথমে একবার কয়েকটি বইয়ের প্যাকেট বুকপোস্ট করে পাঠাই। পরবর্তীতে মাসখানিক পরে যখন আবার গেলাম তখন ছয়টা প্যাকেটের মধ্যে ৩টি কোনমতে তাদের বুঝিয়ে পাঠাতে পারলাম আর বাকি ৩টি তারা গ্রহণ করেনি। কারণ ছিল এখানে পোস্টের গাড়ি আসে না তাই। প্যাকেটগুলোর ওজন ছিল ৭০০ গ্রাম। পরবর্তীতে ঐ তিনটি প্যাকেট নিয়ে ঢাকা জিপিওতে যাই। তারা প্যাকেটের ভিতরে কি আছে সব দেখে সিলগালা করার জন্য একজন পিওনের নিকট পাঠাল। সিলগালা করার জন্য তাকে আবার এক্সট্রা ৩০ টাকা দিতে হলো। সিলগালা করার জন্য টাকা দেওয়া লাগে এটা প্রথম দেখলাম। এরপর থেকে যাত্রাবাড়ী পোস্ট অফিসে গেলে তারা আর বুকপোস্ট করবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। এরপর গেলাম গে-ারিয়া পোস্ট অফিসে। সেখানে প্রথমবার যখন গেলাম তখন তারা বুকপোস্ট করে দেয় খুব ভালোভাবেই। পরবর্তীতে দ্বিতীয়বার যখন গেলাম তখন শুরু হলো যত ঝামেলা। আমাকে বলা হলো বুকপোস্টের জন্য ঢাকা জিপিও থেকে বুকপোস্টের নম্বর নিয়ে আসতে হবে তারপর তারা সেই নম্বর দিয়ে বুকপোস্ট করতে পারবে। তখন আমি বললাম এর আগেও তো আমি আপনাদের এখান থেকে বুকপোস্ট করেছি তখন তো ঢাকা জিপিও থেকে কোন নম্বর নিয়ে আসতে হয়নি। তিনি উত্তর দিলেন যিনি করেছেন তিনি বিষয়টি জানেন না তাই করে দিয়েছিলেন। আরো কারণ দেখাল বইগুলো নাকি কাপড়ের ব্যাগে ঢুকিয়ে সিলগালা করে আনতে হবে। অথচ এর আগে যতবার বুকপোস্ট করে বই পাঠিয়েছি তখন কোনো কাপড়ের ব্যাগের প্রয়োজন হয়নি। সেই বইয়ের প্যাকেটগুলো নিয়ে যখন ঢাকা জিপিওতে গেলাম তারা ঠিকই বুকপোস্ট করে দিলো কোন কাপড়ের ব্যাগ ছাড়াই। তাহলে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে একেকজনের নিকট একেক নিয়ম? নাকি হয়রানি করার জন্য এই নিয়ম? যাতে করে আর কেউ বুকপোস্ট করতে না আসে তাহলে তারা একটু ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকতে পারবে এজন্য। পোস্ট অফিসে যাই যেন আমার জিনিস পাঠানোর টাকাটা সরকারের খাতে জমা হয় সেই উদ্দেশ্য নিয়ে। তাদের ভাবখানা এমন যে, ঝামেলা ছাড়াই বেতন পেলে ঝামেলার মধ্যে যাওয়ার দরকার কি। লস তো আর আমার হচ্ছে না, লস হলে সরকারের হবে, বেতনতো আমি ঠিকই পাব। তাই ভালো সার্ভিস দেওয়ার প্রয়োজন কোথায়। আর এ ধরনের অসাধু চাকরিজীবীদের জন্য সরকারের লাভের জায়গায় লোকসানের পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। অন্যদিকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো সার্ভিস দিয়ে লাভ করে চলেছে। মানুষ চায় একটু সহজ পদ্ধতি, সুন্দর আচরণ ও ভেজালমুক্ত কাজ। আজ সমাজের সকল ক্ষেত্রে অসৎ লোকের ছড়াছড়ি যেন দেখার কেউ নেই। আর যারা দেখছে তারা দেখেও না দেখার ভান করে প্রতিবাদ করছে না। যার ফলে সমাজে দিন দিন এ ধরনের লোকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আসুন সবাই নিজ নিজ দায়িত্বের ব্যাপারে সতর্ক হই, আর মানুষকে অহেতুক হয়রানি করা থেকে বিরত থাকি, তাহলে সমাজটা আরও সুন্দর হবে সবাই ভাল থাকবে।
-হোসাইন আনোয়ার
যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ