পাচার করা ৪৪৬ কোটি টাকা উদ্ধারের সুপারিশ
সংসদ রিপোর্টার: বেসরকারি খাতের এবি ব্যাংকের (আরব বাংলাদেশ ব্যাংক) অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের মাধ্যমে দেয়া বকেয়া ঋণের ৫৫ দশমিক ৭৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৪৪৬ কোটি ৩৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা) দ্রুত উদ্ধারের সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
একইসঙ্গে অনিয়মের মাধ্যমে দেয়া এ ঋণের সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির সুপারিশ করেছে কমিটি।
গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ১৯তম বৈঠকে এসব সুপারিশ করা হয়। বৈঠক শেষে মিডিয়া সেন্টারে কমিটির সভাপতি আবদুর রাজ্জাক এসব তথ্য জানান।
তিনি আরও জানান, চারটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদেশে ‘ব্যবসা’ ও ‘শিল্পকারখানা’ করার জন্য লোন দেয়া হয়েছিল। কিন্তু লোন দেয়ার জন্য যে ধরনের বিচার বিশ্লেষণ ও নিয়ম প্রয়োগের প্রয়োজন ছিল তা মানা হয়নি বলে প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. রিজওয়ানুল হুদা স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট ঋণ প্রস্তাবের যথাযথ বিচার বিশ্লেষণ না করা, ইক্যুইটির তুলনায় বেশি পরিমাণ ঋণ মঞ্জুর, অপর্যাপ্ত জামানত, ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্বের বিষয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির অনুকূলে প্রমাণাদি সংরক্ষণ করা হয়নি।
সাংবাদিক সম্মেলনে আবদুর রাজ্জাক বলেন, একটি পর্যায়ে বলা হয়েছিল, যারা এ ঋণ নিয়েছে তারা তা ফেরত দেবে। এজন্য ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের সময় দেয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যে রহিম আফরোজ ২০ মিলিয়নের মতো টাকা ফেরত দিয়েছে। বাকি টাকা এখনও আদায় হয়নি।
তিনি বলেন, ঋণ নেয়া তিনটি প্রতিষ্ঠানই বিদেশ ভিত্তিক। এজন্য টাকা আদায় করা যাচ্ছে না। তবে প্রচ- চাপের মুখে সবাই কিছু কিছু টাকা ফেরত দিয়েছে। রহিম আফরোজ পুরো টাকা ফিরিয়ে দিয়েছে।
আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, বিদেশ থেকে এসে হাওয়ার ওপর বসে কেউ এসব টাকা তুলে নেয়নি। নিশ্চয়ই আমাদের দেশে এমন সুবিধাভোগী কেউ আছে। সেই সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছি।
দ্রুত ভ্যাট ও শুল্ক আইন বাস্তবায়নের সুপারিশ
ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও সরকারের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে দ্রুত ভ্যাট ও শুল্ক আইন বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্যও জানান।
তিনি বলেন, বিদ্যমান আইনে কিছু সমস্যা রয়েছে। এগুলো সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে পুরানো আইনে ব্যবসায়ীদের ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক দেয়ার মানসিকতা থেকে সরে আসতে হবে।
বৈঠকে কমিটির সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও আখতার জাহান উপস্থিত ছিলেন।