বয়সের ফাঁদে আটকে গেছে খুলনার ১১ মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা
খুলনা অফিস : বয়সের ফাঁদে আটকে গেছে খুলনার ১১ মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে তাদের সম্মানী ভাতা বন্ধ রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী ১৯৭১ সালে তাঁদের বয়স ১৩ বছর না হওয়ায় ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকে সম্মানী ভাতা না পেয়ে মানবেতর দিনযাপন করছেন।
জানা গেছে, পরিপত্র অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে যাঁদের নাম ভারতীয় তালিকায়, লাল মুক্তিবার্তায় আছে এবং যাঁদের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিস্বাক্ষরিত সনদ আছে তাদের ক্ষেত্রে ৩০-১১-১৯৭১ তারিখে বয়স ১৩ বছর এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স ২৬-০৩-১৯৭১ তারিখে ১৩ বছর হতে হবে।
যুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বিনয় কৃষ্ণ সরকার জানান, জীবনবাজি রেখে যাঁরা যুদ্ধ করেছেন, তাদের বয়সের ‘ফ্রেমে’ তাদেরকে আটকে দেওয়া ঠিক নয়। তিনি বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের বয়স দেখে যে সব মুক্তিযোদ্ধার ভাতা আটকে দেয়া হয়েছে, তাঁদের অনেকের বয়স ওই সময় ১৩ বছরের বেশি ছিল।
বটিয়াঘাটা উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা খান আজিজুর রহমান জানান, সম্মানী ভাতা বন্ধ করে দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত অপমানকর। যুদ্ধকালীন সময়ে ১৩ বছর নির্ধারণেও আলাদা তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে, যা অনেকটা বৈষম্যমূলকও। এ ব্যাপারে বটিয়াঘাটা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ভাতা যাচাই বাছাই কমিটি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করলেও সুরাহা হয়নি।
খুলনা মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অধ্যাপক মো. আলমগীর কবির জানান, প্রথমে পরিপত্র জারির পর মহানগরীতে দুইজন মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধ হয়ে যায়, যাঁদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলামের নাম ভারতীয় তালিকায় ছিল। পরে ভারতীয় তালিকা ও লাল মুক্তিবার্তায় নাম থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স কিছুটা শিথিল করায় তিনি তাতে অন্তর্ভুক্ত হন। তবে জানুয়ারিতে সম্মানী ভাতা বন্ধ হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত তিনি কোন ভাতা পাননি।