ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠান বয়কটকারীর সংখ্যা বেড়ে ৫০

১৮ জানুয়ারি, রয়টার্স : যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠান বয়কটকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামীকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনের ক্যাপিটলে দেশটির ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিবেন ট্রাম্প। বিবিসি জানিয়েছে, ৫০ জনেরও বেশি ডেমোক্রেট প্রতিনিধি ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন না বলে জানিয়েছেন। অধিকার আন্দোলন কর্মী ও কংগ্রেসম্যান জন লুইসের সঙ্গে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের বিবাদের জের ধরে প্রতিনিধি পরিষদের এসব ডেমোক্রেট সদস্য অনুষ্ঠানটি বর্জন করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার কথিত হস্তক্ষেপের কারণে ট্রাম্পের জয়ের বৈধতা নেই, গত শুক্রবার লুইসের করা এ মন্তব্যে বিতর্ক শুরু হয়। জর্জিয়া থেকে নির্বাচিত আইনপ্রণেতা লুইসকে পাল্টা আক্রমণ করে ট্রাম্প ট্যুইট করেন, “খালি কথা, কথা, কথা- কোনো কাজ বা ফল নেই।”
ট্রাম্পের এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকে বলেন, কাজের কোনো মূর্ত প্রতীক থেকে থাকলে তা হবেন ৭৬ বছর বয়সী লুইস। এর পরপরই যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের বহু সদস্য ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠান বর্জন করার কথা ঘোষণা করেন।
“আমি এমন একজন লোকের অনুষ্ঠানে থাকবো না যে বিভাজনের রাজনীতি ও ঘৃণা প্রচার করে,” বিতর্ক শুরু হওয়ার পর ট্যুইটার মন্তব্যে বলেন মিনেসোটার প্রতিনিধি কিথ এলিসন। ট্যুইটার ঘোষণায় মেরিল্যান্ডের প্রতিনিধি অ্যান্থনি জি ব্রাউনও ট্রাম্পের অভিষেক বর্জনের ঘোষণা দেন। রোববার মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের জন্মবার্ষিকীতে ট্রাম্পের অভিষেক বর্জনের ঘোষণা দেয়া প্রতিনিধিদের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু মঙ্গলবার পর্যন্ত লুইসের বিরুদ্ধে বিষোদগার করা বন্ধ করেননি ট্রাম্প। তাই ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠান বর্জনকারীদের দল আরও ভারী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এবারই প্রথম বিরোধী দলের উল্লেখযোগ্য সদস্য একজন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠান বর্জন করছেন তা নয়, এর আগে ১৯৭৩ সালে রিচার্ড নিক্সনের অভিষেক অনুষ্ঠান বর্জন করেছিলেন ৮০ জন আইনপ্রণেতা।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের অভিষেক উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে আট থেকে নয় লাখ মানুষ জমায়েত হবেন, তবে তারা অভিষেক উদযাপন না প্রতিবাদ করতে সেখানে উপস্থিত হবেন তা পরিষ্কার নয়। এদিকে শপথ গ্রহণ করতে যাওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্টদের মধ্যে গত চার দশকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে কম। এমন তথ্যই উঠে এসেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ ও ওয়াশিংটন পোস্টের পক্ষ থেকে চালানো এক জনমত জরিপে।জনমত জরিপে অংশ নেওয়াদের মাত্র ৪৪ শতাংশ প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের সাজানো প্রশাসনকে পছন্দ করেছে। অপরদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনকে অপছন্দ করছে ৫২ শতাংশ। যেখানে জনমত জরিপে বারাক ওবামার ক্ষেত্রে এই জনপ্রিয়তার হার ছিল ৬১ শতাংশ।
এবিসি নিউজ ও ওয়াশিংটন পোস্ট গত ১২ থেকে ১৫ জানুয়ারি ওই জনমত জরিপ চালায়। নিজ পার্টির সদস্যদের মধ্যে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৭৭ শতাংশ ট্রাম্প প্রশাসনকে সমর্থন দিচ্ছে। যেখানে ওবামার ক্ষেত্রে এই হার ছিল ৯৪ শতাংশ। জরিপে দেখা যায়, নির্দলীয়দের মধ্যে মাত্র ৪২ শতাংশের সমর্থন রয়েছে ট্রাম্পের সঙ্গে। যেখানে ২০০৯ সালে ওবামার প্রতি সমর্থন ছিল ৮০ শতাংশের। তবে অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে ৬১ শতাংশের সমর্থন পাচ্ছেন ট্রাম্প। যদিও বর্ণবৈষম্য ও নারী বিদ্বেষের প্রতি পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে যথাক্রমে মাত্র ৪০ ও ৩৭ শতাংশ অংশগ্রহণকারী ট্রাম্পকে সমর্থন দিচ্ছেন।