সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও চার বছরে চালু হয়নি খুলনা বিটিভি
খুলনা অফিস : অবকাঠামো উন্নয়ন, আধুনিক স্টুডিও ও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও খুলনা থেকে পূর্ণাঙ্গভাবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) সম্প্রচার প্রক্রিয়া চালু হচ্ছে না। এর ফলে খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের মনে চেপে রাখা ক্ষোভ দিন দিন বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি দেয়ার ৪ বছর পরও কেন্দ্রটি চালু হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ৫ মার্চ খুলনার খালিশপুর প্রভাতী স্কুল চত্বরের জনসভায় অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকা- বস্তবায়নের ঘোষণার পাশাপাশি খুলনার টেলিভিশন সম্প্রচার কেন্দ্র পূর্ণাঙ্গভাবে চালুর ঘোষণা দেন। এরপর ৪ বছর অতিবাহিত হলেও সম্প্রচার কেন্দ্রটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়নি। পূর্ণাঙ্গ সম্প্রচার কেন্দ্র চালু হলে খুলনার সাহিত্য-সংস্কৃতি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে দারুণ পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খুলনা মহানগরীর খালিশপুরে ৫ দশমিক ৬৬ একর জমিতে দোতলা ভবন নির্মাণ, ৫০০ ফুট উঁচু টাওয়ার ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ১টি ট্রান্সমিটার স্থাপন করা হয়। ১৯৭৬ সালে এখান থেকে পরীক্ষামূলকভাবে অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু হয়। ১৯৭৭ সালের ১১ মার্চ এই উপকেন্দ্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। ১০ কিলোওয়াট শক্তিসম্পন্ন ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে এই উপকেন্দ্রের সম্প্রচার আওতা হচ্ছে ৮০ অ্যারোনটিক্যাল কিলোমিটার। বর্তমানে এখানে ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজার, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, নিরাপত্তা প্রহরীসহ বেশ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার ১১ বছর আগে ২০০০ সালে তৎকালীন তথ্যপ্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ খুলনায় এক সভায় পূর্ণাঙ্গ টেলিভিশন কেন্দ্র স্থাপনের ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন।
২০১২ সালের ৫ অক্টোবর বাংলাদেশ টেলিভিশনের তৎকালীন মহাপরিচালক ম. হামিদ খুলনা সফর করেন। এসময় তিনি কেন্দ্রটি দ্রুত চালুর আশ্বাস দেন।
এরপর ২০১৩ সালের ২৬ জানুয়ারি খুলনায় ফের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ম. হামিদ ওই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে টেলিভিশন কেন্দ্র চালুর আশ্বাস দেন। এ লক্ষ্যে ম. হামিদ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেন বলেও জানা গেছে। এরপর ম. হামিদের পর নয়া মহাপরিচালক আব্দুল মান্নান বাংলাদেশ টেলিভিশনে যোগ দেয়ার পর একই অবস্থায় রয়েছে খুলনার টেলিভিশন কেন্দ্রটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালুর প্রক্রিয়া। ফলে এখন পর্যন্ত এ কেন্দ্র থেকে পরীক্ষামূলকভাবে প্রতিদিন শুধু দুই ঘণ্টার অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হচ্ছে। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ্জামান বলেন, 'খুলনায় টেলিভিশন সম্প্রচার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পর ৩৯ বছর পার করলেও পূর্ণাঙ্গতা পায়নি। এ কেন্দ্র থেকে খবর এবং অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য রয়েছে স্টুডিও এবং প্রজেকশন মেশিন। এখন প্রয়োজন কেবল সরকারের সুদৃষ্টি এবং নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ।'
খুলনা সাংস্কৃতিক উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক স্বপন গুহ বলেন, 'সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের জায়গা থেকে খুলনায় অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ টেলিভিশন কেন্দ্র চালু করা এখন সময়ের দাবি।
বিটিভি খুলনা কেন্দ্রের ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বলেন, পূর্ণাঙ্গ টেলিভিশন কেন্দ্র হিসেবে খুলনা কেন্দ্রটি কবে চালু হবে সে ব্যাপারে তার কাছে কোন তথ্য নেই বলে জানান তিনি।